গল্প: এ জন্মের শেষ ঠিকানা

আসলে সে সব কথা নয় রে নীলা। আমাদের এই বয়সে একটু সমবয়সী মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। ওই দুটো সুখ-দুঃখের কথা বলা। তবে, সত্যি তো। দেশে থাকব কোথায়? আত্মীয়-স্বজনরা ঘরবাড়ি বিক্রি করে ফ্ল্যাটে উঠে যাচ্ছে। সেখানে বাড়তি লোকের জায়গা হয় না। ভাইবোন বলতে আমার বেঁচে আছেই বা ক’জন? কোথায় আর যাব।
প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১৮

ষাটের দশকে অস্ট্রেলিয়া থেকে ভালো জাতের ষাঁড় আনানো হত এদেশের গোরুর মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে। বর্তমানে ভারত আমাদের মতো মনুষ্যরূপী ষাঁড়দের অস্ট্রেলিয়াতে রফতানি করছে। দেশটার মানবসম্পদ বাড়ছে।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ইতিহাস ও সমাজভাবনার মিশেল, কলম ধরেছেন সিদ্ধার্থ দে…
শিশু বনাম রবীন্দ্রনাথ

সে রবীন্দ্রজয়ন্তী ভুলব না। মহারাজের উতোর আর দর্শকদের চাপান। মহারাজ বলছে—“এককানি ছোতো খেত আমি একেলা”। বলেই দর্শকদের সুযোগ দিতে চুপ করে যাচ্ছে। তাঁরা সমস্বরে ক্যাচ লুফে নিয়ে—“চারিদিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।” হঠাৎ মহারাজ আপন মনে—“বাকা জল, আঁকা জল কইছে খেলা…। গান গেয়ে গান গেয়ে কইছে খেলা…।” বড় করতালি সহযোগে মহারাজ মঞ্চ থেকে নেমে এলেন। বাবা সগর্বে বললেন—“বলেছিলাম না, সবটা বলতে পারবে না?”
প্রবাসে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন উপলক্ষ্যে কিছু মজার ঘটনা, স্মৃতিচারণ করলেন আলোলিকা মুখোপাধ্যায়…
প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১৫

অস্ট্রেলিয়ায় স্বেচ্ছায় অভিবাসী হয়ে আসার শুরুর দিনগুলোতে থেকে থেকে মনে একটা প্রশ্ন জাগত– উদ্বাস্তুদের সঙ্গে আমার মতো স্বল্প পুঁজি আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঝুঁকি নিয়ে দেশ ছাড়া মানুষদের খুব একটা পার্থক্য আছে কি? ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বেশ কয়েক বছর ধরে অনেক রকম লড়াই করতে হয়েছে পায়ের তলায় মাটি পেতে।
নিজের বিদেশবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে কলম ধরেছেন সিদ্ধার্থ দে…
প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১৪

মিস্টার বিশ্বনাথের অনুপ্রেরণা আমাদের মধ্যরাতের খাওয়ায় বেশ একটা ছোটখাটো বিপ্লব আনল। একটা বড় ডেকচিতে সবাই মিলে ভাত বানাতাম। একটি অন্ধ্রের ছেলে মোটামুটি ডাল বানাতে পারত। সঙ্গে থাকত দেশ থেকে পাঠানো আচার— লংকার, লেবুর, আমের। পাঁচ ছ’জন মিলে থালাভর্তি ভাত নিয়ে কমন রুমে টিভি দেখতে দেখতে জমিয়ে খেতাম।
প্রবাসী জীবনে খাওয়াদাওয়ার নানান মজার গল্প, কলম ধরেছেন সিদ্ধার্থ দে
প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১৩

খ্রিস্টমাসে কয়েক সপ্তাহের ছুটি। ব্যাবকক হল নামে যে ছাত্রনিবাসে থাকতাম সেটি প্রায় ফাঁকা। আমার মতো কিছু অভাগা দরিদ্র বিদেশি ছাত্র, যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তারাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছি কেবল। চারদিক মন খারাপ করা সাদা বরফে ঢাকা। বাঙালি মনের অবচেতনে কোথাও এই ফ্যাটফ্যাটে সাদা রঙের সঙ্গে মৃত্যুর একটা যোগসূত্র আছে।
প্রবাসী জীবনের নানা স্মৃতিকথা নিয়ে কলম ধরেছেন সিদ্ধার্থ দে
প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১২

সেই অপ্রতুল বৈদেশিক মুদ্রার আমলে কুড়িয়ে বাড়িয়ে শ’পাঁচেক ডলার নিয়ে এসেছিলাম সপ্তাহ তিনেক কোনওরকমে চলার মতো। আশা ছিল ঐ সময়ের মধ্যে কোনও কাজ পেয়ে যাব। ভদ্রমহিলা আমার পুঁজির বহর শুনে প্রায় আঁতকে উঠলেন। এরপর আমার তাজ্জব হওয়ার পালা শুরু। বুঝলাম সেই মুহূর্তে আমি সরকারীভাবে বেকার। সেই জন্য আমার নথিভুক্ত হবার দিন থেকেই দু সপ্তাহ অন্তর কিছু অর্থ প্রাপ্য। সেই ‘বেকার ভাতা’ নাকি সরাসরি একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যায়।
… নিজের বিদেশবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখছেন সিদ্ধার্থ দে
গল্প: জয়কিষণগঞ্জের গল্প (পর্ব ১)

দেবী ওর তেরো বছরের জীবনে কখনও একসঙ্গে এত পেঁয়াজ দেখেনি। আমেরিকায় লোকে এত বেশি বেশি বাজার করে কেন? বরফে জমানো রুই মাছ, ইলিশ মাছ, কই মাছ সবই একদিনে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। টাকা থাকলেও কত খেতে পারে মানুষ? দেবী তো বিয়েবাড়িতে গিয়েও দুটোর বেশি মাছ খেতে পারে না।