বিটি রোডের পাশে ঐতিহ্যবাহী বেলঘরিয়ার সরস্বতী প্রেস। কলকাতা তো বটেই সারা ভারতবর্ষে এই প্রেসের সুখ্যাতি রয়েছে। সাহিত্য সংসদ এবং শিশু সাহিত্য সংসদের প্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্রনাথ দত্তের পরিকল্পনাতেই ১৯২৩ সালে সরস্বতী প্রেসের জন্ম। পরাধীন ভারতে মূলত জাতীয়তাবাদী সাহিত্যকে প্রচারের আলোতে নিয়ে আসাই ছিল এই প্রেস তৈরির নেপথ্য কারণ। ফলে এই প্রেসের প্রতিটি ইঁটের খাঁজে লুকিয়ে আছে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ইতিহাস। ১৯৭৫ সাল থেকে সরস্বতী প্রেসের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে চলেছেন প্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্রনাথ দত্তের সুযোগ্য পুত্র এবং সাহিত্য সংসদের কর্ণধার দেবজ্যোতি দত্ত। শতাব্দী প্রাচীন এই প্রেসের নেপথ্যের নানান গল্প নিয়ে বাংলালাইভের মুখোমুখি হলেন তিনি। প্রতি বুধবার ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি পর্বে প্রকাশিত হবে দেবজ্যোতি দত্তের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি। কথোপকথনে দেবজ্যোতি দত্ত এবং শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়…
আজ প্রথম পর্ব।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: শিশু সাহিত্য সংসদ থেকে সাহিত্য সংসদ এবং সেইসূত্রে সরস্বতী প্রেসেরও গড়ে ওঠার যে বৃত্তান্ত⎯ বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় আপনার বাবা মহেন্দ্রনাথ দত্তের কাজের যে ইতিহাস, বৃহত্তর অর্থে যা বাংলা প্রকাশনা জগতেরও ইতিহাস, সে বিষয়ে আমরা কথা বলব।
প্রথমে আমি জানতে চাইব, আপনার বাবা কীভাবে এই প্রকাশনা-জগতে এলেন? প্রকাশনা সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণা যেরকম⎯ প্রথমে প্রকাশনা-জগৎ সম্পর্কে একটা আগ্রহ তৈরি হয় এবং তারপর তিনি মুদ্রণ-ব্যবস্থার কাজে জড়িয়ে পড়েন এবং ধীরে ধীরে মুদ্রণ-ব্যবস্থা সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। কিন্তু আমরা যতদূর জানি, আপনার বাবার ক্ষেত্রে তা হয়নি।
দেবজ্যোতি দত্ত: ঠিক তাই। আসলে বাংলা প্রকাশনার ইতিহাস তো অনেক দিনের! দু-শো বছরের ওপরে। যখন বাংলা ভাষায় প্রথম বই বেরোয়, হালেদের গ্রামার, সেটা হচ্ছে ১৭৭৮ সাল। যার জন্য ১৯৭৯ সালে কলকাতার ময়দানে মুদ্রণের দু’শো বছরের ওপরে একটা একজিবিশন হয়েছিল প্রায় সপ্তাহ খানেক কি সপ্তাহ দেড়েকের⎯ ‘মুদ্রণের দু’শো বছর’, সেটা তোমরা অনেকেই হয়তো জানো। সেখানে প্রধান উদ্যোক্তা ছিল আনন্দবাজার পত্রিকা এবং চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা প্রামাণ্য বইও বেরিয়েছিল⎯ ‘বাংলা প্রকাশনার দু’শো বছর’। চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময়ে ন্যাশনাল লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান ছিলেন।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: ‘দুই শতকের বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশন’। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বেরিয়েছিল।
দেবজ্যোতি দত্ত: হ্যাঁ, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বেরিয়েছিল। চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বইয়ের আগে ভারতের মুদ্রণ ব্যবস্থার ওপরে মি. কেশবনের তিন ভল্যুমের একটা ইংরেজি বই ছিল। এন.বি.টি. বার করেছিল। অনেক বছর আগে। এখন সেটা আর পাওয়া যায় না। ফলে, মুদ্রণ এবং প্রকাশনার ইতিহাস বলতে গেলে, কেশবনের বইটি হচ্ছে প্রামাণ্য। তাছাড়া আরও অনেকের বই আছে। সে বইগুলোর কথা পরে আসবে। তবে বাংলা মুদ্রণের ক্ষেত্রে চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বইটা অত্যন্ত মূল্যবান।

শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: আপনাদের আদিবাড়ি তো বরিশাল ?
দেবজ্যোতি দত্ত: হ্যাঁ। আদিবাড়ি। আমার বাবা, আমার ঠাকুরদা⎯ এরা সব বরিশালের। আমি এখানে জন্মেছি। আমার গ্রামের ইতিহাস নিয়ে একটা বই আছে, সেটা আমার বাড়িতে আছে। বাবা জোগাড় করে রেখেছিলেন। একটা ছোট্ট বই⎯ ‘কাশীপুর কুসুম’। আমাদের গ্রাম হচ্ছে কাশীপুর। বরিশাল শহরের ঠিক উত্তরে। মোট বারো পুরুষ, মানে আমার থেকে এগারো পুরুষ আগের খোঁজ আমি পেয়েছি। সাত পুরুষ আগে আমাদের অবস্থা ভালো ছিল। কিন্তু বাবা যখন জন্মান, আমার ঠাকুরদার অবস্থা তখন খুব একটা ভালো ছিল না। আমার ঠাকুরদার নাম রাজকুমার দত্ত।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: তিনি তো কবিরাজ ছিলেন?
দেবজ্যোতি দত্ত: হ্যাঁ। একজন সাধারণ কবিরাজ ছিলেন। তবে উনি বরিশালে প্র্যাকটিস করতেন না। ময়মনসিংহে প্র্যাকটিস করতেন।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: আপনার বাবারা কি ছেলেবেলায় ময়মনসিংহে থাকতেন?
দেবজ্যোতি দত্ত: না। আমার ঠাকুরমা তাঁর বাবার বাড়িতে থাকতেন। বাবারা ছোটবেলায় মানুষ হয়েছিল রায়পাশাতে, কাশীপুর থেকে আর একটু উত্তর-পশ্চিমে, বাবার মামাবাড়িতে। মানে, ঠাকুমার বাপেরবাড়িতে। সেইখানে বাবার যিনি দিদিমা, তিনি একটু বেশি আদর দিচ্ছিলেন তাঁর বড় নাতিকে। ঠাকুমা সেটা দেখে একটু ভয় পেয়ে যান। তো বাবার যখন সাত পেরিয়ে আট বছর বয়স, তখন ঠাকুমা করলেন কী, আমাদের যে আদি গ্রাম কাশীপুর, যেখানে আমাদের পূর্বপুরুষের ভিটে ছিল, সেখানে চলে আসেন। আমার বাবার মুদ্রণের জগতে আসা বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার পেছনে আমার ঠাকুরদার কোনও ভূমিকা নেই।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: আপনার বাবা রায়পাশা থেকে আট বছর বয়সে চলে এলেন কাশীপুরে। তারপর সেখান থেকে বোধহয় ওঁর মামা ওঁকে নিয়ে যান বরিশালে। পরে আবার ফিরে যাবেন রায়পাশাতে।
দেবজ্যোতি দত্ত: না। দিদিমার আদরে বাবা একটু অমানুষ হয়ে যাচ্ছিলেন। সেটা পরে বাবা আমাকে বলেছিলেন। তখন, বাবার আট বছর বয়স, আমার কাকার পাঁচ বছর বয়স আর ছোটকাকার দু-বছর বয়স। বাবার মা তখন চলে আসেন কাশীপুর গ্রামে যাতে ছেলেকে সেলফ সাফিশিয়েন্ট করতে পারেন। বাবা যে আত্মকথা লিখেছেন তাতে উল্লেখ করা আছে, মা তাঁকে এমনভাবে খাটাতেন যে মাঝে মাঝে বাবার খুব কান্না পেত। এমনও হয়েছে, ভোরবেলায় চারটে-সাড়ে চারটের সময় বাবাকে মাঠে পাঠিয়ে দিলেন ঘাস-পাতা নিয়ে আসার জন্য। ঠাকুমা অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে বাবাকে একাই মানুষ করেছেন। কারণ ঠাকুরদা কাশীপুরে থাকতেন না, ময়মনসিংহে থাকতেন। বাবা গ্রামের পাঠশালাতে যেতেন। সেখানেও গুরুমশাইদের হাতে এমন মার খেয়েছেন যে বাবা অনেক সময় পাঠশালাতে যেতেন না। শটি বলে একরকম ঘাস ছিল, বাবাকে ভোর পাঁচটার সময় মাঠে গিয়ে ওই ঘাস তুলে আনতে হত। বরিশালে যাদের বাড়ি, পুরোনো লোক বরিশালের, তারা শটি কথাটা জানে, সেটা বাবা তুলে আনতেন, আর ঠাকুমা সেটাকে শুকিয়ে, গুঁড়ো করে শটির পালো বলে একটা জিনিস তৈরি করতেন। এখন যেমন বার্লি, তখন শটির পালো খাওয়ানো হত পেট খারাপ হলে। প্রচণ্ড কষ্টের মধ্য দিয়ে বাবারা মানুষ হয়েছেন।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: তার মানে ঠাকুমা খুব দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন।
দেবজ্যোতি দত্ত: ওরে বাবা! বাবা উল্লেখ করেছেন, মারাত্মক দৃঢ়চেতা ছিলেন। কাশীপুর গ্রামে তিন বছর ছিলেন। তখন আমার পিসির জন্ম হয়। সেই সময় সূতিকা রোগে ঠাকুমার শরীর খারাপ হয়েছিল। তখন আবার রায়পাশাতে ফিরে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে বাবাকে আবার সেই রায়পাশা গ্রামেই থাকতে হয়।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: তখন ওঁর দশ-এগারো বছর বয়স।
দেবজ্যোতি দত্ত : এগারো বছর বয়স। বুঝতেই পারছ— এখনকার এগারো বছর আর তখনকার এগারো বছরে কিন্তু অনেক তফাত। তখনকার এগারো বছর হচ্ছে এখনকার ন-বছরের সমান, কি আট বছরের সমান। তখন এগারো বছরের ছেলেরা ছোটই থাকত আর কী! সুতরাং, আমার বাবা, কাকা এবং ছোটকাকা, বুঝে দেখো আমার পিসির জন্মের পরেই কিন্তু ঠাকুমা মারা যান। ফলে, বাবা মামাবাড়িতেই আবার মানুষ হন। এসময় আরও একটা ধাক্কা লাগল, কেননা চার বছরের মধ্যে বাবার দিদিমাও মারা যান। ফলে বাবা কিন্তু মামাবাড়ির আদরে বেশিদিন থাকতে পাননি। বাবা অনেক কষ্ট করেছেন। তখনকার একটা নিয়ম ছিল, বিভিন্ন গ্রামে জমিদাররা স্কুল খুলতেন। সেই স্কুলটাকে অ্যাফিলিয়েট করার জন্য যারা একটু পড়াশোনায় ভালো, সেইসব ছাত্রদের নিয়ে যেতেন তাঁদের বাড়িতে। বাবা ছাত্র হিসেবে ভালো ছিলেন। অঙ্ক-টঙ্ক খুব ভালো পারতেন। সেই সময় বাবাকে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাবা সেখানে থাকতেন, বাড়ির ছেলেকে পড়াতেন। কাকাও সেভাবে মানুষ হয়েছেন।

শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: তখন একটা রেওয়াজ ছিল শিক্ষকতা করে নিজের পড়া চালিয়ে যাওয়া…
দেবজ্যোতি দত্ত: এই করতে করতে ১৯১৯ সালে কুড়ি বছর বয়সে বাবা ম্যাট্রিক পাশ করেন।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: সেটা বোধহয় বরিশাল শহরে, ব্রজমোহন স্কুল থেকে।
দেবজ্যোতি দত্ত: না। ব্রজমোহন স্কুল থেকে নয়। ম্যাট্রিক পাশ করার পরে বি এম মানে ব্রজমোহন কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এইখানেই বাবার একটা পরিবর্তন আসে। বাবা আমাকে বলেছেন, লিখেওছেন⎯ বাবা পাঠশালাতে যখন পড়তেন, রায়পাশাতে, ক্লাস সেভেন কি এইটে, সেই সময় অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন বিধুভূষণ ঘোষ না বিধুশেখর বোস। হঠাৎ একদিন তিনি এসে বাবাকে বললেন, ‘তুই একটু বাইরে আয়’, বলে বাদামতলায় নিয়ে গেলেন। নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘দ্যাখ, আমি কিন্তু বেশিদিন থাকব না। তোকে একটা জিনিস বলে যাচ্ছি, তুই কিন্তু এটা মাথায় রাখিস’। তখন বাবা ক্লাস সেভেন-এইটে পড়েন! ঠিক আছে, বলেছেন। বাবাও ক্লাসে চলে এসেছেন। তার কয়েকদিন বাদে সেই মাস্টারমশাই কিন্তু সন্ন্যাস নিয়ে বেরিয়ে চলে যান।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: আচ্ছা! মনে রাখিস মানে এটা কি কোনও মন্ত্র?
দেবজ্যোতি দত্ত: বীজমন্ত্রের মতো। কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে, আন্দোলন করার পরে, যখন জেলে গেলেন, তখন হঠাৎ একদিন বাবার ওই কথাটা মনে পড়ে। বি এম কলেজে ভর্তি হবার পর এক বছর… এক বছরও পড়েননি! ওই ছ-মাস পড়ার পরেই, ১৯২১ সালে বোধহয়…
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: অসহযোগ আন্দোলন শুরু হল…
দেবজ্যোতি দত্ত: অসহযোগ আন্দোলন শুরু হল। প্রিন্স অফ ওয়েলস আসবেন, তো সেখানে বাবা ইউনিয়ন জ্যাক পুড়িয়েছিলেন। থানার সামনে।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: ক্রিমিন্যাল অফেন্স!
দেবজ্যোতি দত্ত: ক্রিমিন্যাল অফেন্স। এসব করে তাঁরা চলে আসেন কংগ্রেসের অফিসে। কংগ্রেস অফিসকে তখন স্বরাজ অফিস বলত। মনে থাকতে পারে, স্বরাজ অফিস মানে, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ স্বরাজ্য পার্টি শুরু করেছিলেন। স্বরাজ অফিসে চলে আসার পর সেখানকার নেতারা বললেন, ‘তোমরা ধরা দাও’। বাবা পুলিশে ধরা দিলেন। দেড় বছর কারাদণ্ড হল।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: কোথায়, বরিশালে?
দেবজ্যোতি দত্ত: হ্যাঁ, বরিশালে। বরিশাল জেলেই কারাদণ্ড হল।

শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: ১৯২১-এ থানার সামনে ইউনিয়ন জ্যাক পোড়ানোর ফলে আপনার বাবা মহেন্দ্রনাথ দত্তের দেড় বছরের কারাদণ্ড হয়। এই যে জেলযাত্রা, সেখানেই কি ওঁর সঙ্গে অরুণবাবুদের (অরুণচন্দ্র গুহ) পরিচয় ? আমি জানতে চাইছি সেসময়ের বরিশাল শহর, যে অসহযোগ আন্দোলনের কথা আমরা বলছি, তখন তো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বরিশাল একদম তুঙ্গ অবস্থায় আছে! এমনিতেই বরিশালে অশ্বিনীকুমার দত্তের ঐতিহ্য…
দেবজ্যোতি দত্ত: বরিশাল তুঙ্গে আছে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে। ১৯০৬ সালে বরিশালে কংগ্রেসের প্রাদেশিক সভা হয়েছিল। সেই সময়ে অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ সবাই বরিশালে গিয়েছিলেন এবং তাঁরা অশ্বিনীকুমার দত্তের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখন অশ্বিনীকুমার দত্ত তাঁদেরকে আলাপ করিয়ে দেন সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলে একজনের সঙ্গে। পরবর্তীকালে তাঁর নাম হয়েছিল প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: তিনি একসময় তো বি এম স্কুলে পড়াতেন ?
দেবজ্যোতি দত্ত: হ্যাঁ, তিনি মাস্টারমশাই ছিলেন। ফলে বরিশালের এই আন্দোলনের জায়গাটা, উনিশশো পাঁচ সাল থেকে এগারো সাল⎯ নিত্যপ্রিয় ঘোষ আর অশোককুমার মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় আমরা একটা বই প্রকাশ করেছিলাম ‘পার্টিশন অফ বেঙ্গল/ সিগনিফিক্যান্ট সাইনপোস্টস/ ১৯০৫-১৯১১’ বলে, তাতে সমস্ত ছবিও আছে যে কীভাবে কী হয়েছিল। বরিশাল শহরেই কিন্তু ছিলেন জননেতা মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতা। সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহের মায়ের ঠাকুরদা। গিরিডিতে অভ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। পরে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনিই প্রথম নিখিল ভারত কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা করেন। ‘বিজয়া’ বলে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়: আচ্ছা।
দেবজ্যোতি দত্ত: এই হিস্ট্রিগুলো কিন্তু খুব কানেকটিং। যাইহোক, বাবা তখন চিন্তায় পড়লেন যে জেল থেকে বেরোনোর পরে কী করবেন, পড়াশুনো ছেড়ে দিয়েছেন…
(চলবে)
ছবি সৌজন্য: Wikipedia, দেবজ্যোতি দত্ত
*পরের পর্ব প্রকাশ পাবে ২৬ এপ্রিল
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।
Very important ,& useful