গোলকিপার (পর্ব ১৪)

কুর্চি চোখ ফিরিয়ে তাকিয়ে আছে জলের দিকে। যে কথাটা দেবদীপ বলতে চায়, যা বলার জন্যে কুর্চিকে সে আজ ডেকেছে রোয়িং ক্লাবে, সেটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে বিষিয়ে উঠবে কুর্চির মন। মেয়েটা যথাসাধ্য চেষ্টা করছে ওর পুরনো দুঃখ ভুলে আনন্দে বাঁচার। দেবদীপ যা বলতে যাচ্ছে, তাতে কি ওর বাঁচাটা সহজ হবে? বাবা ছাড়া ওর নিজের লোক বলতে সত্যিই তো কেউ নেই! কুর্চি সামলাতে পারবে তো এই ধাক্কা? একা থাকে, ডিপ্রেশনে ভয়ঙ্কর কিছু করে বসবে না তো? কিন্তু অরিত্রর পাশে যে এখন কুর্চিকে দরকার!
গোলকিপার (পর্ব ১৩)

সুমিত্রা ভাবলেন, সত্যিই তো তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। নার্সিং হোমের নামটা শোনামাত্র একটা ট্যাক্সি নিয়ে ছুটে চলে এসেছেন। বুঝতে পারছেন, অনেকক্ষণ এখানে কাটিয়ে দেবদীপ এখন চলে যেতে চাইছে। চিকিৎসার সব দায়-দায়িত্ব যখন সেই হাতে তুলে নিয়েছে, তখন দেবদীপের সঙ্গে গেলে আরও কিছুক্ষণ অরিত্রর খোঁজ-খবর নেওয়ার সুযোগটা তো পাওয়া যাবে। কুর্চি দাঁড়িয়েই ছিল। দেবদীপ ফিরে আসতেই মনের অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে পড়তে বাধ্য হলেন সুমিত্রা।
গোলকিপার (পর্ব ৬)

জানলা খুলে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না অরিত্র। এ কি শান্তিনিকেতন? নাকি টুং-সোনাদা-ঘুম? কুয়াশা এত ঘন যে কয়েক হাত দূরে বাতাবি গাছটাও প্রায় মিলিয়ে গেছে! আর কী হাড় হিম করা ঠান্ডা রে বাবা। জানলা খোলার সঙ্গে সঙ্গে সেই দাপুটে ঠান্ডা ঘরের ভেতর ঝাঁপিয়ে পড়ে যেন জাপটে ধরল অরিত্রকে! জগিংয়ে বেরনোর তো কোনও প্রশ্নই নেই, […]
গোলকিপার (পর্ব ৫)

কুর্চি-প্রশান্তর তখন বিয়ের কথা ভাবার ফুরসত কোথায়? কুর্চি সবে এম এ শেষ করে পি এইচ ডি-র জন্যে তৈরি হচ্ছে। বাবার প্রশ্নের উত্তরে নেহাতই আলগাভাবে বলেছিল, “এখন ওসব কিছুই ভাবছি না বাবা। তাড়া কিসের? আগে রিসার্চ শেষ করি, প্রশান্তও আর একটু দাঁড়াক, ইন্ডাস্ট্রিতে একটু চেনাশোনা বাড়ুক। তখন না-হয় বিয়ের কথা ভাবা যাবে।” তার মানে আজ হোক […]
গোলকিপার (পর্ব ৪)

অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে একটা হাই চেপে দেবদীপ বলল, “অরি, কাল সকালে ডাক্তার সরকারকে একবার তোর হাতটা দেখিয়ে আনব, বুঝলি।” – নামকরা জ্যোতিষী? – অ্যাঁ? – হাত দেখালেই তো হিরে-মুক্তো পরতে বলবে। – ফাজলামি করছিস! নেক্সট উইকে দু’দুটো খেলা। – সব ঠিক হয়ে যাবে। শুনলে না, কুর্চি কী বলে গেল? কিস্যু হয়নি। শুধু চামড়াটাই কেটে গেছে। […]
রূপের আড়ালে

“এখানেও তুই না বলে দিলি?” মা’র করুণ মুখটার দিকে তাকিয়ে আদিত্যর এত অসহায় লাগে যে হেসে ব্যাপারটাকে হালকা করে দিতে চায়। “চিনুদির পছন্দ বিশ্বাস কোরও না। সেই লেকটাউনের মেয়েটার জন্য অত তদ্বির করল। তাকে বিয়ে করলে তোমাকে এত দিনে ভিটে ছাড়া হতে হত।” -অত অলুক্ষুনে চিন্তা করে কেউ বিয়ে করতে যায় না। -ওটাই তো ভুল […]
গোলকিপার (পর্ব ৩)

দূরে বাগানের প্রান্ত বরাবর সার দিয়ে নিচু নিচু আলো জ্বলছে। খাওয়ার পর অন্ধকার বারান্দায় দু’জনে বসল পাশাপাশি দু’টো চেয়ারে। সদ্য ব্যাঙ্কে চাকরি পাওয়া চব্বিশ বছরের অরিত্র মিত্র আর কলকাতা ফুটবল লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনে যে দলটির সে গোলরক্ষক, সেই দক্ষিণী সম্মিলনীর প্রাণভোমরা চল্লিশ ছুঁইছুঁই দেবদীপ গুহ বিশ্বাস। দেবদীপ পেশায় উকিল, ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বারে গুঁতোগুঁতি করে ওকালতিও […]
গোলকিপার (পর্ব ২)

আধো অন্ধকারে কয়েক পা এগনোর পরেই ঝরা-পাতার মধ্যে কোনও কিছু নড়াচড়ার একটা খসখস শব্দ কানে এল অরিত্রর। সঙ্গে সঙ্গে সাবধান হয়ে গেল সে। এখানে সাপ-টাপ আছে নাকি? থাকতেই পারে, যা গাছপালা ঘেরা ফাঁকা ফাঁকা সব বাগানওলা বাড়িঘর। তবে এই শীতের রাতে সাপের তো গর্তের মধ্যে ঢুকে গভীর ঘুম দেওয়ার কথা। তাহলে? দাঁড়িয়ে পড়ে অরিত্র আন্দাজ […]