ক্যাম্পবস্তির বালকবেলা: পর্ব ২৩

70s Kolkata politics and refugee life

দিদিমা মারা গেলেন চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে৷ বিনা চিকিৎসায়, সারাদিন বারান্দায় পড়ে থেকে৷ ডাক্তারেরা পাশ দিয়ে গটগট করে হেঁটে গেলেন ক্রুশিয়াল কনফারেন্সের হাবভাবে৷ খটখটিয়ে নার্সরা হেঁটে গেল উড়ন্ত ব্যস্ততায়৷ দিদিমা পাঁজর ভেঙে ভেঙে বাতাস টেনে টেনে একসময় স্থির হয়ে গেলেন৷ নিজের দেশ থেকে, ভিটেমাটি থেকে দূরে অনাহার অবহেলা অসম্মানের অকুস্থলে তাঁর দেহ ছাই হল৷ চিতার খরচ মেটানো হল চাঁদা তুলে৷

মধুময় পালের কলমে পুরনো কলকাতার রাজনৈতিক কালবেলার আখ্যান…

অন্য জীবন, অন্য মনন (৩): শেরিং

Nature and sustainability Column-on Shering

পৃথিবীর ছাদের উপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একজন মানুষ, একজন মেয়ে কেমন করে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের সাক্ষী থাকছে প্রতিদিন। বদলে যাচ্ছে বৃষ্টি, বদলে যাচ্ছে ঘাসের জোগান, কমে যাচ্ছে ভেড়ার দল, ছাগলের পাল। ওদের লোম, ওদের বর্জ্য, ওদের দুধ থেকে দই মাখন, আর যা যা কিছু মিলেমিশে আছে এই চারণ-ইতিহাসের সঙ্গে সেসব বদলে যাওয়া দেখতে কেমন লাগে শেরিং-এর? ওর মনখারাপ মিলেমিশে যায় ছবির ভাষার। মৃত ছাগশিশুদের দাফন করার ব্যথা ছড়িয়ে যায় ওর মুখে। সেসব ব্যথার পর্দা সরিয়ে ও আবার ঘাস খুঁজতে বেরোয়, জল খুঁজতে বেরোয়।

চেনা পৃথিবীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্য জীবন, অন্য মানুষের কাহিনি- লিখছেন অমৃতা ভট্টাচার্য

রবীন্দ্রসংগীতের বিচার-ব্যবস্থা : কিছু কথা

Rabindrasangeet judgement and controversy

১৯৫২-৫৩ সাল। গান রেকর্ডিংয়ের জন্য কণিকা এসেছেন কলকাতায়। স্টুডিয়োর রিহার্সাল ঘরে দেখা সলিল চৌধুরীর সঙ্গে। সলিলের গান অনেকদিন থেকেই কণিকার খুব পছন্দের। মুখোমুখি আলাপ হল সেই প্রথম। কথায় কথায় কণিকা বলে ফেললেন, সলিলের গান গাইতে তাঁর খুব ইচ্ছে করে। এ কথা শুনেই চরম উৎসাহে, দুদিনের মধ্যে দুটি গান কণিকার জন্যে তৈরি করে ফেললেন সলিল চৌধুরী। রেকর্ডিং-ও হয়ে গেল। ঘটনার খবর গেল শান্তিনিকেতনে। ব্যস, এরপরই ঝামেলার শুরু।

বিশ্বভারতী মিউজিক্যাল বোর্ড আর কিছু অজানা সত্য― লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়

প্রবাসীর নকশা: পর্ব ১৪

food habits of Indian community

মিস্টার বিশ্বনাথের অনুপ্রেরণা আমাদের মধ্যরাতের খাওয়ায় বেশ একটা ছোটখাটো বিপ্লব আনল। একটা বড় ডেকচিতে সবাই মিলে ভাত বানাতাম। একটি অন্ধ্রের ছেলে মোটামুটি ডাল বানাতে পারত। সঙ্গে থাকত দেশ থেকে পাঠানো আচার— লংকার, লেবুর, আমের। পাঁচ ছ’জন মিলে থালাভর্তি ভাত নিয়ে কমন রুমে টিভি দেখতে দেখতে জমিয়ে খেতাম।

প্রবাসী জীবনে খাওয়াদাওয়ার নানান মজার গল্প, কলম ধরেছেন সিদ্ধার্থ দে

মুস্তারী বাঈয়ের গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ

Rabindranath and Mushtari Bai

কেউই আর গাইতে চান না। এরকম অপরূপ গানের পর আর গান হয় না। মুস্তারীর তো মাটিতে মিশে যাবার মতো অবস্থা। কী বলছেন এইসব মহান শিল্পীরা! তিনি এবার ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে ফৈয়াজ খাঁ-র দুটো পা ধরে বললেন, “এ কী কথা বলছেন খাঁ সাহেব? আমার গানের জন্যে গাইবেন না আপনি?

ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীতের এক অজানা অধ্যায়, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বয়ং বিশ্বকবির নাম, লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়

অন্য জীবন, অন্য মনন (২): রোসেলা

Column on Rosella

কেবল তো আর মানুষ নয়, ভেনিজুয়েলার গাছগাছালি, সমুদ্দুর সব নিয়ে ওদের ভাইবোনেদের বেড়ে ওঠাও ভারী আশ্চর্যের। সেই গাছগাছালির গন্ধ মাখতে মাখতে ওরা বারবার ভুলে যেতে চেয়েছে ইতালির নিভু চুলিতে নরম নরম রুটি সেঁকার গন্ধ, ওরা বলেছে আমরা ভেনিজুয়েলান। গাছেদের ভালবেসেছে ওরা প্রাণ ভরে। এমন বসন্ত দিনে গাছ ভরে ভরে যখন ট্যাবাবুইয়া ফুটেছে, ওরা তখন এই আলো আর আকাশকে ভালোবেসে কৃষ্ণচূড়ার জন্য অপেক্ষা করেছে। মিশনারিদের সঙ্গে ওরা পাড়ি দিয়েছে আমাজনের গভীর অরণ্যে। গাছেদের ভালবেসে, মানুষকে ভালবেসে।

চেনা পৃথিবীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্য জীবন, অন্য মানুষের কাহিনি- লিখছেন অমৃতা ভট্টাচার্য

ক্যাম্পবস্তির বালকবেলা: পর্ব ২১

Bengal Politics Camp-bostir Balokbela 21

রাতের রাজভবনে গোপনে শপথ নেওয়ার পর থেকেই প্রফুল্ল ঘোষের হারিয়ে যাওয়া শুরু৷ হারালেন তাঁর উচ্চতা৷ নানারকম হেনস্থা সইতে হয়েছে, আশু ঘোষের কটুকাটব্য শুনেছেন, বিধানসভায় আক্রান্ত হয়েছেন, প্রকাশ্যে অপমানিত হয়েছেন শারীরিক আঘাতে৷ বাংলার রাজনীতিতে তাঁর ছবি বেশ মলিন, যা হওয়ার কথা ছিল না৷ আর, অন্ধকারের খেলোয়াড় হিসেবে, মিডলম্যান হিসেবে প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করল ভান্তু তথা আশু ঘোষের৷

মধুময় পালের কলমে পুরনো কলকাতার রাজনৈতিক কালবেলার আখ্যান,,,

ক্যাম্পবস্তির বালকবেলা: পর্ব ১৯

Refugee life Camp bostir balokbela 19

এককালে ডিহি শ্রীরামপুর অঞ্চলের একশো শতাংশ বাসিন্দাই ছিল মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের৷ হরেন মুখার্জির পিতৃদেব যখন জমি কিনে বাড়ি করেন, পূর্ব কলকাতার এই এলাকাটি ছিল অনুন্নত ও দীনদরিদ্র মানুষের বসতি৷ হিন্দুরা এখানে বসবাস শুরু করে সম্ভবত দেশভাগের কিছু আগে৷ মুসলমানদের বাড়িগুলো সম্পত্তি বিনিময়ের মাধ্যমে হিন্দু-বাড়ি হতে থাকে৷ এই কারণে এখানে গির্জা ছিল, মসজিদ ছিল, কিন্তু মন্দির ছিল না৷ টিনের ঘরের মন্দির কে কবে বানিয়েছিল তা নিশ্চিত করে বলা যায় না৷ মন্দির বানানোর পেছনে জমিদখলের বুদ্ধি থাকতে পারে৷ হতেই পারে সেই বুদ্ধিধর মানুষটি ইট-বালির কারবারি গৌরাঙ্গ রায়ের আগেকার লোক…
মধুময় পালের কলমে পুরনো কলকাতার ক্যাম্পজীবনের আখ্যান