এবার একটা গল্প বলি। দার্জিলিং শহরে তখন সাহেবদের রমরমা। আমি বলছি ১৯২০ সালের কথা। আর যেখানেই সাহেবরা সেখানেই পাউরুটি, কেক, পেস্ট্রি আরও অনেক বেক করা সুস্বাদু খাবার দাবারের সম্ভার। ঠিক ম্যাল এর দিকে নেহরু রোড এর ওপরে একটি ধোপদুরস্ত ব্রিটিশ বাংলোয় এক ভাদো সাহেব ইতালি থেকে এসে একটি বেকারি খুলে বসলেন।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থুড়ি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ১৮৬৪ সালে সিনচুলা চুক্তি (Treaty of Sinchula) স্বাক্ষর করে ডুয়ার্স ভুটানের থেকে নিয়ে নেয়। সেই সময় বড় সাহেবরা চা নিয়ে তৎপরতার সঙ্গে উঠে পড়ে লেগেছেন যাতে দার্জিলিংয়ের চা বাণিজ্যিক ভাবে সফল করা যায়। ইউরোপের কিছু দেশে চা ব্যবসায় আগ্রহ বাড়ানোর জন্য ব্রিটিশ বাবুরা কিছু উদ্যোগপতিদের দার্জিলিং এ নিয়ে আসেন। তার মধ্যে একজন ছিলেন মিস্টার ভাদো। উনি চায়ের ব্যাপারে সব শুনেটুনে বুঝলেন যে চা নিয়ে অনেকে পয়সা উপার্জন করার চেষ্টা করছেন তাই উনি খুব বড় ব্যবসা করে উঠতে পারবেন না। কিন্তু ততদিনে উনি দার্জিলিংয়ের প্রেমে পড়ে গেছেন, তাই ওই শহরেই কিছু একটা করবেন বলে মনস্থ করলেন। ইতালিয় ধমনীতে পাউরুটি ও কেক বানানোর রক্ত বইছে। তাই নেহেরু রোডে খুললেন একটা বেকারি। নাম দিলেন ভাদো’স কেক শপ। চায়ের শহরে তো টা-এর ব্যবসা ভাল চলবেই। কিছুদিনের মধ্যেই বেকারি রমরমিয়ে চলতে শুরু করল।
অ্যাডলফ প্লিভার দুই সন্তান মার্গারেট ও গিন্ট
এই গল্প যেই সময়ের সেই সময় প্রত্যেক চা বাগানে একটা চাকুরির পদ থাকতো ‘রোটিবালা’ দের। রোটিওয়ালা (Rotiwalla) মানে পাউরুটি জোগান দেবার লোক (breadman)। সেই বেকারির দোকানের কী হলো, সেই গল্প পরের পর্বে। তবে চায়ের সঙ্গে যখন টা এর কথা উঠলই তখন বলে রাখি যে বাড়িতে ভাদো সাহেব বেকারি খোলেন সেই বাড়ির নাম ছিল গ্লেনারি। বাকিটা পরের পর্বে।
এইবারের পর্বে চায়ের সঙ্গে টা এর নাম:
লেমন সুগার ক্রেপ
উপকরণ:
ময়দা- ১৫০ গ্রাম
ডিম- ২টো
নুন- এক চিমটে
ভ্যানিলা এসেন্স- ১ চা চামচ
দুধ- ৩২৫ মি.লি
সাদা তেল- ৪ টেবিল চামচ
বড় পাতিলেবু- ১টা (রস)
মিহি গুঁড়ো চিনি- ৩ টেবিল চামচ
লেমন সুগার ক্রেপ।
প্রণালী: ময়দা, দুধ, ডিম, নুন, ভ্যানিলা ও চিনি ভাল করে ফেটিয়ে নেবেন যাতে কোনও দলা না থাকে। মসৃণ করে ফেটিয়ে নিন। একটা ননস্টিক ফ্রাইপ্যান এ ব্রাশ দিয়ে তেল মাখিয়ে মিস্রণটা হাতা দিয়ে গোলাকার করে প্যানে ছড়িয়ে দেবেন। কিছুক্ষণ পর পিঠের মতো গুটিয়ে তুলে নেবেন। চিনি ও লেবু মাখিয়ে গরম গরম পরিবেশন করবেন।