ভিকি:- অনেকদিন খাই না। রিহ্যাবে গিয়ে আমাকে ছাড়তে হয়েছিল। মাঝেমাঝে শখে একটা দুটো পাফ খাই এখন। আর আজকের দিনে তো আমার খাওয়াই উচিত, কি তাই না? (হাসে) বিরু ইয়ে লাইফ মে কেয়া হ্যায়? কুছ নেহি। এখন আর আগের মতো মাথাগরম হয় না। আমিও আমার সোসাইটির চাহিদা অনুযায়ী চুপ করে থাকতে শিখে গেছি, শান্ত হতে শিখে গেছি। যে হিপোক্রেসি দেখলে আগে আমার রাগে হাত নিশপিশ করত, এখন সেই হিপোক্রেসি নিজের হাড়েমজ্জায় সেঁটে নিতে শিখে গেছি।
(ভিকি বোতল থেকে অনেকটা মদ ঢেলে খায় একসঙ্গে। জয়দেবের দিকে তাকায়। তারপর সুরেশের দিকে)
ছোটবেলা থেকে শুনে এলাম আমার মা হচ্ছে সুপারস্টার অভয় চোপড়ার বিশেষ বান্ধবী। মা মারা যাওয়ার পর একটা কাগজে এও লেখা হল, মা-র সঙ্গে অভয় চোপড়ার রিলেশন ব্রেক করার পর, মা ডিপ্রেসড হয়ে খালি নেশা করত। আর তখন পিতাজির সঙ্গে মায়ের রিলেশন হয়। এ-ও লেখা হল অভয় চোপড়ার আর মায়ের নাকি একটা সন্তানও ছিল। সে নাকি আমেরিকায় কোথাও বড় হচ্ছে। এরা ভাবেও না লেখার সময় কী লিখছে, কোন সোসাইটিতে বসে লিখছে। যেখানে শুধু গসিপ আর কেচ্ছা বিক্রি হয়।
(মদ খায়)
হলিউডে লিজ টেলর বিয়ে করেছিল আটবার, সোফিয়া লোরেন যখন কার্লো পন্টিকে বিয়ে করেছিল, পন্টির বউয়ের সঙ্গে তখনও অফিসিয়ালি ডিভোর্স হয়নি। অজস্র সম্পর্ক করে, বিয়ে ভেঙে সম্পূর্ণ উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল ভিভিয়ান লে। তিন তিনটে বিয়ে করার পরেও অ্যাঞ্জেলিনা জোলি প্রকাশ্যে বলতে পারে সে বাইসেক্সুঁয়াল। বলতে পারে, ‘আমার স্বামী না থাকলে হয়তো আমি মডেল অভিনেত্রী কেনি সিজিজু-কে বিয়ে করতাম’। দু-দুটো বিয়ে করার পরেও জুলিয়া রবার্টস প্রকাশ্যে বলতে পারে লিয়াম নিসন থেকে সাদারল্যান্ড, জেসন প্যাট্রিক থেকে বেঞ্জামিন ব্র্যাট – অন্তত ছটা অ্যাফেয়ার ছিল তার জীবনে। এসবে ওখানে কারুর কিচ্ছু এসে যায় না। সবাই খুশি। টাকা, ফেম আর কাজ শেষ কথা বলে। আর আমাদের এই ঢাকা-চাপা দেওয়া ভন্ড গাঁইয়া সমাজ, আমাদের নিয়ে যা পারে তাই বলে। যা পারে তাই লেখে। সুপারস্টারের সন্তানের কষ্টের মানে বোঝে এরা?
(মদ খায়, হাসে। খানিকটা জান্তব লাগে ভিকিকে)
বুঝলে সুরেশভাই, একবার থাইল্যান্ড আউটডোরে ওই অভয় চোপড়ার মেজ নাতনিটাকে ঠুকে দিয়েছিলাম। সিনেমাটায় ও-ই আমার হিরোইন ছিল। রাতে শুটিং-এর পরে দুজনে মিলে হোটেলের পাবে বসে প্রচুর মদ খেয়েছিলাম। তারপর শালা ওর ঘরে ঢুকে … (হাসে) আমার মনে হচ্ছিল আমি আমার মৃত মাকে নিয়ে সমাজে চলতে থাকা চোরাগোপ্তা স্ক্যান্ডালগুলোর এতদিনে প্রতিশোধ নিলাম। আমি শালা যেন পুরো ওই চোপড়া ফ্যামিলির খানদান, ওদের ঠাটবাট, ওদের ওই কনজারভেটিভ বনেদি হাবভাব – সবকিছুকে ওই রাতে ঠুকে দিলাম। শালা – রয়্যাল ফ্যামিলি! আমি অ্যাকটিং করব, আমি হিরো হব। বাইরে রাঁড় পুষব। আর আমার বউ শালা বাড়িতে আমার এন্ডি-গেন্ডি সামলাবে, তাদের বড় করবে। হারামি শালা। আমি সিওর, থাইল্যান্ডে ওই রাতে ওই ঘরে শালা ওর মাতাল নাতনির গরম শরীর দেখতে দেখতে মৃত অভয় চোপড়ার প্রেতাত্মা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দাঁত কিড়মিড় করছিল। (হাসে) কি লাইফ সুরেশভাই! এখন মাঝে মাঝে আমার ছোটবেলার ওই একা ফাঁকা ঘরটা মনে পড়ে। আমি চুপচাপ বসে বসে কাগজে এঁকে যাচ্ছি আর অপেক্ষা করছি রাতে মা শুটিং থেকে ফিরলে মা-কে আমার আঁকাগুলো দেখাব।
(হাত বাড়িয়ে বোতল নিতে যায় ভিকি। শরাফ সরিয়ে নেয়)