‘সীতা’র কপিরাইট কেড়েও রোখা যায়নি তাঁর উত্থান, শতবর্ষে বাংলা নাটকের ‘শিশির যুগ’

থিয়েটার কোম্পানিতে যোগ দিয়ে, প্রথমেই শিশিরকুমার মঞ্চস্থ করলেন, ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের ‘আলমগীর’। নাটক সম্পাদনা থেকে শুরু করে, সামগ্রিক উপস্থাপনার প্রতিটি ক্ষেত্রে এমন নতুনত্বের ছোঁয়া এর আগে দর্শক সেভাবে দেখেননি নাট্যমঞ্চে। ফলে, শুরুতেই বিপুল জন-সমাদর। সময়টা ১৯২১ সাল। এর পরের বছর, ১৯২২ সালে একই নাট্যকারের ‘রঘুবীর’-এ নাম ভূমিকায় ও দ্বিজেন্দ্রলালের ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে ‘চাণক্য’ চরিত্রে রূপদান করে চারিদিকে হৈচৈ ফেলে দিলেন। বাংলা নাট্যমহলের কর্তাব্যক্তিরা মনে মনে বেশ সমীহ করতে শুরু করলেন নবীন প্রতিভাটিকে। এই সমীহের ধরন কোন পর্যায়ের ছিল, তা বোঝা গিয়েছিল বছরখানেক পরেই।
লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়…
উনিশ শতকে ভোট নিয়ে একটি ব্যঙ্গগান

একজন উচ্চ মার্গের কণ্ঠশিল্পী ও দক্ষ বাদ্যযন্ত্রীর পাশাপাশি স্বামী বিবেকানন্দের সংগীতজ্ঞান কত গভীর ছিল, এই একটি বই-ই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তথ্য অনুযায়ী বইটি সম্পূর্ণই স্বামীজীর মস্তিষ্কপ্রসূত। অন্য সম্পাদকের ভূমিকা প্রায় নগণ্য। বইতে মোট গানের সংখ্যা ৬৪৭, যেগুলি গানের রীতি ও ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট অধ্যায়ে সংকলিত হয়েছে। এরকমই ‘বিবিধ সঙ্গীত’ অধ্যায়ে থাকা একটি গানের বিষয়— ভোট। প্রশ্ন হচ্ছে, উনিশ শতকের শেষভাগে প্রকাশিত একটি গানের বইতে ভোট নিয়ে কোনও গান থাকছে কীভাবে?
হেমন্ত-র স্বর্ণকণ্ঠ : কিছু ভাবনা

হেমন্তর মনে কিন্তু সংগীতশিল্পী নয়, সাহিত্যিক হবার বাসনাই গেড়ে বসেছিল। এ ব্যাপারে বাধ সেধেছিলেন সুভাষ। আপামর গানপ্রেমীদের সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাছে এজন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। ইস্কুলের অফ পিরিয়ডে বেঞ্চি বাজিয়ে গান গাইতেন হেমন্ত। তাই দেখে সুভাষ একদিন তাঁকে বলেছিলেন, গানই হেমন্তর দুনিয়া। সাহিত্য নয়। তার পরেও বেশ কিছুদিন অবশ্য হেমন্তর সাহিত্য-পাগলামি বজায় ছিল। তখন সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁকে বলেছিলেন, সাহিত্য করলে হেমন্ত মোটামুটি একটা জায়গা পর্যন্ত পৌঁছবে। কিন্তু সংগীতে সে সেরার পর্যায়ে যেতে পারে।
লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়।
‘বসন্ত’ গীতিনাট্যে রবীন্দ্র-নজরুল বন্ধন : কিছু অনুমান ও অনুভূতি

নিজের সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় তীব্র শাসকবিরোধী কবিতা লেখার জন্যে, ১৯২২-এর নভেম্বরে নজরুলকে কারারুদ্ধ করে ব্রিটিশ সরকার। সেইসময় নজরুল ছিলেন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় সেখানে গিয়ে তাঁকে দিলেন বইয়ের একটি কপি। বই বুকে নিয়ে তো আনন্দে নাচতে লাগলেন নজরুল। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা জেল-সুপার এসব দেখে, পবিত্রবাবুর কাছে জানতে চাইলেন ব্যাপারটা কী? পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় বললেন যে, ‘পোয়েট টেগোর’ নজরুলকে এই বইটি ‘ডেডিকেট’ করেছেন। সুপার জিজ্ঞেস করলেন, “ইউ মিন প্রেজেন্টেড?” পবিত্রবাবু বললেন, “নো ডেডিকেটেড”।
লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়…
অচেনা মৃণাল সেন

তাঁর ছবিজীবনের শুরু থেকে ১৯৬৯ সালে ‘ভুবন সোম’-এর আগে অবধি এমন এক মৃণাল সেনকে আমরা দেখি, যিনি মূলধারার ছবির জগতে মিশে গেছেন বারেবারেই। তা সে পরিচালক বা শুধুমাত্র চিত্রনাট্যকার― যাই হোন না কেন। তখনকার একরাশ জনপ্রিয় ডাকসাইটে অভিনেতা অভিনেত্রীরা অভিনয় করছেন ঐসব ছবিতে। বিখ্যাত সব গীতিকার, সুরকারেরা কাজ করছেন। সবচেয়ে বড় কথা, নিজেকে এক ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার অবস্থানে রেখেও এইসব ছবিতে স্বতস্ফূর্ত বাঙালিমনের প্রকাশ ঘটেছে মৃণাল সেনের। যা অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য বলে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়। একইসঙ্গে বলতে হবে, তাঁর এইসব ছবির প্রত্যেকটির ক্ষেত্রেই সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের টানাপোড়েনের বার্তা আছে গল্প বলার ধাঁচে। কোনওটাই কিন্তু বক্তব্যশূন্য নয়।
চেনা মৃণাল সেনের আড়ালে অন্য আরেক মৃণাল সেন, ফিরে দেখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়…
প্লেব্যাক থেকে অভিনয়: বহুমুখী অনুভার দীপ্তি

অনুভা গুপ্তার অভিনয়ের প্রধান সম্পদ ছিল তাঁর চোখদুটি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে চোখের ভূমিকা যে কত বড়, তা আমরা জানি। অনুভার ক্ষেত্রে তার অন্যতম সেরা দৃষ্টান্ত বোধহয় দেখা যায়। শুধুমাত্র তাকানোর ধরনে তফাৎ ঘটিয়েই তিনি অভিনীত চরিত্রটিকে দর্শকমনে গেঁথে দিতে পারতেন। নায়িকা হিসেবে বাংলা সিনেমায় যে কজন শিল্পী নিজেদের শক্তিশালী অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, অনুভা গুপ্তা অবশ্যই তার প্রথম সারির একজন।
অভিনেত্রী অনুভা গুপ্তের নানামুখী প্রতিভার গল্প, লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়…
চুনী উঠল রাঙা হয়ে (শেষ পর্ব)

চুনী গোস্বামী পঞ্চাশের দশকের শেষদিক থেকে ষাটের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দননগরের ক্লাব ও জেলাস্তরে নিয়মিত ফুটবল ও ক্রিকেট খেলেছেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা মানিক গোস্বামীও। এঁরা খেলতেন চন্দননগর সি.সি ক্লাবে…
চুনী উঠল রাঙা হয়ে (প্রথম পর্ব)

চুনী গোস্বামী যে জনমানসে গ্ল্যামার আইডল হয়ে বিরাজ করলেন চিরকাল, তার নির্দিষ্ট কারণ খোঁজা সম্ভব নয়। তবে আন্তর্জাতিক মানের একজন ফুটবলারের পাশাপাশি রাজ্য ও পূর্বাঞ্চলে তাঁর ক্রিকেটারের ভূমিকা বোধহয় এ ব্যাপারে একটা অন্য মাত্রা দিয়েছিল।….