ছড়া – ৩

আজকাল তো স্কুলগুলো সব ভ্যানিশ !
ওজন সমেত বইগুলো আর ব্যাগের বহর,
ভোরবেলা রোজ ঘুমের আদর ছিনিয়ে জবর,
দৌড়ে বাসের জানলা হেলান খুব ঝিমুনি;
ভুললে পড়া, লিখতে দেরি খুব বকুনি
সব গায়েব!

কবে থেকে ভাবছি ,কবে রেজাল্ট পাব?
স্কুল যাবে না স্কুল যাবে না, গোল্লা খাব।
অনলাইনে রেজাল্ট সেটাও কবে?
আদর দিয়ে বাঁদর, এটাও দেখতে হবে!

আজব নিয়ম ,আজব রকম কায়দা কেতা
স্কুলের পড়া ঘরেই, যত্ত আদিখ্যেতা!
দুষ্টু যত ফাঁকিবাজের দলগুলো সব
এই বারেতে জব্দ সবাই।

সময় বুঝে বসতে হবে স্কুলের ড্রেসে
কম্পিউটার দিদিমনির
ক্যামেরা চোখ লক্ষ ঘরে,
নজর করে,
পড়া যদি একটুখানি উল্টো স্বরে,
বাজবে অ্যালার্ম ভীষণ জোরে,
ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখনি?”

 

ছড়া – ৪

কোথায় গেল আঁকিবুকির শেষের পাতা
কোথায় গেল ছুটির ঘণ্টা, টিফিনবক্স
টেবিল, চেয়ার, দেওয়াল জুড়ে ধুলোর পরত,
কাঁধের কাছে দুঃখে সুখে অনেক মাথা।

ফুটবলটা ঠায় দাঁড়িয়ে পাঁচিল গায়ে,
মাকড়সারা থাক জটলায় চিচিং ফাঁক,
চকের গুঁড়ো হাতের ছাপে জ্যান্ত হয়,
দুষ্টুমি আজ চিলেকোঠায় বন্দি থাক।

টিফিন এখন লকডাউনে বন্ধ তাই,
ব্রেকফাস্টে দেওয়াল জুড়ে সূর্য রোজ
একলা সকাল, একলা দুপুর বন্ধু বই
রেলিং ফাঁকে চলছে চেনা মুখের খোঁজ।

কত বিকেল রাতের দিকে ফিরছে পাশ
পর্দা ঢাকা গরাদ ডানায় ভর করে,
মন কেমনের ঘোড়ার জিনে দিচ্ছি রাশ
সিঁড়ির কোণা, বেঞ্চিগুলো আয় সরে।

আমরাই হই রবিনহুড আর সিন্দবাদ,
কল্পনাতে ভাঙছি নিয়ম রাত্রি দিন
পেগাসাস আর ইউনিকর্নে তেপান্তর
আকাশ রাঙাই রামধনুতে সাত রঙিন।

প্রপা দে গঙ্গোপাধ্যায় পেশায় ডাক্তার, নেশায় কবি-গদ্যকার-লিমেরিকার। কবি ও কবিতার পরিমন্ডলে বড় হয়ে ওঠা প্রপার লেখা শুরু কবিতার হাত ধরে। এক অন্য ধরনের শৈলী-বর্ণ-ছন্দ-ভাবনা নিয়ে পথ চলার সূচনা মায়ের আঙুল ধরে। মা প্রখ্যাত কবি চিণ্ময়ী দে। সমাজ ও সময়, কলম, ষড়রিপু আর মনস্তত্ত্ব নিয়ে জাগলিং করার সাহচর্য ও সাহস যুগিয়েছে। মোদ্দা কথা হল, ইনি জাতে কলমচি তালে ডাক্তার। বোহেমিয়ান, ব্রাউনিয়ান প্রপার বিচরণ সাহিত্যের অন্দরে, বন্দরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *