কবিতাগুচ্ছ: যে স্মৃতি বিচ্ছিন্নতাকামী

গাছের নাম অর্জুন হলেও তা থেকে খসে যাওয়া পাতাকে অপেক্ষমান হাওয়া/ উড়িয়ে নিয়ে যায় উদ্দেশ্যবিহীন, ঠিকানাহীন/ সাকিনে বনজ বলয় গড়ে ওঠে/ তুমি হেঁটে এলে সে পথে মর্মর বেজে উঠতে পারে/ আসছ?
রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন একগুচ্ছ কবিতা
উপন্যাস: নাগবন্ধন: ষষ্ঠ পর্ব

পকেটে হাত দিতেই সেই তান্ত্রিকের টকটকে লাল গ্লসি পেপারের ঝিনচ্যাক কার্ডটা বেরিয়ে আসে। খানিক কিন্তু কিন্তু করে ছিদামকে তান্ত্রিক রাজাবাবার কথাটা জিজ্ঞাসা করেই ফেলে সায়ন। ততক্ষণে সীমা মৌলীক্ষা দেবীর মন্দিরে ঢুকেছে পুজোর প্রসাদ আর প্রসাদী ফুল নিতে। এটাই সুযোগ। সীমার অনুপস্থিতিতে এসবের খোঁজ নেওয়াই ভালো। নয়তো আবার সে গোল বাধাতে পারে।
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক উপন্যাস ‘নাগবন্ধন’, আজ ষষ্ঠ পর্ব…
উপন্যাস: নাগবন্ধন: পঞ্চম পর্ব

রোগ-ভোগ হলে গ্রামের মানুষের একমাত্র আশা ভরসার জায়গা হল সতীমায়ের ভর, জলপড়া, তাবিচ, কবচ, মাদুলি, মানসিক আর মানিকপীরের ঝেড়ে দেওয়া অথবা নদীতে স্নান করে ভিজে কাপড়ে দণ্ডি কাটা। এই স্কুলের চাকরিটা পাওয়ার আগে হন্যে হয়ে সায়নকে ঘুরতে হত অফিসের ট্যুরে— সামান্য একটা সেলসের কাজে। সেই সূত্রেই বিহার, ওড়িশা, বাংলার জঙ্গুলে অরণ্যময়তার সঙ্গে তার পরিচয় বহুদিনের।
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক উপন্যাস ‘নাগবন্ধন’, আজ পঞ্চম পর্ব…
প্রথম নারী আত্মজীবনীকার রাসসুন্দরী দেবী

রান্নাঘরে ওই দেড়হাত ঘোমটা ঢাকা মোটা শাড়ি পরা অবস্থানই তাঁর কাছে সুযোগ হয়ে দেখা দিল। ঐ ঘোমটার আড়ালেই রাখলেন লুকিয়ে সংগ্রহ করা স্বামীর চৈতন্য ভাগবত পুঁথির একটি পাতা, ছেলের অ আ ক খ, মকশো করার একটি তালপাতা আর ছোটবেলার স্মৃতিতে ধরে রাখা অ আ ক খ উচ্চারণ। কিন্তু সেও তো এগারো বারো তেরো বছর বয়সের স্মৃতি। সেই স্মৃতির পাতাটি তিনি পুঁথির পাতা আর ছেলের তালপাতার পাশাপাশি রাখার চেষ্টা করেন, চারপাশের লোকজনের কথাবার্তার সঙ্গে মেলান।
প্রথম নারী আত্মজীবনীকার রাসসুন্দরী দেবীর জীবনের নানা কাহিনি, লিখলেন সুমিত্রা চৌধুরী
কবিতা: রিল

মাকে বলি— মা হাসো একটু/ ক্লান্তির সুরে মুছে/ মুখভর্তি হাসি, আমি বন্দি করতাম…
কবি বর্ণজিৎ বর্মনের নতুন কবিতা
উপন্যাস: নাগবন্ধন: চতুর্থ পর্ব

ছিদাম বাচ্চা ছেলে। বছর তেরো কী চোদ্দ হবে। সীমা আর সায়নের কথাবার্তা অত বোঝে না। তবে এটুকু বুঝতে পারে যে সেদিন সকালে সে একটা ঢোঁড়া সাপের মুখ দেখে ঘর থেকে বেরিয়েছিল। ওদের মাটির ঘরের সংলগ্ন নালাটা জলে টইটুম্বুর থাকে সবসময়। সেখানেই হঠাৎ সাপটা জলের মধ্যে থেকে বেরিয়ে ছিদামকে এক ঝলক দেখা দিয়ে আবার জলের মধ্যেই মিলিয়ে গেছিল। ছিদাম নিমের দাঁতন ঘষছিল মুখের মধ্যে।
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক উপন্যাস ‘নাগবন্ধন’, আজ চতুর্থ পর্ব…
জন বিসালের কবিতা: রাত্রি নামে

নাগাল্যান্ডের কবি জন বিসাল মূলত ইংরেজি ভাষায় কবিতা লেখেন। তিনি নিজেই তাঁর পঞ্চাশটি কবিতার ডিহাং উপজাতীয় অনুবাদ-সংকলন প্রকাশ করেছেন ১৯৮১ সালে। দিল্লিতে পড়াশুনা করেছেন। কৃষিবিদ্যায় স্নাতক, কৃষিই তাঁর জীবিকা।
কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন প্রাক্তন অধ্যাপক, গবেষক, অনুবাদক ও প্রাবন্ধিক স্বরাজব্রত সেনগুপ্ত। অনুবাদ পত্রিকা ও ভাষা সংসদের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ‘সোনালী ঘোষাল সারস্বত সম্মান’ (২০২৩)-এ ভূষিত করা হচ্ছে শ্রী স্বরাজব্রত সেনগুপ্তকে। আজীবনের সাহিত্যসাধনার জন্য তিনি জীবনকৃতি সম্মান পাচ্ছেন এবছর।
গল্প: বাঁচবার দিন: তরুণ কান্তি মিশ্র

আগে ও খুব কাঁদত, ছোট্ট বাচ্চাদের মতো। এমনকি বাইধরের পায়ের উপরে মাথা রেখে বলত, চোখের জলে, চুমুতে ভিজিয়ে দিত তার দুটো পা– আমাকে ছেড়ে কোথাও যেও না, তোমাকে আমার দিব্যি। বাইধর তখন চুপ থাকত, একদম নীরব। কাঁদতে কাঁদতে সাবিত্রী অসাড় হওয়ার পড়লে ও ঘর থেকে বেরিয়ে যেত, চুপচাপ।
ওড়িয়া ভাষার বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক তরুণ কান্তি মিশ্রের গল্প ‘বাঁচবার দিন’, বাংলায় অনুবাদ করেছেন প্রদীপ কুমার রায়