আগের পর্বের লিংক: খলিল জিব্রানের দ্য প্রফেট-এর অনুবাদ: [কথামুখ] [প্রেম] [বিবাহ] [সন্ততি] [দান ও দাক্ষিণ্য] [পান-ভোজন] [কাজ-কারবার] [দুঃখ ও সুখ] [ঘর-বসত] [পরিধেয়] [বিকি কিনি] [অপরাধ ও শাস্তি] [আইনসম্মত] [স্বাধীনতা] [যুক্তি ও আবেগ] [সময়] [ভাল ও খারাপ]

প্রার্থনা

যাজক মেয়েটি এবার বলল, প্রার্থনা সম্পর্কে   আমাদের কিছু বলুন।

এবং উত্তরে তিনি বললেন:

প্রার্থনা তুমি শুরু কর, হয় নানা চাহিদার তাড়নায়, নয়তো কোনও বিপাকে পড়ে; কিন্তু হর্ষে পরিপূর্ণ হয়েও কি তুমি প্রার্থনায় বসো বা প্রার্থনা করও বৈভবেও? 

প্রার্থনা কি সেই জীবন্ত ইথারে নিজেরই অন্তরাত্মার বিস্তার নয়?

বিষাদ অন্ধকারে ডুবে, আরাম যেচে যদি তোমার প্রার্থনা জানাও, তবে প্রার্থনা করও আনন্দে, হৃদয়ের ভোরেও।

প্রার্থনার সময়, তোমার মন যদি কান্নায় ভেঙ্গেও পড়ে, তখনও সে কিন্তু তোমাকে দেখেই চলবে প্রার্থনায়, যতক্ষণ না সেই কান্না ছাপিয়ে তুমি হেসে ওঠো। 

প্রার্থনার বাতাসে মুহূর্তেই তুমি যুক্ত হয়ে যাবে আর সকল প্রার্থনারতদের সঙ্গে এবং এই প্রার্থনা ছাড়া আর কোনও ভাবেই তুমি যাদের নাগালই পেতে না ।

ফলে, তোমার ওই মন্দিরটি দর্শনাতীত হলেও তা অগ্রাহ্য করও এবং তা হয়ে উঠুক এমন কিছু, যা আনন্দ ও মধুরের সংযোগকারী।   

আর মন্দিরে যদি তুমি প্রবেশ কর, তা কিন্তু কোনও কিছুর প্রত্যাশী হয়ে কখনওই নয়:

আবার মন্দিরে গিয়ে, বিনত প্রার্থনায় যদি নতজানু হও, তাহলেও উঠোনা কিন্তু। 

মন্দিরে এসে, কারওর ভাল চেয়ে যদি কিছু  প্রার্থনা কর, তা যেন তোমার নিজের কানেও না যায়।    

এটুকুই অনেক বলে জানবে, যে এই দর্শনাতীত মন্দিরটিতে তুমি প্রবেশ করেছ।  

কী ভাবে এবং ঠিক কোন কোন শব্দে তুমি তোমার প্রার্থনা সাজাবে তা আমি শেখাতে পারবনা। 

 অতসব শব্দ বৈভব, ঈশ্বর তো কানেও তোলেন না, কারণ ওই কথাগুলি তো তোমার ঠোঁটে তিনিই উচ্চারণ করছেন।  

আর শিখিয়ে পড়িয়ে এও তো বোঝাতে পারবনা, যে এই সমুদ্র, বনরাজি ও পাহাড়গুলির প্রার্থনাই বা কেমন!

তোমরা যারা এই পাহাড়, বনভূমি ও সমুদ্রের সন্তান, তোমরা নিজেরাই তা তোমাদের হৃদয় গভীরে  খুঁজে দেখ, কী তাদের সেই প্রার্থনার ভাবটি।   

আর তা যদি স্থাণু রাত্রিতে শুনতে পাও, তো নিথর নীরবতাতেও শুনতে পাবে নিশ্চিত।

ঈশ্বর, যিনি আমাদের এই  শূন্যধাবন ক্ষমতাটি দিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছেতেই আমাদের মধ্যে নিহিত এই উড়ান। 

তোমার আমার এই যে বাসনাগুলি এগুলিও তাঁরই বাসনা।

“প্রভু, তোমার তাড়নাই তো আমাদের মধ্যে নিহিত, তাই যা বদলে দিচ্ছে আমাদের রাতগুলি, সেও যেমন তুমি; তেমনই দিনের বদলও ঘটে চলেছে তোমারই ইচ্ছেতে”।

“নতুন করে আপনার কাছে আমাদের আর কিছুই চাইবার নেই, কারণ, আমাদের মধ্যে যে চাহিদাগুলির এখনও জন্ম হয়নি, সেগুলির কথাও তো আপনি জানেন”।

“আমাদের চাহিদাগুলি আপনিই সৃষ্টি করুন, আর নিজেকে উজাড় করে দিয়ে পরিপূর্ণ করে তুলুন আমাদের”।   

Mandar Mukhopadhyay

আড্ডা আর একা থাকা,দুটোই খুব ভাল লাগে।
লিখতে লিখতে শেখা আর ভাবতে ভাবতেই খেই হারানো।ভালোবাসি পদ্য গান আর পিছুটান।
ও হ্যাঁ আর মনের মতো সাজ,অবশ্যই খোঁপায় একটা সতেজ ফুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *