আগের পর্বের লিংক: খলিল জিব্রানের দ্য প্রফেট-এর অনুবাদ: [কথামুখ] [প্রেম] [বিবাহ] [সন্ততি] [দান ও দাক্ষিণ্য] [পান-ভোজন] [কাজ-কারবার] [দুঃখ ও সুখ] [ঘর-বসত] [পরিধেয়] [বিকি কিনি] [অপরাধ ও শাস্তি] [আইনসম্মত] [স্বাধীনতা] [যুক্তি ও আবেগ] [সময়] [ভাল ও খারাপ] [প্রার্থনা] [সুখ]
সৌন্দর্য
এক কবি এবার বললেন, সৌন্দর্য বিষয়ে আমাদের কিছু বলুন।
এবং তিনি বললেন:
সৌন্দর্যকে আর কোথায় খুঁজবে এবং কী করেই বা তার নাগাল পাবে, যদি একই সঙ্গে পথ এবং তোমার পথপ্রদর্শক হয়ে নিজে থেকেই সে না আসে?
আর তার সম্পর্কে তুমি কীই বা বলতে পারো, যদি না সে নিজে এসে বুনে চলে তোমার কথাগুলি?
ক্ষুব্ধ ও আহতরা বলবে, “সৌন্দর্য হল মোলায়েম এবং করুণাবহ”।
“তা যেন ঠিক আমাদের মধ্যে হেঁটে আসা সেই তরুণী মা, যে নিজের গর্বেই কিছুটা লজ্জাবনতও বটে।
আশ্লেষ প্রিয় বলবে, “নাহ! তা তো একেবারেই নয়, এ হল এক ভয়াবহ শক্তি”
“ঠিক যেন সেই প্রবল ঝড় যা পায়ের নীচের মাটি এবং মাথার ওপরের আকাশটাই সজোরে কাঁপিয়ে দেয়” ।
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ক্লান্ত মানুষটি বলবে, “সৌন্দর্য হল, সেই নরম ফিসফিসানি যা শুধু আমাদের মর্মেই কথা বলে যায়”।
এবং এও বলবে, “তার সেই মৃদু স্বরই তো আমাদের স্তব্ধতাকে মুখর করে তোলে, ঠিক যেন সেই মৃদু আলোটি যা ছায়ার ভয়ে কাঁপে”।
আর অশান্ত, অস্থির মানুষটি বলবে, “সৌন্দর্যের গর্জন তো পর্বতের মধ্যেই আমরা শুনতে পাই”।
“তার কান্নাতেই তো কেঁদে ওঠে ক্ষুর ধ্বনি, ডানার ঝাপট আর সিংহের হুংকার”।
এবং রাতের নগর পাহারাদাররা বলবে, “ভোরের সঙ্গে সঙ্গেই তো সৌন্দর্য পুবদিকে উঠবে”।
মধ্যাহ্ন জোয়ারে মেহনতি মানুষ আর পথিক, এরা বলবে, “ সূর্যাস্তের জানলা দিয়ে আমরা তো দেখেইছি মাটিতে তার লেপটে থাকা”।
শীতের বরফে আটকে যাওয়া পর্যটক বলবে, “ উজ্জ্বল খুশিতে বসন্তের দূত হয়ে, সে তো লাফাতে লাফাতেই পর্বতে আসে”।
গরমের তাপে পুড়তে পুড়তে চাষি বলবে, “ আমরা তো তাকে দেখেছি, হেমন্তের ঝরা পাতার নাচে, আর এও তো দেখেছি, যে তার এলো চুলে লেগে থাকে কুচি কুচি বরফ দানা”।
সৌন্দর্য সম্পর্কে, তাই এর সবকটিকেই তুমিও বলতেই পার,
কিন্তু, আমরা তার সম্পর্কে আসলে কিছুই বলিনা, যা বলি, সবই আমাদের সেই অচরিতার্থ কামনার নিরিখে।
সৌন্দর্য কিন্তু আসলে কোনও চাহিদাই নয়, উচ্ছ্বসিত এক উল্লাস মাত্র।
এটি না কোনও পিপাসার্ত মুখবিবর বা সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শূন্য হাত।
এ হল, হৃদয়ের উত্তাপ আর আত্মার আনন্দ।
এ কোনও এমন ছবি নয় যে চোখে দেখবে, বা নয় তেমন সুরটিও যা ধরা দেবে শ্রুতিতে।
বরং তাকে দেখতে পাবে চোখ বন্ধ রেখেই, আর তেমনই কান বন্ধ থাকলেও তা অশ্রুত থাকবেনা।
চলমান জাহাজের জলরেখার নীচে, এ নয় কোনও গুপ্ত পথ বা হিংস্র থাবায় লাগান কোনও ডানা।
এ এমনই এক বাগান, যেখানে ফুল গুলি ফুটে থাকে চিরন্তন, আর সেখানে স্বর্গের পরীদেরও অবিরাম ওড়াউড়ি।
হে অরফালেসবাসী, সৌন্দর্য হল এই জীবন, বিশেষত যখন ওড়নার আড়াল সরিয়ে, সে তার পবিত্র মুখমণ্ডলটি তুলে ধরে।
আর তুমিই তো সেই জীবন এবং তুমিই সেই ওড়না।
সৌন্দর্য তাই, সেই চিরকালীন শাশ্বতী, যা আয়নায় তার ছায়া ফেলে চেয়ে আছে অপলক।
আর, তুমিই সেই শাশ্বত এবং তুমিই সেই আয়না।
আড্ডা আর একা থাকা,দুটোই খুব ভাল লাগে।
লিখতে লিখতে শেখা আর ভাবতে ভাবতেই খেই হারানো।ভালোবাসি পদ্য গান আর পিছুটান।
ও হ্যাঁ আর মনের মতো সাজ,অবশ্যই খোঁপায় একটা সতেজ ফুল।