কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ উঠল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (জেএনইউএসইউ) প্রাক্তন সভানেত্রী শেহলা রশিদের বিরুদ্ধে। শেহলাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বাংলালাইভ ডট কমকে মঙ্গলবার শেহলা জানিয়েছেন, তাঁর বাকস্বাধীনতা হরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

রবিবার থেকেই কাশ্মীর প্রসঙ্গে একের পর এক টুইট করেছেন শেহলা। মোট ১০টি টুইটে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং কাশ্মীরের বাসিন্দাদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। শেহলা দাবি করেছেন, ভারতীয় সেনা উপত্যকার বাড়ি বাড়ি ঢুকে মারধর ও ভাঙচুর করছে। রান্না করা খাবার ফেলে দেওয়া হচ্ছে। চালের বস্তায় তেল ঢেলে দিচ্ছেন ভারতীয় জওয়ানরা।

শেহলার যে টুইটটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি শোরগোল শুরু হয়েছে, সেটি সোপিয়ান জেলার ঘটনা। জেএনইউ-এর প্রাক্তনীর দাবি, সোপিয়ানের একটি এলাকা থেকে চারজন কাশ্মীরি যুবককে গ্রেফতার করে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। সেখানে ওই চার যুবককে জেরা এবং নির্যাতন করা হয়। জেরার সময় ধৃতদের সামনে একটি মাইক রাখা হয়েছিল, যাতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের আর্তনাদ শুনতে পান।

সেনাবাহিনী অবশ্য শেহলার যাবতীয় দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। সেনার একটি সূত্রের দাবি, প্রাক্তন ছাত্রনেত্রী ইচ্ছাকৃত ভূয়ো খবর ছড়াচ্ছেন। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব। ওই আইনজীবীর দাবি, শেহলা ভুয়ো খবর ছড়িয়ে ভারতীয় সেনার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছেন। এই অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। তিনি বলেন, “শেহলা কি তাঁর অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারবেন? যদি সেনাকর্মীরা সত্যিই এমন কিছু করে থাকেন, তাহলে তার ভিডিয়ো বা অডিয়ো কই!”

শেহলা এ দিন বাংলালাইভকে বলেন, “কাশ্মীরে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানবাধিকারের উপর এমন আক্রমণ নজিরবিহীন। আমি বাস্তব তুলে ধরেছি, তাই সংঘ পরিবারের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।” তাঁর কথায়, “কাশ্মীরের সর্বস্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্ব বন্দী। বন্দুকের মুখে প্রতিবাদ দমন করার চেষ্টা করছে সরকার। যদি আমাকে গ্রেফতারও করা হয়, আমি আমার কথা বলে যাব।”

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শেহলা নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন আইসার নেত্রী ছিলেন। ওই সংগঠনের হয়েই তিনি জেএনইউ ছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য, শেহলার সঙ্গেই ছাত্র সংসদের সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমানে সিপিআই নেতা কানহাইয়া কুমার। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিহারের বেগুসরাইতে কানহাইয়ার পক্ষে প্রচারও করেছিলেন শেহলা।

জেএনইউ ছাড়ার পরেই অবশ্য নকশালপন্থী সংগঠনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় শেহলার। বর্তমানে তিনি শাহ ফয়সলের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *