কখনও ভেবে দেখেছেন, হাত ফসকে পড়ার সময়ে কেন পাঁউরুটির মাখন লাগানো দিকটা মাটিতে পড়ে? বা ধরুন, কলার খোসায় আছাড় খাওয়ার পিছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা? কিংবা ধরুন, বিয়ারের ফেনা কমে আসার পিছনে গাণিতিক সূত্রটা ঠিক কী? আমার পেট গরম ভাবছেন তো? হুঁ হুঁ, এইজন্যেই কবি বলেছেন, দেয়ার আর মোর থিংস, ইয়ে…কী যেন!
কথা হচ্ছে, এগুলো নিয়ে শুধু যে বিশ্ববরেণ্য বৈজ্ঞানিকেরা মাথা ঘামিয়েছেন তাই নয়, এর জন্য নোবেলও পেয়েছেন। অবিশ্যি, কবি তারাপদ রায়ের ভাষা ধার করে বলা যায়…
যেমন নোবেল কাগজে বেরোয়,
তেমন নোবেল অন্য।
এমন নোবেল খোরাক ক’রে
লোক হাসানোর জন্য।
ব্যাপারটা গেছোদাদার জিপিএসের মতো ঘোরালো হয়ে যাচ্ছে কি? আচ্ছা, একটু খোলসা করেই বলি। নোবেল প্রাইজের কথা নিশ্চয়ই সবাই জানেন। কিন্তু, এই নোবেল প্রাইজের এক মিচকে তুতোভাই আছে, সেটা হয়তো অনেকেই জানেন না। তার নাম হল Ig Nobel। বুঝতেই পারছেন, নামটা ইংরিজি Ignoble (বাংলায় – ‘অবজ্ঞা‘) কথাটার উপর একটু কারিকুরি। অর্থাৎ নোবেল পুরস্কারের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ইগনোবেল তুলে ধরে সেইসব কাজকর্মের তালিকা, যার হয় কোনও গুরুত্ব নেই, নাহলে হাস্যকর রকমের খারাপ।
এই প্রাইজ দেওয়া শুরু হয় ১৯৯১ সাল থেকে, Annals of Improbable Research (AIR) নামক বৈজ্ঞানিক হাস্যরসাত্মক পত্রিকার তরফ থেকে। এই প্রাইজের স্রষ্টা এবং আজ পর্যন্ত সবকটি বিতরণী অনুষ্ঠানের পৌরোহিত্য করেছেন মার্ক আব্রামস – এই পত্রিকার সম্পাদক। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানটি হত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MIT)-এর মূল সভাঘরে। কিন্তু, ১৯৯৪ সাল থেকে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি স্থানান্তরিত হয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যান্ডার্স থিয়েটারে, যদিও প্রাপকদের ধন্যবাদজ্ঞাপনের বক্তৃতা এখনও হয় পুরনো জায়গাতেই। অবশ্য, গত দু‘বছর, মানে ২০২০ আর ২০২১-এ অতিমারীর কারণে পুরো অনুষ্ঠানটিই করতে হয়েছে অনলাইনে। আমেরিকায় বরাবরই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওতে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি, আমেরিকায় থ্যাঙ্কসগিভিং-এর পরের শুক্রবার। আর গত কয়েক বছর থেকে ইন্টারনেটেও এটি লাইভ দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: ঈশা দাশগুপ্তের কলমে: মহৎ নোবেল পুরস্কার কতটা মহৎ?
এ তো গেল তুতো নোবেলের ঠিকুজি-কুলুজি। কিন্তু, এর পিছনে মূল চিন্তাটা কি, সেটাও একটু বিশদ করা দরকার। একদম প্রথমে, মানে যখন এই প্রাইজ দেওয়া শুরু হয়, তখন গোটা অনুষ্ঠানের মতোই এই প্রাইজটাও ছিল নিছক ইয়ার্কি, বা পিছনে লাগার ব্যাপার। কাগজে কলমে বলা হত, যে সব অবদান তাদের নিজস্ব ক্ষেত্রে এতখানিই গুরুত্বহীন, যে সেগুলোর পুনরাবৃত্তির কোনও প্রয়োজন নেই, তারাই এই পুরস্কারের প্রধান দাবিদার। পরবর্তীকালে অবশ্য বর্ণনাটা একটু পালটেছে। এখন এর সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়, “যে সব আবিষ্কার প্রথমে হাসায়, তারপর ভাবায়…”
ক্ষেত্রের কথাটা যখন উঠলই, তখন একটু বলি, এই পুরস্কার প্রতি বছর দেওয়া হয় দশটি ক্ষেত্রে, তবে তার তালিকাটা প্রতি বছর এক থাকে না। নোবেল প্রাইজের ক্ষেত্রগুলি, মানে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি, চিকিৎসা ও অর্থনীতি– এগুলির অধিকাংশ অবশ্য প্রায় প্রতি বছরই থাকে, তবে তা ছাড়াও, জীবনবিজ্ঞান, শিল্প, গণিত, পতঙ্গবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, আন্তঃবৈষয়িক চর্চা– ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে এই পুরস্কার আজ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
কতখানি উদ্ভট ও কিম্ভূত গবেষণায় যে এই প্রাইজ দেওয়া হয়েছে, তার কিছু উদাহরণ অবশ্যই দেবো, তবে তার আগে বিতরণী অনুষ্ঠান সম্বন্ধে আরো দু’ একটা মজার কথা বলি। প্রথমত, গোটা ব্যাপারটায় ইয়ার্কি কিন্তু মারা হয় অত্যন্ত রাশভারিভাবে। পুরস্কার ঘোষণা ও প্রদান (প্রাপক উপস্থিত থাকলে) করেন স্বয়ং নোবেল লরিয়েটরা। প্রাপকদের ধন্যবাদজ্ঞাপক ভাষণের সময়সীমা থাকে ৬০ সেকেন্ড। কেউ তার থেকে বেশি সময় নিলে, একজন আট বছরের মেয়ে, যার নাম ‘মিস সুইটি পু’, সে স্টেজে উঠে বলে, “দয়া করে এবার থামুন, আমরা বোর হচ্ছি।” শুধু তাই নয়, দর্শকরা বক্তৃতা বন্ধ করতে স্টেজে কাগজের প্লেনও ছুড়তে পারেন। ঐতিহ্য অনুসারে, এই প্লেনগুলি ঝাঁট দেওয়ার গুরুদায়িত্ব বরাবর বহন করেছেন রয় গ্লবার নামে এক সম্মাননীয় পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক। মজার ব্যাপার, কেবল ২০০৫ সালে গ্লবার সাহেব এই পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে পারেননি, কারণ তখন তিনি নিজে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল নিতে স্টকহোম যাচ্ছিলেন!

আর প্রতি বছর ইগনোবেল বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হয় একটি ঘোষণা দিয়ে। “যাঁরা পুরস্কার পেলেন না, এবং তার চেয়েও বড় কথা, যাঁরা পেলেন– আশা করি পরেরবার তাঁদের ভাগ্য প্রসন্নতর হবে।” কাজেই বুঝতেই পারছেন, ফেলুদার ভাষায়, “ব্যাপারটা সিরিয়াস।” যাই হোক, এবারে আসি এই পুরস্কারের কিছু উদাহরণে। ১৯৯১ থেকে শুরু করে তিনশোটি পুরস্কারের ব্যাখ্যান এখানে দেওয়া সম্ভবও নয়, তাছাড়া তা হলে মিস সুইটি পু-র মতো আপনাদেরও চেঁচিয়ে ওঠার প্রভূত সম্ভাবনা। তাই সে ঝুঁকি নেব না, সামান্য গোটা কয়েক উদাহরণ দেব কেবল। ১৯৯৪ সালে পতঙ্গবিজ্ঞানে পুরস্কার পান রবার্ট লোপেজ়, যিনি অসাধারণ ধৈর্যসহকারে বিড়ালের কান থেকে জীবন্ত পোকা বার করে সেগুলি নিজের কানে প্রতিস্থাপন করে তাদের বংশবৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করেন। ১৯৯৮ সালে সাহিত্যের ক্ষেত্রে পুরস্কার পান ডঃ মারা সিদল। অনির্বচনীয় আতঙ্কের সামনে বাতকর্ম কী করে আত্মরক্ষার একটি উপায় হতে পারে, সে বিষয়ে অত্যন্ত অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন একটি দলিল রচনার জন্য।
১৯৯৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে পুরস্কার দেওয়া হয় ডঃ লেন ফিশার, জঁ-মার ভান্ডার-ব্রোক এবং জোসেফ কেলারকে। চায়ে বিস্কুট ডোবানোর সময়ে তার আদর্শ গভীরতা, এবং টিপটের নল ঠিক কতখানি লম্বা হলে চা চলকাবে না, সে বিষয়ে তাঁদের মূল্যবান গাণিতিক সূত্র নিঃসন্দেহে কোটি কোটি চা-পায়ীদের পাথেয় হয়ে থাকবে। ২০০২ সালে জীববিদ্যায় পুরস্কৃত হন নোর্মা বুবিয়ের, চার্লস প্যাক্সটন, ফিল বাওয়ার্স এবং চার্লস ডিমিং। তাঁদের অসমসাহসী গবেষণার বিষয় ছিল, “ব্রিটেনের খামারে মানবজাতির সংস্পর্শে উটপাখিদের মনে প্রেম সঞ্চারের প্রবণতা।” ২০০৯ সালে, ক্যাথরিন ডগলাস ও পিটার রলিনসন পশুচিকিৎসার ক্ষেত্রে এই পুরস্কার পান। “যে গরুদের নাম দেওয়া হয়, তারা বেনামী গরুদের থেকে বেশি দুধ দেয়।” – এই ছিল তাঁদের মূল্যবান গবেষণার বিষয়। তবে এর মধ্যে দয়া করে কেউ আবার ভারতীয় যোগসূত্র খুঁজবেন না।

২০১৩ সালের শান্তি পুরস্কারটির কথা শুনে তো আমার সুকুমার রায়ের ‘একুশে আইন’ কবিতার কথা মনে পড়ে গেল। বেলারুশের রাষ্ট্রপতি, আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো সর্বসমক্ষে হাততালি দেওয়া বেআইনি ঘোষণা করেন। তার চেয়েও বড় কথা, তাঁর অনুগত পুলিশবাহিনী এই আইন ভাঙার জন্য এক ভদ্রলোককে গ্রেফতার করে, যার কিনা আবার একটি হাত নেই। তাঁদের এই কঠোর কর্তব্যপরায়ণতার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁদেরও পুরস্কার দেওয়া হয়।
একেবারে হালের একটা উদাহরণ, ২০২১ সালের অর্থনীতিতে। পাভলো ব্লাভৎস্কি আবিষ্কার করেন, কোনও দেশের রাজনৈতিক নেতাদের স্থূলতা সে দেশের দুর্নীতির পরিমাণের একটি নির্ভরযোগ্য সূচক। যদিও চারিদিকে এত প্রকৃষ্ট ‘স্যাম্পেল কেস‘ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, যে এই আবিষ্কারে পাভলো সায়েবের এতদিন সময় কেন লাগল, তা বোঝা দুষ্কর। শুধু এরকম উদাহরণই নয়। ১৯৯১ সালে তিনটি ক্ষেত্রে কাল্পনিক আবিষ্কারের জন্য কাল্পনিক বিজ্ঞানীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। এর পিছনে ঠাট্টা ছাড়া আর কোনও কারণ ছিল কিনা জানা নেই। কেউ জানালে বাধিত হব। আর ১৯৯৪ সালে পদার্থবিজ্ঞানে পুরস্কার দেওয়া হয়, “ভূমিকম্প হয় মাগুর মাছের (ক্যাটফিশ) ল্যাজ নাড়ানোর কারণে।” –শীর্ষক গবেষণার জন্য। কিন্তু, পরে এটি বাতিল করা হয়, কারণ জানা যায় যে, এই গবেষণার খবরটি অসত্য, এবং ছড়ায় সংবাদমাধ্যমের ভুলে
অবশ্য, এই চারটি ছাড়া, আজ পর্যন্ত যা যা কৃতিত্বের জন্য ইগনোবেল দেওয়া হয়েছে, তার প্রত্যেকটিই ঘোর বাস্তব। এবারে দেখা যাক, ভারতীয়দের মধ্যে কারা কী শার্দূলসংহার করেছেন এই ক্ষেত্রে। খুব বেশি পিছনে যেতে হবে না। ২০২০ সালেই দুটি পুরস্কারে ভারতীয় যোগাযোগ ছিল। শান্তির ক্ষেত্রে পুরস্কার পান যুগ্মভাবে ভারতীয় ও পাকিস্তান সরকার, “গভীর রাতে পরস্পরের দরজায় ঘন্টি বাজিয়ে, কেউ দরজা খোলার আগেই পালিয়ে আসা”-র জন্য। ইয়ার্কি নয়, সংবাদমাধ্যমের কথা ঠিক ধরলে আরও অনেক লজ্জাজনক ছেলেমানুষির সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনা সত্যিই ঘটেছিল ভারত ও পাকিস্তান দু দেশেরই ডেপুটি হাই কমিশনারদের সঙ্গে, যখন তাঁরা অন্য দেশে ছিলেন।

যাই হোক, সেই বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই পুরস্কার দেওয়া হয় পৃথিবীর কিছু বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতাদের, যাঁরা প্রমাণ করেন, যে “অতিমারীর সময়ে দেশের মানুষের জীবন-মৃত্যুর পিছনে রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব, বৈজ্ঞানিক ও ডাক্তারদের থেকে বহুগুণে বেশি।” অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে জানাই, ব্রাজিলের জেয়ার বোলসোরানো, আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন ইত্যাদি বহু লোকের সঙ্গে এই তালিকায় নাম উঠেছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও। তবে মোদীই এই পুরস্কারের প্রথম ভারতীয় প্রাপক নন। ১৯৯৮ সালে শান্তির ক্ষেত্রে পুরস্কার পান ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী ও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তাঁদের ‘আগ্রাসী শান্তিনীতি’র পরিচায়ক হিসাবে একাধিক পরমাণু বিস্ফোরণের জন্য।
২০০১ সালে জনস্বাস্থ্য বিভাগে পুরস্কার পান চিত্তরঞ্জন আন্দ্রাড়ে ও বি. শ্রীহরি। তাঁরা প্রচুর পরিশ্রম করে আবিষ্কার করেন, নাসারন্ধ্রের ভিতরে একাগ্র আত্মানুসন্ধান উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ব্যাপক। ২০০২ সালে কেপি শ্রীকুমার ও জি নির্মলন গণিতের ক্ষেত্রে এই পুরস্কার পান, অতি সূক্ষ্মভাবে ভারতীয় হাতিদের পিঠের গড় ক্ষেত্রফল আবিষ্কারের জন্য। ২০০৩ সালে শান্তির ক্ষেত্রে পুরস্কার পান লাল বিহারী নামে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তি। এঁর পুরো ঘটনাটি নিয়ে বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। অত বিশদে ঢুকব না। তবে ইনি প্রধানত তিনটি কৃতিত্বের জন্য পুরস্কার পান, যার মধ্যে প্রধান ছিল মৃত মানুষদের একটি সঙ্ঘ বা Association of Dead People স্থাপন।

এ তো গেল হাসির ব্যাপার। কিন্তু, ইগনোবেলের আধুনিক সংজ্ঞাটি মনে আছে তো? যেসব আবিষ্কার আগে হাসায়, তারপর ভাবায়। তাই আবিষ্কারগুলি আপাতদৃষ্টিতে গুরুত্বহীন, উদ্ভট বা হাস্যকর মনে হলেও, এদের মধ্যে বেশ কিছু আবিষ্কার কিন্তু পরে মূল্যবান কোনও কোনও আবিষ্কারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। এমনকী, ২০০৯ সালে ন্যাশনাল পত্রিকায় এই মর্মে একটি প্রবন্ধও বেরোয়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০০৬ সালে জীববিদ্যায় পুরস্কারপ্রাপ্ত গবেষণার বিষয়টি ছিল, ম্যালেরিয়ার মশা মানুষের পা এবং লিম্বার্গার চিজের গন্ধের প্রতি সমানভাবে আকৃষ্ট হয়। সরাসরি এই গবেষণা কাজে লাগিয়ে আফ্রিকার বহু দেশে লিম্বার্গার চিজ দিয়ে ম্যালেরিয়ার মশার জন্য ফাঁদ পাতা হয়, যা আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার মহামারী রুখতে প্রভূত সাহায্য করে। তাই লক্ষ লক্ষ আফ্রিকানদের প্রাণরক্ষার পিছনে এই আবিষ্কারের অবদান অনস্বীকার্য।
ইগনোবেল প্রসঙ্গে আন্দ্রে গ্রাইমের নাম না করলে অপরাধ হবে। আজ পর্যন্ত ইনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ইগনোবেল ও নোবেল দুইই পেয়েছেন। ২০১০ সালে গ্রাইম সাহেব নোবেল পান পদার্থবিদ্যায়, ‘গ্রাফিন’ নামক পদার্থের তড়িৎচুম্বকীয় ধর্ম নিয়ে গবেষণার জন্য। তবে তারও দশ বছর আগে, ২০০০ সালে তিনি ইগনোবেল পেয়েছিলেন চৌম্বক শক্তির সাহায্যে একটি জ্যান্ত ব্যাঙকে শূন্যে উত্থিত করার জন্য। পরবর্তীকালে চীনের চন্দ্র মাধ্যাকর্ষণ গবেষণা কেন্দ্রের পিছনে নাকি প্রধান অনুপ্রেরণা ছিল গ্রাইমের ২০০০ সালের পরীক্ষাটির।
একটা আশার কথা দিয়ে লেখা শেষ করি। বাঙালিদের পরম সৌভাগ্য, যে এখনও পর্যন্ত কোনও বাঙালি ইগনোবেল পাননি। যে কোনও বিশ্বব্যাপী উদযাপনে বাঙালিরা একটা বঙ্গীয় ঘাঁতঘোঁত খুঁজতে যেমন ব্যগ্র থাকেন, সর্বান্তকরণে প্রার্থনা করি, অন্ততঃ এই একটি বিষয়ে তাঁরা ব্যতিক্রমী হয়েই থাকুন!
*ছবি সৌজন্য: cnn, nbcnews, dailysabah, Phys.org, Improbable.com
*ভিডিও সৌজন্য: Youtube.com
পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তিতিবিরক্ত হতে হতেও আইটি শিল্পতালুকে মজদুরি করতে বাধ্য হন। কিন্তু সবচেয়ে পছন্দের কাজ হাতে মোবাইলটি নিয়ে আলসেমি করে শুয়ে থাকা। চেহারাছবি নিরীহ হলেও হেব্বি ভালোবাসেন অ্যাকশন ফিলিম, সুপারহিরো আর সাই ফাই। সঙ্গে চাই সুরেশের রাবড়ি, চিত্তরঞ্জনের রসগোল্লা-পান্তুয়া, কেষ্টনগরের সরভাজা ইত্যাদি নানাবিধ মিষ্টান্ন।