গোলকিপার (পর্ব ১৫)

মাঝের তিনটে দিন সুমিত্রাকে সত্যিই নিয়ম করে অরিত্রর খবর দিয়ে গেছে দেবদীপ। সুমিত্রা জানেন অরিত্রর অবস্থা স্থিতিশীল, চিকিৎসায় ভালোই সাড়া দিচ্ছে সে। তবু সারাটা রাস্তা এলেন দুরুদুরু বুকে। নার্সিং হোমে পৌছে লবির সামনে দেবদীপ অপেক্ষা করছে দেখে আরও যেন বেড়ে গেল তাঁর বুকের কাঁপুনি। লিফট থেকে নেমে আইসিইউ-এর দিকে যেতে যেতে বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল বছর চারেক আগে হাসপাতালে তাঁর স্বামীর শেষ কয়েকটা দিনের দৃশ্য। ভয় হচ্ছিল, চনমনে ছেলেটা যন্ত্রের ঘেরাটোপে কী জানি কী কষ্টের মধ্যেই না আছে! যত এসব কথা ভাবছেন, ততই যেন পা অসাড় হয়ে আসছিল তাঁর। টকটকে লাল হয়ে উঠেছে তাঁর মুখ।
গোলকিপার (পর্ব ১৪)

কুর্চি চোখ ফিরিয়ে তাকিয়ে আছে জলের দিকে। যে কথাটা দেবদীপ বলতে চায়, যা বলার জন্যে কুর্চিকে সে আজ ডেকেছে রোয়িং ক্লাবে, সেটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে বিষিয়ে উঠবে কুর্চির মন। মেয়েটা যথাসাধ্য চেষ্টা করছে ওর পুরনো দুঃখ ভুলে আনন্দে বাঁচার। দেবদীপ যা বলতে যাচ্ছে, তাতে কি ওর বাঁচাটা সহজ হবে? বাবা ছাড়া ওর নিজের লোক বলতে সত্যিই তো কেউ নেই! কুর্চি সামলাতে পারবে তো এই ধাক্কা? একা থাকে, ডিপ্রেশনে ভয়ঙ্কর কিছু করে বসবে না তো? কিন্তু অরিত্রর পাশে যে এখন কুর্চিকে দরকার!
গোলকিপার (পর্ব ১৩)

সুমিত্রা ভাবলেন, সত্যিই তো তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। নার্সিং হোমের নামটা শোনামাত্র একটা ট্যাক্সি নিয়ে ছুটে চলে এসেছেন। বুঝতে পারছেন, অনেকক্ষণ এখানে কাটিয়ে দেবদীপ এখন চলে যেতে চাইছে। চিকিৎসার সব দায়-দায়িত্ব যখন সেই হাতে তুলে নিয়েছে, তখন দেবদীপের সঙ্গে গেলে আরও কিছুক্ষণ অরিত্রর খোঁজ-খবর নেওয়ার সুযোগটা তো পাওয়া যাবে। কুর্চি দাঁড়িয়েই ছিল। দেবদীপ ফিরে আসতেই মনের অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে পড়তে বাধ্য হলেন সুমিত্রা।
গোলকিপার (পর্ব ১২)

ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে অরিত্র অভ্যেসমতো বারান্দায় এসে বসার সঙ্গে সঙ্গে সুমিত্রা তার মাথায় পুজোর ফুল ঠেকিয়ে বললেন, “রক্ষা করো, করুণা করো, মার্জনা করো।” অভ্যেস মতোই বসলেন ছেলের পাশের চেয়ারে। ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম হলেও সুমিত্রার বিয়ে হয়েছে হিন্দু বাড়িতে। তবু তাঁর পুজো আর প্রার্থনা এখনও একটু অন্যরকম। তাঁর ঠাকুরঘরে কোনও ঠাকুরের মূর্তি বা ছবি থাকে […]
গোলকিপার (পর্ব ১১)

রাত সাড়ে নটা বাজল। কনসালটেন্সিতে আসা শেষ রোগীটি চলে যেতেই ডাক্তার সুজাত গুপ্ত হাসপাতালের ন’তলায় তাঁর চেম্বারের সহায়কদের বললেন সমস্ত বড় আলো নিভিয়ে বাড়ি চলে যেতে। অন্ধকার ঘরে টেবল ল্যাম্প জ্বালিয়ে একটা জার্নাল খুলে পড়তে শুরু করলেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে ঢুকলেন চিকিৎসা-জগতের বাইরে তাঁর সবচেয়ে বিশ্বাসভাজন মানুষ অলোকেশ গুহ বিশ্বাস। অনেক দিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। […]
ত্রিধারা-র ধারাজল (বই সমালোচনা)

ভীমবেটকার রক পেন্টিং আর কেভ আর্টের মধ্যে লুকিয়ে থাকে এক অজানা সত্য। প্রাগৈতিহাসিক যুগের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় আজকের ঐতিহ্য।
গোলকিপার (পর্ব ৯)

‘বুঝতে পারছি না রে অরিত্র, কুর্চির সেদিন খেলা দেখতে আসাটা তোর কেরিয়ারের পক্ষে ভালো হল, না খারাপ?’ সকালের প্র্যাকটিসের পর লেকের ধারে একটা রোয়িং ক্লাবে অরিত্রকে নিয়ে দেবদীপ এসেছে দরকারি কথা আছে বলে। সেখানেই জলের ধারে একটা টেবিলে মুখোমুখি বসে দেবদীপ ব্রেকফাস্টের অর্ডার দিল। তারপর গুছিয়ে বোমাটা ফাটাল। অরিত্র সত্যিই অবাক দেবদীপের কথা শুনে। বলল, […]
গোলকিপার (পর্ব ৭)

দরজা বন্ধ করে দোতলায় বারান্দা-লাগোয়া টিভির ঘরে গিয়ে বসতেই অস্বস্তির কাঁটাটা আবার খচখচ করে উঠল কুর্চির মাথায়। কেউ কি তাকে দেখছে? সেই ঠাম্মার আমল থেকেই টিভির ঘরের বড় বড় জানলায় পর্দা টানা হয় না। টিভি দেখতে দেখতেই ঠাম্মা বারবার আকাশের দিকে চাইতেন। টের পেতে চাইতেন কখন সন্ধে হল, কখন মেঘ করল, বৃষ্টি নামল। কিন্তু এখন […]