জীবন থেকে জীবনে: পর্ব ২০

Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
Jessore and Khulna tour

আগুন, বই আর গোলাপ

আগের পর্বের লিংক: [] [] [] [] [] [] [] [] [] [১০] [১১] [১২] [১৩] [১৪] [১৫] [১৬] [১৭] [১৮] [১৯]

সেই সোমবার বিকেলে বিকেলে দিব্যি পৌঁছে গেছিলাম অরূপ সরকারের অফিসে। ফোনে নানা জনকে কাজের নির্দেশ দিচ্ছেন দেখলাম। চুপচাপ বসে দেখছিলাম সেই সব। আর ভাবছিলাম নতুন কী কাজের জন্য ডাক পড়ল অধমের। সহসা স্টেট এক্সপ্রেসের প্যাকেট খুলে বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে আর টেবিলের নীচে বসানো কলিং বেল টিপে ডেকে পাঠালেন বেয়ারা দোলকে। প্রৌঢ়ত্ব ছুঁই-ছুঁই দোল আসতে ফোনের মাউথপিস হাতে চেপে অর্ডার কলেন “দুটো কফি।” কফি আসতেই ফোন রেখে অরূপ বললেন,
– কী করছেন এখন?
বলতেই হল,
– তেমন কিছু না। ‘দেশ’-এর জন্য মিউজিকের রিভিউগুলো লিখি, সে-জন্য গান শুনে বেড়াই। আর তা না থাকলে কফি হাউজে বসি কখনও-সখনও। 
অরূপ আমার কথার মধ্যেই বলা শুরু করলেন,
– কী শুনলে রিসেন্টলি? 
– কেন, গোটা তানসেন ফেস্টিভালটাই তো শুনলাম। ভীমসেন যোশী, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, আমজাদভাই, মণিলাল নাগ, সন্ধ্যা মুখার্জি, বেহালার রবীন ঘোষ আর… 
আমাকে কথার মধ্যে থামিয়ে অরূপ বললেন,
– ঠিক আছে, ঠিক আছে। ওই রিভিউ তো আমি পড়েছি। আর কী করছ? 
– এই তো বেশ। আর কী করার! বন্ধুদের সঙ্গে মাল-টাল খাই।
অরূপ ওঁর সিগারেট আর কফি শেষ করে বললেন,
– কফিটা শেষ করে আমার সঙ্গে এসো। 
শেষ করলাম, আর ওঁর পিছন পিছন বেরিয়েও পড়লাম।

Statesman House
যাব-যাব করেও যাওয়া হয়নি বন্ধু বাসুদেব মুখার্জির স্টেটসম্যান হাউজের অফিসে…

চারতলা থেকে নেমে আমরা তিনতলায় এলাম। দেখি কাঠ আর কাচের কিউবিকলে কিউবিকলে ঘেরা বিশাল চত্বর। তার পাশ দিয়ে লম্বা গলি (চওড়াও) ফ্লোরের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত। তেমনই এক কাচ-কাঠে ঘেরা অফিসের পাশ থেকে বাঁক নিয়ে অরূপ নীচে এক সমান্তরাল প্যাসেজ দিয়ে খানিকটা গিয়ে ঢুকলেন এক বড়সড় চেম্বারে। এত ত্বরিৎ প্রবেশ হল যে দরজার বাইরের ডেজিগনেশন জানানো প্লেটটাও দেখে উঠতে পারিনি। আর ভিতরে ঢুকে তো বিলকুল থ। অদ্ভুত সুন্দর একটা চেম্বারে পেল্লায় এক কাচের টেবিলের ওপাশে এক সুপুরুষ ভদ্রলোক নীল ফুলস্লিভজ শার্ট আর ছাই-ছাই রঙের ওয়েস্টকোট পরে বসে, সামনে টাইপরাইটার, তাতে কিছু লিখছিলেন হয়তো, আর ঠোঁটে একটা দামি সিগার, যার অপরূপ মেজাজি সুগন্ধে ঘরটা ম’ ম’ করছে। ভদ্রলোকের বাঁদিকে এক বিখ্যাত বাঙালি শিল্পীর পেইন্টিং, যেটা ব্রাশ স্ট্রোকের সঙ্গে পেপার কাটিং মিশিয়ে একটা অভিনব কাজ। জায়গায় জায়গায় ক্যানভাসটা সামান্য পোড়ানো হয়তো। রং নীল, এবং দেখতে অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাপের মতন। 

গোটা তানসেন ফেস্টিভালটাই তো শুনলাম। ভীমসেন যোশী, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, আমজাদভাই, মণিলাল নাগ, সন্ধ্যা মুখার্জি, বেহালার রবীন ঘোষ আর… আমাকে কথার মধ্যে থামিয়ে অরূপ বললেন, ঠিক আছে, ঠিক আছে। ওই রিভিউ তো আমি পড়েছি। আর কী করছ? 

আমরা ঢুকতে ভদ্রলোক ওঁর চোখ তুলে চাইলেন এবং থুতনির নীচের ফরাসি স্টাইল দাড়িতে আঙুল বুলোতে লাগলেন। তারপর ওঁর সামনের দুটো চেয়ারের একটা দেখিয়ে আমায় বললেন, ‘বসুন’। আমি তো বসলাম, কিন্তু অরূপ না বসে টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন,
– এর কথাই তোকে বলেছিলাম। শঙ্কর।
অরূপ বসলেন না, কিন্তু ভদ্রলোকের সঙ্গে ওঁর ‘তুই-তুই’ করে কথা বলাতে বুঝে গেলাম ইনিই ওঁর দাদা এবং আনন্দবাজার ও হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার ম্যানেজিং এডিটর অভীক সরকার। প্রথম দর্শনে একজন ভদ্রলোকের দ্বারা যতটা ইম্প্রেসড হওয়া যায়, বোধহয় ততটা হয়ে গিয়েছিলাম। বসেছি কি বসিনি অভীকবাবু সটান প্রশ্ন করলেন সাহেবি কেতায়,
– এখানে চাকরি করবেন? 
আমি তো ফের থ মেরে আছি। এটা অনেকটা ‘অপুর সংসার’ ছবিতে অপুকে ওঁর বন্ধুর রাস্তায়, অন্ধকারে যেতে যেতে জিজ্ঞেস করার মতন, ‘কী রে, বিয়ে করবি?’ অপুর মনে প্রশ্নটা ছিল, এ কি নাটক না নভেল? আমার মনে প্রশ্নটা ছিল, ঠিক শুনেছি তো? কী বলব ভেবে উঠতেও পারছি না। চাকরি বলে কথা! শ্রীঅরবিন্দই জানি একমাত্র যিনি আইসিএস চাকরিতে না বলেছিলেন। আর আমি তো চাকরি পেলে বর্তে যাই। মাস গেলে মা’র হাতে কটা টাকা তুলে দিতে পারি। মস্ত বড়লোকের গিন্নির থেকে সেই মা’র কী দশা এখন! গুনে গুনে, টিপে টিপে সংসার চালায়। তবুও আমার কোনও বইয়ের দরকার হলে অকাতরে ঢেলে দিচ্ছে। তার হাতে মাসমাইনে তুলে দেওয়া যে কী সৌভাগ্যের হবে! এইসবই খানিক চুপ করিয়ে রেখেছিল আমাকে যখন অভীকবাবুর ফের সেই সাহেবি প্রশ্ন,
– তাহলে কবে জয়েন করতে পারবেন?

ABP
তাহলে আনন্দবাজারে কবে জয়েন করতে পারবেন?

আমার মৌনতাকে উনি সম্মতির লক্ষণ হিসেবে ধরে নিয়েছেন। তখন মনের বড় ভাবনাটা ব্যক্ত করলাম,
– স্যর, সেন্ট জেভিয়ার্সে আমি ক্লাস নিচ্ছিলাম রিসেন্টলি। আমার এমএ-র রেজাল্ট বেরলে ওখানে জয়েন করার কথা আছে ফাদার হুয়ার্টের সঙ্গে… 
আমি আর কী বলব জানার অপেক্ষায় থাকলেন না অভীকবাবু, বললেন,
– নো প্রবলেম, আপনি জয়েন তো করুন। দেখুন জার্নালিজম কেমন লাগে। তারপর রেজাল্ট বেরলে ডিসাইড করুন। ভালো লাগলে এখানেই থাকবেন, নয়তো সেন্ট জেভিয়ার্সে জয়েন করে যাবেন। তাই না? 
যন্ত্রচালিতের মতো বললাম,
– এ তো খুবই ভালো প্রস্তাব। তাহলে কবে আসব? 
অভীকবাবু বললেন,
– স্টার্ট নেক্সট মানডে। মানে টেন্থ। 
একটা বিদ্যুৎ খেলে গেল সারা শরীরে। ছ’দিন পর আমার চাকরি-জীবন শুরু। মা’র হাতে টাকা তুলে দিতে পারব, বন্ধুদের ঠোঁটে হুইস্কি! অরূপ বললেন,
– তাহলে চলো।
বেরিয়ে এসে অরূপ আমাকে বললেন,
– অভীক চান তুমি হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ডে আসো।
– অ্যাজ হোয়াট? 
– সাব এডিটর অর রিপোর্টার। যেটা তুমি চাও। 

অরূপ এরপর লিফট ধরে চারতলায় ওঁর নিজের অফিসে চলে গেলেন আর আমি সিঁড়ি ধরে নামতে থাকলাম। এক অপূর্ব অনুভূতি হচ্ছিল ভেতরে: ভাবছিলাম এজন্যই কি রবীন্দ্রনাথ লিখে ফেলেছিলেন ওঁর ওই অপূর্ব পদটি ‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়, তেয়াগিলে আসে হাতে’? যার শেষ কলিটিই সেরা বর্ণনা দেয় আমার মনের— ‘শান্ত হাসির করুণ আলোকে ভাতিছে নয়নপাতে’।

Father Mother
আনন্দে মা যেন কেঁদেই ফেলছে ফোনের ওপারে…

চাকরি যখন হয়েছে তখন তিনটি করণীয় কাজ এখন। প্রথম হল আনন্দবাজার থেকে বেরিয়ে কোনও একখান থেকে ফোনে মা-কে খবরটা দেওয়া। কিন্তু কোত্থেকে ফোনটা করব? মনে পড়ল অনেকদিন ধরেই যাব-যাব করেও যাওয়া হয়নি বন্ধু বাসুদেব মুখার্জির স্টেটসম্যান হাউজের অফিসে। ও এখন স্টেটসম্যানের নতুন সার্কুলেশন ম্যানেজার। ইয়াব্বড়া চেম্বার। বসলেই দামি পোর্সিলিনে চা বা কফি এসে যায়। গিয়ে বসতেই কফি এলো আর আমি ওর ফোনটা চেয়ে নিয়ে মা-কে খবরটা দিলাম। মনে হল আনন্দে মা যেন কেঁদেই ফেলছে ওপারে। শুধু বলতে পারল ‘আমি জানতাম।’ ওপারে বসে মুচকি মুচকি হাসছে তখন বাসুদেব। বলল,
– একটা ভাল খবর শুনলাম মনে হচ্ছে?”
বললাম,
– ঠিকই শোনা হয়েছে।
অমনি ফের বেল টিপে স্যান্ডউইচ আর পেস্ট্রি অর্ডার হল। বললাম,
– চাকরি হল হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ডে, আর সেলিব্রেশন হচ্ছে স্টেটসম্যানে! 
এই কথাবার্তার মধ্যেই ঘরে এসে গিয়েছিল স্টেটসম্যানের এক তরুণ অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বাসুদেবের বন্ধু। সে বলল,
– হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড কেন, স্টেটসম্যানেই আসা যাক না। এখানে তো রিক্রুটমেন্ট হচ্ছে! বাসুদেব বলল,
– শঙ্কর অসাধারণ বাংলা লেখে। আনন্দবাজার হাউজে থাকলে দুটো ভাষাতেই লিখে যেতে পারবে। ও ঠিক জায়গাতেই যাচ্ছে।

মা-কে খবর দেবার পর দ্বিতীয় কাজটা করতে বেরোলাম। গ্র্যান্ড হোটেল আর্কেডে নরেশের বইয়ের দোকানে দু’দিন আগে পছন্দ করে যাওয়া বইটা কিনতে বেরোলাম। পিটার ভাইস-এর আলোড়ন সৃষ্টিকারী আশ্চর্য নাটক ‘মারাত সাদ’। ওহ্, কী যে একটা নাটক! ইউএসআইএস লাইব্রেরি থেকে নেওয়া নাটকের কালেকশনে পড়া অবধি নাটকটা সংগ্রহে রাখার বাসনা আমার। কোথাও কিন্তু দেখছিলাম না সেটা। তারপর হঠাৎ সেদিন নরেশের দোকানে দেখে বইটা সরিয়ে রাখতে বলেছিলাম। গিয়ে দেখলাম নরেশ কথা রেখেছে। বলতে না বলতে পকেট বুকস এডিশনের ঝাঁ চকচকে ‘মারাত সাদ’ পেপারব্যাক কপি বার করে দিল। সাত টাকা দিয়ে বইটা নিয়ে প্রাণভরে শুঁকেও নিলাম। ‘দেশ’-এর সঙ্গীত সমালোচনার নগদ টাকায় বই কেনা হল। 

বাকি রইল শুধু আরেকটা কাজ। শ্যামল, চন্দন, খোকনদের জন্য এক বোতল বনি স্কট। আর ফিরতেও হবে শিগগির-শিগগির, আজ ৫ ডিসেম্বর, আগামী ১০ তারিখে কাজে যোগ দিতে হবে। গত পরশু, ৩ তারিখে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে ভারতও। একেবারে অল আউট ওয়র। যে কোনও মুহূর্তে বিমান হানা হতে পারে কলকাতাতেও। সতর্কবার্তা জারি করে জানানো হয়েছে সন্ধে নামলে জানলা বন্ধ রাখতে হবে। বাড়ির আলো যেন বাইরে না ঠিকরোয়। কারফিউ, নিষ্প্রদীপ, ব্ল্যাকআউট এই সব শব্দই ঘুরছে ফিরছে সারাক্ষণ। বাড়িতে বাড়িতে শুধু যুদ্ধের গল্প। কাগজ, রেডিও জুড়ে শুধু যুদ্ধ, যুদ্ধ আর যুদ্ধ। আর এই নিষ্প্রদীপে রামসীতার মন্দিরবাড়িতে আমার চাকরি পাওয়ার মুখলগ্ন উদযাপন হল এক বোতল হুইস্কি দিয়ে। কী ফূর্তি সবার, ভটচাজ (আমায় কোনও দিনই শঙ্কর বলে ডাকেনি ওরা) নতুন জীবন শুরু করছে! এ তো শুধু বাংলাদেশের নয়, ভটচাজেরও মুক্তি। থ্রি চিয়ার্স করা হচ্ছে বিলিতি মদ দিয়ে (ইন্ডিয়ান হুইস্কিকেও বলা হত বিলিতি) কিন্তু চিয়ার্সের ভাষা কী? না, ‘জয় বাংলা! জয় বাংলা! জয় বাংলা!’

Marat sade
পিটার ভাইস-এর আলোড়ন সৃষ্টিকারী আশ্চর্য নাটক ‘মারাত সাদ’!

বাড়ি ফিরে অন্ধকার শহরের স্মৃতি নিয়ে ‘মারাত সাদ’ নাটক হাতে শুতে গেলাম এবং একসময় এসে পড়লাম জ্যঁ পল মারা’র হত্যাকারী রূপীয়সী যুবতী কর্দে-র সংলাপে—

What kind of town is this
What sort of streets are these
Who invented this
Who profits by it
I saw peddlers
at every corner
they’re selling little guillotines
with tiny sharp blades
and dolls filled with red liquid
which spurts from the neck
when the sentence is carried out

পড়তে পড়তে মনে হল বিপ্লবের ফ্রান্স আর বিপ্লবের বাংলাদেশ যেন মিশে যাচ্ছে।   (চলবে)

 

*পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
*ছবি সৌজন্য: লেখক, DailyO
Sankarlal Bhattacharya Author

শংকরলাল ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট, কলকাতায়। ইংরেজি সাহিত্যে স্বর্ণপদক পাওয়া ছাত্র শংকরলাল সাংবাদিকতার পাঠ নিতে যান প্যারিসে। তৎপরে কালি-কলমের জীবনে প্রবেশ। সাংবাদিকতা করেছেন আনন্দবাজার গোষ্ঠীতে। লিখেছেন একশো ত্রিশের ওপর বই। গল্প উপন্যাস ছাড়াও রবিশংকরের আত্মজীবনী 'রাগ অনুরাগ', বিলায়েৎ খানের স্মৃতিকথা 'কোমল গান্ধার', হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিমালা 'আমার গানের স্বরলিপি'-র সহলেখক। অনুবাদ করেছেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা থেকে সত্যজিৎ রায়ের চিত্রনাট্য পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

banglalive.today/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.today and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: banglalive.today/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives banglalive.today/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com