কাকলি গানের বাড়ি: পর্ব ১৭

শহরতলি পাড়ার সব পুরনো বাড়িই ভেঙে গিয়ে বহুতল উঠছে। সেখানেই বসবাস এ পাড়ার বয়স্ক মানুষদের। তারই মধ্যে কৌতূহল দানা বাঁধে চঞ্চলচন্দ্র চন্দ্রকে নিয়ে। তিনি আবাসনের নিয়ম ভেঙে এক ভিখিরিকে বাড়িতে ঢুকিয়েছেন। কেন? অমর মিত্রের ধারাবাহিক উপন্যাস ‘কাকলি গানের বাড়ি’র আজ পর্ব ১৭।
একানড়ে : পর্ব ৫

ঘর থেকে বেরোবার আগে আরো একবার চোখ চালাল চারপাশে–সব শান্ত, নিঝুম। সাবধানে দরজা বন্ধ করে টুনু নীচে নেমে এল। দিদা এখন বাড়ি ঢুকবে। তাই সামনের গেটের কাছে যাওয়া চলবে না, সে ঘুমোয়নি দেখলেই বকতে শুরু করবে আবার। কিন্তু অদ্ভুত ধাঁধা লাগছে দিদাকে নিয়ে, যার উত্তর না পেলে স্বস্তি পাচ্ছে না সে কিছুতেই।
একানড়ে : পর্ব ৪

অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে থাকল টুনু। সাধারণ দেওয়াল একটা, কী করে হতে পারে এরকম ! চুপচাপ হাত পা ছড়িয়ে ছোপটা এখন শুয়ে আছে, নিরীহ নির্বিকার।
একানড়ে : পর্ব ৩

‘কে জানে ! দাদার বডি নিয়ে এসেছিল। ট্রাকটা ধাক্কা দিয়েছিল সাইড দিয়ে। মাথার একদিক ছিল না, ফেটে ঘিলু বেরিয়ে গেছিল, আর চোখটা ঝুলছিল। কিন্তু অন্যপাশটা একদম ঠিকঠাক ছিল, দেখে মনে হবে ঘুমোচ্ছে। আমি অনেকদিন স্বপ্ন দেখেছি, দাদা আমাদের ঘরের মধ্যে দাঁড়িয়ে কাঁদছে আর খুব চেষ্টা করছে চোখটাকে আবার সেট করে নিজের জায়গায় বসাতে, কিন্তু পারছে না। ভাল চোখটা থেকে জল বেরচ্ছে খালি।’
একানড়ে (পর্ব ২)

‘লজ্জা করে না গায়ে হাত দাও?’ ‘ছেনাল মেয়েছেলের আবার সম্মান !’ ‘তুমি চাইলে চলে যাও জয়রামতলা কিন্তু ছেলেকে নিয়ে যাবে না !’ ‘গলা উঁচু করবে না, এরকম অনেক দেখেছি ! তোমার তেজকে ভয় পাই ভেবেছ?’ কথাগুলো যখন ছিটকে আসত, তার ভেতরের ভয়গুলো ফ্রিজে রাখা দুধের প্যাকেটের মত ঘেমে উঠত
একানড়ে (পর্ব ১)

‘খিদে পেলে নুনে জারানো কান খায়। শুধু মাঝে মাঝে নেমে আসে, তারপর হেঁটে হেঁটে ওই যে জঙ্গলের মাথায় গম্বুজ ওখানে চলে যায়। ওই গম্বুজের গা ঘেঁষে নদী চলে গেছে, যেখান থেকে মাছ তুলে এনে একানড়ে শুকুতে দেয় গম্বুজের মাথায়। তারপর সেই শুঁটকি মাছ আগুনে পুড়িয়ে খায়।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২৫)

সেই বল্লালগড়। রাজা বল্লাল সেনের আমলে তৈরি। এখন ভাঙ্গাচোরা একটা ঢিবিতে পরিণত। লোকে বল্লালঢিবি নামেও ডাকে। এই অবস্থায় আস্তানা গড়ার পক্ষে একদম সেরা জায়গাটা। দুদিকে কুলিয়া আর হোড়ঙ্গর জঙ্গল। জঙ্গলের গায়ে বাগদির খাল। নামে খাল হলেও আসলে ভাগীরথীর শাখানদী একটা। বর্ষায় বান ডাকে। বড় বড় নৌকা চলে। কিন্তু জঙ্গল ভেদ করে কিছুতেই চোখে পড়েনা ঢিবিটাকে। কোনও জনবসতিও নেই আশেপাশে দু-চার ক্রোশের মধ্যে।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২২)

মৃদু অথচ তীক্ষ্ণ যন্ত্রণার শব্দ বেরিয়ে এল সর্দারের বুক চিরে। যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্যটা। এটাই হাতুড়ি মারার মোক্ষম সময়।
– মেগাইয়ের খুনের বদলা নেবে না?
পাঁচুর চোখে চোখ রেখে ঝটিতি প্রশ্ন করলেন খোদাবক্স। মুহূর্তে খালের ওপার থেকে চিতার আগুনের ঝলকটা উড়ে এসে যেন ঢুকে গেল পাঁচুর দু’চোখে।
– পীতাম্বরের রক্ত খাব আমি।
হাড়হিম করা গলায় বলে উঠল পাঁচু।