শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২৫)

illustration by Chiranjit Samanta

সেই বল্লালগড়। রাজা বল্লাল সেনের আমলে তৈরি। এখন ভাঙ্গাচোরা একটা ঢিবিতে পরিণত। লোকে বল্লালঢিবি নামেও ডাকে। এই অবস্থায় আস্তানা গড়ার পক্ষে একদম সেরা জায়গাটা। দুদিকে কুলিয়া আর হোড়ঙ্গর জঙ্গল। জঙ্গলের গায়ে বাগদির খাল। নামে খাল হলেও আসলে ভাগীরথীর শাখানদী একটা। বর্ষায় বান ডাকে। বড় বড় নৌকা চলে। কিন্তু জঙ্গল ভেদ করে কিছুতেই চোখে পড়েনা ঢিবিটাকে। কোনও জনবসতিও নেই আশেপাশে দু-চার ক্রোশের মধ্যে।

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২৪)

illustration by Chiranjit Samanta

দূরে একটা বিশাল ঝাঁকড়া আমগাছের আড়ালে লুকিয়ে দৃশ্যটা দেখছিল সফিকুর। বয়েস বছর আটদশেক। বাপচাচাদের মাটিতে ফেলে চাবুকপেটা করছে ওই শালা ফেডিসায়েব। এক্ষুনি খবরটা পৌঁছে দিতে হবে বিশু সর্দারের চরদের কাছে। আল ধরে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় লাগাল সফিকুর।

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২৩)

illustration by Chiranjit Samanta

সেদিন রাতে পচুইয়ের নেশায় বেহুঁশ হয়ে ঘুমচ্ছিল পীতাম্বর। কোনওভাবে খবরটা পেয়ে যায় পাঁচকড়ি। দলবল নিয়ে পৌঁছে যায় বড়বিলে। বুড়ির গলায় তলোয়ার ঠেকিয়ে চুপ করিয়ে রাখে সাঙ্গপাঙ্গরা। বেড়ালের মত চাল বেয়ে উঠে খড় ফাঁক করে বর্শার এক ফোঁড়ে পীতুকে গেঁথে ফেলে পাঁচু। চোখ খুললে নাকি পাঁচুর দিকে তাকিয়ে হেসেছিল পীতু।
– ঘুমন্তে মারলি?
– আমার মেগাইকে কি জীয়ন্তে ধরেছিলি?
জবাব দিয়েছিল পাঁচকড়ি।

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২২)

illustration by Chiranjit Samanta

মৃদু অথচ তীক্ষ্ণ যন্ত্রণার শব্দ বেরিয়ে এল সর্দারের বুক চিরে। যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্যটা। এটাই হাতুড়ি মারার মোক্ষম সময়।
– মেগাইয়ের খুনের বদলা নেবে না?
পাঁচুর চোখে চোখ রেখে ঝটিতি প্রশ্ন করলেন খোদাবক্স। মুহূর্তে খালের ওপার থেকে চিতার আগুনের ঝলকটা উড়ে এসে যেন ঢুকে গেল পাঁচুর দু’চোখে।
– পীতাম্বরের রক্ত খাব আমি।
হাড়হিম করা গলায় বলে উঠল পাঁচু।

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২১)

illustration by Chiranjit Samanta

পরদিন মাঝরাতে আটঘড়ার জমিদার বাড়ি ঘিরে ফেলল এক-দেড়শো জনের বিশাল ডাকাতদল। সদর দরজায় বসে ঝিমোতে থাকা কোম্পানির দুই তেলেগু সেপাই, কাঁধ থেকে বন্দুক নামানোর আগেই গুলি খেয়ে লটকে পড়ল মাটিতে। প্রাসাদের মধ্যে থাকা বিশ তিরিশজন পাইক লেঠেল বাহিনী ঝড়ের মুখে খড়কুটোর মত উড়ে গেল বিশ্বনাথের দলের সামনে।

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২০)

illustration by Chiranjit Samanta

গতরাতে আটঘড়া গ্রামে এক জমিদার বাড়িতে জনাপঞ্চাশ মিলে ডাকাতি করতে গিয়েছিল ওরা। তার আগে বিশ্বনাথের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী ওখানকার বাবুদের হুমকির চিঠিও পাঠিয়েছিল। পাল্টা চিঠিতে জবাব এসছিল। একটি লাল পয়সাও দেওয়া হবেনা। যা পারো করে নাও।

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ১৯)

illustration by Chiranjit Samanta

ডাকাতি সেরে ফেরার পথে ঘন জঙ্গলে এক তরুণীর মৃতদেহের বুকে তার জীবীত সদ্য়োজাত শিশুকে দেখতে পায় মনোহর সর্দার। বুকে তুলে এনে একমাত্র আত্মীয়া বুড়ি পিসির হাতে দিয়ে বলেছিল, ওকে সন্তানের মতো মানুষ করব। চৌরঙ্গিবাবার আশীর্বাদ নিয়ে নামকরণ হল হারাধন। তারপর? …

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ১৮)

illustration by Chiranjit Samanta

সকাল সকাল দারোগা খোদাবক্স খবর পেলেন বিশের এককালের স্যাঙাত বোদে ডাকাত বিশের হাতে মার কেয়ে শয্যাশায়ী। তাকে সুস্থ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন নিশি কবরেজ। বোদে সুস্থ না হলে যে মহা বিপদ! কী বিপদ? …