আকাশ থেকে খসে পড়ল
রক্তে রাঙা
টুকরো ভাঙা চাঁদ
রক্তে রাঙা? রক্তে?
রক্ত বাধ মানে না
স্রোতের প্রতিকূলে তারা
ঢুকিয়ে দিল হাত
নিজের হাত নিজের হাত
ঈশ্বরের হাতও
চাঁদের চোখ উপচানো জল
যন্ত্রণাকাতর

রক্তচাঁদ রক্তচাঁদ
ঘাসের বনে বনে
তার থেঁতলে দিল মুখ
ছিন্ন হল জিহ্বা
ফাটিয়ে দিয়ে জানু
স্তন কাটছে পাঁচজনে

শ্বদন্তে নয়
নারীমাংস পেলে ও দাঁত ফোটে
তুমি লজ্জা পেও না
লজ্জা স্বয়ং আগুন
নিজেই রোজ পুড়তে পুড়তে
খড়গ হয়ে ওঠে

বালিকা ছিল মুসলিম
বালিকা ছিল বালিকা
ধর্ষণে ধর্ষণে বালিকা
থেকে হয়ে উঠল
মাংস

বালিকা ছিল মন্দিরে বন্দি
দেবী তখন পাথর
দেবতা তখন কুন্তীর কথা
ভাবছেন

মানুষ আর রাক্ষসে
তাই সন্ধি হয়ে গেল
দিনের পর দিন সব ধার্মিক
রাক্ষস

মন্দিরের রুদ্ধ ঘরে একা
রক্ত থুথু কফ বীর্য পা ফাঁক
খিদে কষ্ট ভয় বীর্য দাঁত নখ
অত্যাচার আঃ

হে পবিত্র ধর্ষিত কন্যা
আমার তুমিই আছ
তোমার জন্য আমি
তারপর?

মরলে তোমার জন্য বেহেশ্ত
আমার জন্য স্বর্গ
শুধু এই জীবনে দুজনেই
বুঝলাম

দোজখ আর নরক
ঠিক কোনটা
বুঝলাম ধর্ষকের ধর্ম নেই
ধর্ষিতারও না

তিলােত্তমা মজুমদারের জন্ম উত্তরবঙ্গে। কালচিনি চা-বাগানে ইউনিয়ন একাডেমি স্কুল, আলিপুরদুয়ার কলেজ এবং স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা। ১৯৯৩ থেকে লিখছেন। সাহিত্য রচনার প্রথম অনুপ্রেরণা দাদা। ভালবাসেন গান ও ভ্রমণ| ‘বসুধারা' উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার এবং সেইসঙ্গে পেয়েছেন আরও অন্যান্য সাহিত্য পুরস্কার। ২০১৭-তে অংশ নিয়েছেন আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সাহিত্য কর্মশালায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *