আমার বেড়ে ওঠা হাওড়ায়। তাই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকা হাওড়াতেই। হাওড়া জগাছা বারোয়ারি বলে একটা সর্বজনীন দুর্গোৎসবে হোত। আমার বাড়ির লোক ওই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমি বড় হওয়ার পরে সবাই মিলে চাঁদা তুলতাম। ওটাই ছিল আমার সব চেয়ে বড় অ্যাডভেঞ্চার। পুজো করা থেকে বিসর্জন দেওয়া পর্যন্ত অনেক দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিতাম। ব্যাপারটা ঠিক ছিল ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। এগুলো
ক্লাস এইট কী নাইনে পড়ার সময়কার ঘটনা। ওই দিনগুলো আজ খুব মিস করি। খুব মজা হত তখন। পুজোর কটা দিনের মধ্যে এক দিন কলকাতায় পরিবার বা আত্মীয়দের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে আসতাম। আজ হাওড়া থেকে কলকাতায় খুব সহজেই আসা যায়। সেই সময় এতো সহজলভ্য যাতায়তের মাধ্যম ছিল না। মনে আছে কলেজস্কোয়ারে মা-র সঙ্গে ঠাকুর দেখার জন্য লাইন দিয়েছি। লাইনে মা-র আগে খুব লম্বা এক জন মহিলা ছিলেন। হঠাৎ দেখলাম তিনি ছোট হয়ে গেলেন। আমি ভাবলাম এতো অবাক কাণ্ড!আসলে রাস্তার ম্যানহলের
ঢাকনা খোলা ছিল। তার মধ্যে উনি আচমকাই পড়ে গেলেন। এটা দেখে মজা পেয়েছিলাম। ছোট বলেই হাসতে পারিনি। আর এর যে করুণ দিক আছে,সেটাও বুঝতে পারিনি। কলেজ স্কোয়ারে ঠাকুর আর সেবার দেখা হয়নি। মা ভিড়ের মধ্যে থেকে আমাকে সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল।

চোদ্দ-পনেরো বছর বয়সেও ঠাকুর দেখেছি। কিন্তু আমি সবাইকে একটা কথাই বলি। পুজোর সময় মেয়ে দেখ। নজর করে নাও। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেও না। পুজোর লাইটিংয়ে অনেক জীবন্ত নারী মূর্তিকে অপরূপা লাগে। কিন্তু দিনের আলোয় রূপ বদলে যায়। আমার পুজোর সময় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে ভাল লাগে। পুজোর সময় আমার খেতেও খুব ভাল লাগে। অন্য সময় সেই খাবারই খেলে অম্বল হোত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *