একানড়ে : পর্ব ৭

সকলেই যেন থম মেরে আছে। কেউ কথা বলছিল না। সবার পেছনে বাপ্পা, তার বুকের ধুকপুকুনি অন্যেরা শুনতে পাবে এই ভয়ে কিছুটা দূরত্ব রেখে হাঁটছিল। বকের ডাকটা অবিকল তার দাদার গলার মতো। এভাবেই কি চিৎকার করেছিল, যখন চাকাটা দাদার মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছিল?
একানড়ে : পর্ব ৬

সে আচ্ছন্নের মতো তাকিয়েছিল পাঁচু ঠাকুর আর জ্বরাসুরের দিকে। কখনো দুটো মূর্তি মিলে গিয়ে একটা মূর্তি হয়ে যাচ্ছে, তার পরেই আলাদা হয়ে যাচ্ছে ছিটকে গিয়ে। পাঁচু ঠাকুরের পিঠ দিয়ে আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠছে একটা তালগাছ, টুনু দেখতে পাচ্ছিল জ্বরাসুর আর পাঁচু ঠাকুর মিলে সেই তালগাছ বেয়ে উঠে যাচ্ছে, ওপরে, ওপরে, আরো অনেক ওপরে….
একানড়ে : পর্ব ৫

ঘর থেকে বেরোবার আগে আরো একবার চোখ চালাল চারপাশে–সব শান্ত, নিঝুম। সাবধানে দরজা বন্ধ করে টুনু নীচে নেমে এল। দিদা এখন বাড়ি ঢুকবে। তাই সামনের গেটের কাছে যাওয়া চলবে না, সে ঘুমোয়নি দেখলেই বকতে শুরু করবে আবার। কিন্তু অদ্ভুত ধাঁধা লাগছে দিদাকে নিয়ে, যার উত্তর না পেলে স্বস্তি পাচ্ছে না সে কিছুতেই।
একানড়ে : পর্ব ৪

অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে থাকল টুনু। সাধারণ দেওয়াল একটা, কী করে হতে পারে এরকম ! চুপচাপ হাত পা ছড়িয়ে ছোপটা এখন শুয়ে আছে, নিরীহ নির্বিকার।
একানড়ে : পর্ব ৩

‘কে জানে ! দাদার বডি নিয়ে এসেছিল। ট্রাকটা ধাক্কা দিয়েছিল সাইড দিয়ে। মাথার একদিক ছিল না, ফেটে ঘিলু বেরিয়ে গেছিল, আর চোখটা ঝুলছিল। কিন্তু অন্যপাশটা একদম ঠিকঠাক ছিল, দেখে মনে হবে ঘুমোচ্ছে। আমি অনেকদিন স্বপ্ন দেখেছি, দাদা আমাদের ঘরের মধ্যে দাঁড়িয়ে কাঁদছে আর খুব চেষ্টা করছে চোখটাকে আবার সেট করে নিজের জায়গায় বসাতে, কিন্তু পারছে না। ভাল চোখটা থেকে জল বেরচ্ছে খালি।’
একানড়ে (পর্ব ২)

‘লজ্জা করে না গায়ে হাত দাও?’ ‘ছেনাল মেয়েছেলের আবার সম্মান !’ ‘তুমি চাইলে চলে যাও জয়রামতলা কিন্তু ছেলেকে নিয়ে যাবে না !’ ‘গলা উঁচু করবে না, এরকম অনেক দেখেছি ! তোমার তেজকে ভয় পাই ভেবেছ?’ কথাগুলো যখন ছিটকে আসত, তার ভেতরের ভয়গুলো ফ্রিজে রাখা দুধের প্যাকেটের মত ঘেমে উঠত
একানড়ে (পর্ব ১)

‘খিদে পেলে নুনে জারানো কান খায়। শুধু মাঝে মাঝে নেমে আসে, তারপর হেঁটে হেঁটে ওই যে জঙ্গলের মাথায় গম্বুজ ওখানে চলে যায়। ওই গম্বুজের গা ঘেঁষে নদী চলে গেছে, যেখান থেকে মাছ তুলে এনে একানড়ে শুকুতে দেয় গম্বুজের মাথায়। তারপর সেই শুঁটকি মাছ আগুনে পুড়িয়ে খায়।