প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১৪

মিস্টার বিশ্বনাথের অনুপ্রেরণা আমাদের মধ্যরাতের খাওয়ায় বেশ একটা ছোটখাটো বিপ্লব আনল। একটা বড় ডেকচিতে সবাই মিলে ভাত বানাতাম। একটি অন্ধ্রের ছেলে মোটামুটি ডাল বানাতে পারত। সঙ্গে থাকত দেশ থেকে পাঠানো আচার— লংকার, লেবুর, আমের। পাঁচ ছ’জন মিলে থালাভর্তি ভাত নিয়ে কমন রুমে টিভি দেখতে দেখতে জমিয়ে খেতাম।
প্রবাসী জীবনে খাওয়াদাওয়ার নানান মজার গল্প, কলম ধরেছেন সিদ্ধার্থ দে
ক্যাম্পবস্তির বালকবেলা: পর্ব ২২

সম্ভবত ১৯৬৯ সাল৷ বি.এ. ফাইনাল দিয়েছি কোনওক্রমে৷ রাজনীতিতে জড়িয়েছি বেশ৷ চাঁদুদা বললেন, হেমাঙ্গদার বাড়ি থেকে দুপুরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে মেন্টাল হাসপাতালে৷ ঋত্বিক ঘটক আছেন ওখানে৷ একটু ভাবতে হল৷ কারণ পুলিশ নজর রাখছে৷ পুলিশের হয়ে কংগ্রেসের ছেলেরাও৷ দিনের বেলা চলাফেরা করতে হয় সাবধানে৷ তবু রাজি হয়ে গেলাম৷ দু-তিন দিন পৌঁছে দিয়েছিলাম৷ বাকি দিনগুলো অন্যেরা৷ তখনই শুনি ঋত্বিক ঘটক নাটক করছেন হাসপাতালে৷ বিকেলে সন্ধেয় গেটের কাছে দাঁড়ালে রিহার্সাল শোনা যায়৷
মধুময় পালের কলমে পুরনো কলকাতার নস্টালজিয়া.
অন্য জীবন, অন্য মনন (২): রোসেলা

কেবল তো আর মানুষ নয়, ভেনিজুয়েলার গাছগাছালি, সমুদ্দুর সব নিয়ে ওদের ভাইবোনেদের বেড়ে ওঠাও ভারী আশ্চর্যের। সেই গাছগাছালির গন্ধ মাখতে মাখতে ওরা বারবার ভুলে যেতে চেয়েছে ইতালির নিভু চুলিতে নরম নরম রুটি সেঁকার গন্ধ, ওরা বলেছে আমরা ভেনিজুয়েলান। গাছেদের ভালবেসেছে ওরা প্রাণ ভরে। এমন বসন্ত দিনে গাছ ভরে ভরে যখন ট্যাবাবুইয়া ফুটেছে, ওরা তখন এই আলো আর আকাশকে ভালোবেসে কৃষ্ণচূড়ার জন্য অপেক্ষা করেছে। মিশনারিদের সঙ্গে ওরা পাড়ি দিয়েছে আমাজনের গভীর অরণ্যে। গাছেদের ভালবেসে, মানুষকে ভালবেসে।
চেনা পৃথিবীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্য জীবন, অন্য মানুষের কাহিনি- লিখছেন অমৃতা ভট্টাচার্য
অন্য জীবন, অন্য মনন (১): সুন্দরীগোগো

বেলা ফুরিয়ে এল। গরুরা এখন ধুলো উড়িয়ে বাড়ি ফিরবে। সূর্য ডুবে যাওয়া পশ্চিম আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে সুন্দরী গোগো আর কিছুক্ষণে ঘরে ফিরবে। এই গাঁয়ের মাটি ক্ষেত আকাশ কালকাসুন্দার ঝোপ দেখবে ওকে। দেখবে নাই বা কেন বলুন, ওই তো ওদের সেই সহজসুন্দরী। কোন সে কুলকুণ্ডলিনীকে স্পর্শের আকাঙ্ক্ষায় ও প্রতিদিন পান্তাভাতের সানকিতে ওষ্ঠ ছোঁয়ায়।
ক্যাম্পবস্তির বালকবেলা: পর্ব ২০

কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ৷ আমরা বলতাম টিয়ার গ্যাস৷ চোখ জ্বালা করছে৷ জলে ভেসে যাচ্ছে মুখ৷ জীবনে সেই প্রথম টিয়ার গ্যাসের ঝাপটা খাওয়া৷ হেডস্যার হেরম্ব চক্রবর্তী থাকেন কাছেই৷ পা চালিয়ে চলে গেলেন বাড়িতে৷ নিয়ে এলেন ধুতি৷ টুকরো টুকরো করে ছাত্রদের দেওয়া হল৷
…মধুময় পালের কলমে পুরনো কলকাতার রাজনৈতিক কালবেলার আখ্যান
ক্যাম্পবস্তির বালকবেলা: পর্ব ১৯

এককালে ডিহি শ্রীরামপুর অঞ্চলের একশো শতাংশ বাসিন্দাই ছিল মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের৷ হরেন মুখার্জির পিতৃদেব যখন জমি কিনে বাড়ি করেন, পূর্ব কলকাতার এই এলাকাটি ছিল অনুন্নত ও দীনদরিদ্র মানুষের বসতি৷ হিন্দুরা এখানে বসবাস শুরু করে সম্ভবত দেশভাগের কিছু আগে৷ মুসলমানদের বাড়িগুলো সম্পত্তি বিনিময়ের মাধ্যমে হিন্দু-বাড়ি হতে থাকে৷ এই কারণে এখানে গির্জা ছিল, মসজিদ ছিল, কিন্তু মন্দির ছিল না৷ টিনের ঘরের মন্দির কে কবে বানিয়েছিল তা নিশ্চিত করে বলা যায় না৷ মন্দির বানানোর পেছনে জমিদখলের বুদ্ধি থাকতে পারে৷ হতেই পারে সেই বুদ্ধিধর মানুষটি ইট-বালির কারবারি গৌরাঙ্গ রায়ের আগেকার লোক…
মধুময় পালের কলমে পুরনো কলকাতার ক্যাম্পজীবনের আখ্যান
জীবন থেকে জীবনে: পর্ব ২৪

অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে বাংলার জয়ের পর শেখ সাহেবকে মুক্তি দিল পাকিস্তান এবং তিনি লন্ডন হয়ে ঢাকায় এসে পৌঁছলেন ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২-এ। পাক বন্দিশালা থেকে লন্ডন হয়ে তাঁর ঢাকা এসে পৌঁছনো একটা রোমাঞ্চকর ঘটনাক্রম। মুজিবকে পাকরা কোথায় সরাচ্ছেন, কোত্থেকে কোথায়, সত্যিই কি তাঁকে মুক্ত করা হচ্ছে, করলে কখন কীভাবে? এহেন শতেক প্রশ্নে সারাদিন সে কী উত্তেজনা!
পিতৃভূমি বাংলাদেশ ভ্রমণের কথা শংকরলাল ভট্টাচার্যের কলমে। পর্ব ২8
জীবন থেকে জীবনে: পর্ব ২৩

গাড়ি দাঁড় করানো হল, কিন্তু আমি বাস্তবিকই চলচ্ছক্তিহীন, সিট থেকে বাইরে ফেলতে পাচ্ছি না। ওদিকে ধীরেনবাবু তরতর করে হেঁটে বেল বাজিয়ে ঢুকে গেছেন বাড়িতে। ওঁর দেখাদেখি বরুণও চলে গেছেন ভেতরে। ড্রাইভার বসে আছে স্টিয়ারিঙে। আর দলের ফটোগ্রাফার ফ্ল্যাশ দিয়ে তুলছে আমাদের বাড়ির ছবি। আমি নিশ্চুপ হয়ে বসে বাড়িটাকে শুধু দেখছি, দেখছি আর দেখছি। মনে পড়ছে নীরদচন্দ্র চৌধুরীর স্মৃতিচারণায় ওঁর হারিয়ে যাওয়া পূর্ববঙ্গের বাড়ি ও এলাকার কথা।
পিতৃভূমি বাংলাদেশ ভ্রমণের কথা শংকরলাল ভট্টাচার্যের কলমে। পর্ব ২৩