আগের পর্ব [১] [২] [] [] [] [] [] [] [] [১০] [১১] [১২]

শ্রীলঙ্কার দক্ষিণতম প্রান্তে অবস্থিত মিরিশ্যায় পৌঁছে স্বর্ণলঙ্কার ১২তম পর্ব শেষ হয়েছিল। পরবর্তী ভ্রমণ অভিজ্ঞতা মিরিশ্যাকে ঘিরেই, যা ‘সিংহল সমুদ্রতটে’ নামে বাংলালাইভ মলাট কাহিনি হিসেবে ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ এ প্রকাশিত হয়েছিল। একই ঘটনার বিবরণের পুনরাবৃত্তি ঘটালাম না। পাঠকদের সুবিধার্থে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্যে ‘সিংহল সমুদ্রতটে’ লেখাটির লিংক দেওয়া হল।

পড়ুন: সিংহল সমুদ্রতটে

মিরিশ্যায় মধুশঙ্খার বাড়ি থেকে বেরোতে প্রায় একটা বাজল। মনের মধ্যে তখন হাজার খুশির ঢেউ আছড়ে পড়ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সবটাই তিমি আর ডলফিন দর্শনের বিপুল সার্থকতা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কচ্ছপের দেখা পাওয়া।  আসলে ঘরে ফিরে উঠোন পেরিয়ে ‘টার্টেল বে’ বিচের কাছে গিয়েছিলাম। তখনই দেখতে পেলাম নীল জলরাশির তরঙ্গ মাথায় করে বয়ে নিয়ে আসছে কচ্ছপ, চার পাঁচটা একসঙ্গে।

সমুদ্রের তটরেখা বরাবর গাড়ি ছুটছে। কখনও উন্মুক্ত বেলাভূমি, কখনও আবার বাড়িঘরের আড়ালের ফাঁকফোকর দিয়ে নীল জলরাশির উঁকিঝুঁকি। মিরিশ্যার পরেই ভেলিগামা বিচ। চমৎকার বেলাভূমি, প্যারাসেলিং হচ্ছে। মাছ ধরার ট্রলারগুলো ভেসে আছে জলে। ডেকচেয়ারে গা এলিয়ে রৌদ্রস্নানে মজেছে পর্যটকের দল। 

veligama beach
মিরিশ্যার পরেই ভেলিগামা বিচ

দক্ষিণের শেষ প্রান্তের মিরিশ্যা থেকে এখন এগিয়ে চলেছি পশ্চিম উপকূল অভিমুখে। শ্রীলংকার বিখ্যাত সৈকত নগরী গলে যখন পৌঁছলাম, তখন দুপুর দুটো বেজে গেছে। শহরে ঢোকার মুখে খুব জ্যাম। আকাশ মেঘলা, টিপটিপ করে কয়েক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। তাতে গরম কিছু কমেনি, বরং প্যাচপ্যাচে ঘাম আরও বেড়েছে। গলফোর্ট এরিয়াতে আমাদের নামিয়ে দিয়ে গাড়ি পার্কিং লটে চলে গেল।

অতীত ডাচ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে গল। সপ্তদশ শতকে ডাচদের তৈরি এই বন্দর-শহর ছিল শ্রীলংকার প্রধান বন্দর। পরবর্তীকালে, ব্রিটিশ আমলে অবশ্য কলম্বো প্রধান বন্দর শহর হিসেবে গড়ে ওঠে।

বেলা বেড়েছে। খিদেও পেয়েছে খুব। পরপর বেশ কয়েকটা রেস্তোরাঁ। একটা রেস্তোরাঁর বাইরে সি-ফুডের বোর্ড দেখে ঢুকে পড়লাম। একটা দারুণ ফুড ভেঞ্চার হল। সি-ফুড রাইস—যা কিনা বেবি অক্টোপাস, কয়েন সাইজ প্রন, স্কুইড, কাটেল্ ফিশ দিয়ে তৈরি। সঙ্গে সাইড ডিশে আছে শ্রীলংকান ক্র্যাবকারি। 

old dutch colony, galle
অতীত ডাচ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে গল

মেঘ জমেছে। সাগরের রং এখন ঘন নীল। দূরে কিছু বোট ভাসছে। সমুদ্রের এক্কেবারে ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে ডাচ হসপিটাল। এ চত্বরের সবচেয়ে বড় বিল্ডিং। অতীতের সেই হসপিটাল জুড়ে এখন জুয়েলারি শপ, রেস্তোরাঁ, কিউরিও শপ, ক্যাফেটেরিয়া গড়ে উঠেছে।

গোটা এলাকাটাই ডাচ কলোনি। পুরনো বাড়িগুলোর সংস্কারসাধন হলেও ডাচ স্থাপত্যশৈলী অক্ষুন্ন আছে। হসপিটালের কাছেই ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। তার সামনে উকিল আর মক্কেলদের ভিড়। উল্টোদিকে মেরিন মিউজিয়াম, সমুদ্রের তলার বিভিন্ন জিনিসের সংগ্রহশালা। 

পুরনো ডাচ পাড়া লেইন ব্যান স্ট্রিট ধরে হাঁটতে লাগলাম। পিচপালিশ রাস্তা। পুরোটাই কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স। দুপাশের পুরনো বাড়িগুলো এখন বুটিক, বিউটি পার্লার, ম্যাসাজ পার্লার, রেস্তোরাঁ, ক্রাফট সেন্টার, ছোট মিউজিয়াম, জুয়েলারি ও জেমসশপ, কফিশপ, হোমস্টে ইত্যাদির দখলে। ক্রাফ্ট সেন্টার এবং জুয়েলারি শপগুলোতে একইসঙ্গে ওয়ার্কশপ এবং বিক্রির কাউন্টার দুই আছে। চোখ-ধাঁধানো মূল্যবান সব রত্ন। পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। দু-একটা ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখলাম বটে, তবে কেনাকাটা এই মধ্যবিত্ত ব্যাকপ্যাকার্সের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

Layn Bann street, galle
পুরনো ডাচ পাড়া লেইন ব্যান স্ট্রিট ধরে হাঁটতে লাগলাম

এই রাস্তা থেকে বেরিয়ে এসে পড়লাম লাইটহাউজের একেবারে সামনে। পুরনো বাতিঘর। এখন আর উপরে উঠতে দেওয়া হয় না। দুর্গপ্রাচীরের উপর দিয়ে ওল্ড ফোর্টের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। বাঁদিকে প্রাচীরের গায়ে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। ডানদিকে পুরনো গল শহর।

Clock tower, Galle
দেড় কিলোমিটার পথ হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম পুরনো ফোর্টের ক্লক টাওয়ারের কাছে

দেড় কিলোমিটার পথ হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম পুরনো ফোর্টের ক্লক টাওয়ারের কাছে। ১৮৮৩ সালের ঘড়িটি এখনও নির্ভুল সময়ে দেয়। এ জায়গাটা বেশ উঁচু। এখান থেকে দেখা যাচ্ছে, আধুনিক গল শহর আর গল স্টেডিয়াম। দিনের আলো ফুরিয়ে এসেছে। মেঘজমা আকাশে সানসেট ভালো হল না। ভগ্নদশাপ্রাপ্ত কিছু পুরনো ঘর, পুরনো মূর্তির পাশ দিয়ে পার্কিংলটে এসে পৌঁছালাম।

গলে পর্যটকদের ভিড়ভাট্টা বড্ড বেশি। তাই ৭ কিলোমিটার দূরে উনাওয়াটুনা সৈকতে আমাদের রাত্রিবাস। বেলাভূমির ধার ঘেঁষে আমাদের বাসাখানাও জব্বর। চাঁদনি রাত। বেলাভূমিতে ছাতার তলায় বসে মোমবাতির মৃদু আলোয় ডিনার।

সকালে দেওয়াল জুড়ে থাকা জানালাটার পর্দা সরাতেই মনে হল, সিনেমার স্ক্রিনের পর্দা উঠে গেল। অর্ধচন্দ্রাকৃতি সোনালি বালুকাবেলায় নীল জলরাশির রোম্যান্টিক মুগ্ধতা। ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখি পর্যটকরা দলে দলে বোটে চেপে রওনা দিচ্ছে স্নরকেলিং আর স্কুবাডাইভিং-এর উদ্দেশ্যে। ইচ্ছে হল সুনীল সাগরে ডুব দিতে। কোনও অ্যাডভেঞ্চার নয়, শুধুই গা ভেজানো।

গোটা সকালটাই উনাওয়াটুনার জন্য। বেলার দেড়টা নাগাদ রওনা দিলাম বেনটোটার পথে। বাইপাস ধরে গাড়ি ছুটে চলেছে। বেশ কিছুটা চলার পর বেনটোটা নদী। সাহান একটা পাঞ্জাবি ধাবার সামনে এসে থামল, “বেনটোটা প্রায় পৌঁছেই গেছি। এখানে ইন্ডিয়ান ফুড পাওয়া যায়, খেয়ে নিন।” 

বিকেল চারটে নাগাদ রাত্রিবাসের জন্য নির্ধারিত হোমস্টেতে এসে পৌঁছালাম। বাড়িটার অবস্থানগত সৌন্দর্য তারিফযোগ্য। মুখোমুখি শান্ত বেলাভূমি আর পিছন দিকে রাস্তার ওধারে রেললাইন। কেয়ারটেকার আঁকশি দিয়ে ডাব পেড়ে এনেছে, ওয়েলকাম ড্রিংক। বারান্দায় এসে বসলাম। অনেকটা বড় লন, সারি দিয়ে নারকেল গাছ। তারই ফাঁক দিয়ে কয়েক হাত দূর থেকে নীল সাগরের হাতছানি। মাঝে মাঝে ট্রেন যাওয়ার শব্দ নিস্তব্ধতাকে ভেঙে দিচ্ছে। একটা সময় মেঘশূন্য আকাশে সূর্যটা লাল থালার আকার নিল। মোহময় সূর্যাস্ত দিয়ে শেষ হল দিন। 

আজ পূর্ণিমা। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে অল্প সময়ের জন্য বারান্দায় এসেছিলাম। চাঁদ তখন লম্বাভাবে স্পটলাইট ফেলেছে সমুদ্রের বুকে। সফেদ ঢেউ জ্যোৎস্না মেখে রুপোর মত চকচক করছে।

Unuwatuna beach 2
উনাওয়াটুনার সৈকত

সকালে পরিকল্পনামাফিক বেরিয়ে পড়েছি মাদুগঙ্গা বোট সাফারির উদ্দেশ্যে। ন’কিলোমিটার দূরে বালপিটিয়া পৌঁছে বাঁদিকে এক কিলোমিটার সরু রাস্তাটা শেষ হয়েছে জেটিঘাটের কাছে। বোটভাড়া নিয়ে কিছুক্ষণ দরদামের পর বেলা ১১টা নাগাদ জলে ভেসে পড়লাম। 

খাঁড়ি পথের মধ্যে দিয়ে ভুট ভুট শব্দে বোট চলেছে। দুপাশে ঘন ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ঠাসবুনট। শ্বাসমূল আর ঠেসমূল দেখতে দেখতে সুন্দরবনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছিলাম। মাঝে মাঝে নদীর দুপাড়ে ছোট ছোট গ্রাম। সেখানে পর্যটকদের জন্য নদীর ধার ঘেঁষে রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাও আছে। দুদিকের সংযোগ স্থাপনের জন্য ছোট ছোট সেতু। এইরকমই দু তিনটে সেতুর তলা দিয়ে যাওয়ার সময় মাথা হেঁট করতে হয়, এতটাই নীচু। কখনও কখনও ম্যানগ্রোভ অরণ্যের প্রাকৃতিক আর্চ তৈরি হয়েছে। বোট চালকের কথায়, মাঝেমধ্যেই নাকি কুমির ডাঙায় রোদ পোহায়। তবে গোটা জলযাত্রায় কুমিরের সঙ্গে আমাদের মোলাকাত হয়নি। 

জেলেরা ডিঙি নৌকা নিয়ে ভেসে আছে। বড় জাল দিয়ে মাছ ধরা চলছে কোথাও কোথাও। ভাসমান বিক্রেতারা নৌকা বোঝাই করে ডাব আর কোল্ড ড্রিংক নিয়ে ভেসে আছে। পর্যটকদের বোট দেখলেই তাদের কাছাকাছি চলে আসছে। ভাসমান বেচাকেনা চলছে।

খাঁড়ি পথ ধরে চলতে চলতে একটা সময় নদী অনেকটা চওড়া। বোটচালক বললেন, ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৬৪টা দ্বীপ আছে। কোনও কোনও দ্বীপে গ্রামও আছে। এমনই এক দ্বীপে তরী ভিড়ল। গাছপালায় ঘেরা একটা বড় বুদ্ধমন্দির। মন্দিরের বাইরেও বুদ্ধদেব ও ভিক্ষুদের মূর্তি। 

Maduganga river
কখনও কখনও ম্যানগ্রোভ অরণ্যের প্রাকৃতিক আর্চ তৈরি হয়েছে

এরপর আরেকটা দ্বীপের জেটি ঘাটে এসে থামলাম। এখানে নদীর জলের অল্প কিছুটা অংশ নেট দিয়ে ঘেরা। সেখানে অজস্র লাল আর কমলা রঙের ছোট ছোট মাছ রাখা আছে। ফিশ থেরাপির ব্যবস্থা। আমাদের বলা হল, এই ফিশ থেরাপিতে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে, মাইগ্রেন জাতীয় রোগের উপশম হয়।  

‘ব্যাপারটা দেখতে হচ্ছে তো!’ এই ভেবে জলে পা ডুবিয়ে দিলাম। অমনি ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ এসে গোড়ালিটা ঠোকরাতে শুরু করল। পায়ে সুড়সুড়ি লাগছে। এই মজাদার ব্যাপারটা আধঘণ্টা ধরে চলল। আরও অনেক পর্যটক ফিশ থেরাপির মজা নিচ্ছে। গোড়ালির শুকনো চামড়াগুলো মাছ কামড়ে কামড়ে খেয়ে নেওয়ার ফলে গোড়ালিটা বেশ নরম হয়ে গেছে।

ভালো জাতের দারচিনির বিপুল উৎপাদন ও রফতানির কারণে শ্রীলংকার নাম দারচিনি দ্বীপ। এখন মাদুগঙ্গা নদীর যে দ্বীপে এসেছি, সেখানে প্রচুর দারচিনি গাছ। আমাদের একটা ঘরে নিয়ে যাওয়া হল। কমপ্লিমেন্টারি দারচিনি চা খাওয়ার পর একটি ছেলে দারচিনি ডাল কেটে কীভাবে ছাল বের করা হয়, সে পদ্ধতি দেখাল। দারচিনির ছাল, গুঁড়ো আর তেল কিনে বোটে উঠে ফিরে চললাম। 

maduganga nodite fish therapy
এই ফিশ থেরাপিতে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে, মাইগ্রেন জাতীয় রোগের উপশম হয়।

আড়াই ঘণ্টা জলযাত্রা শেষে ফিরে এলাম একেবারে প্রথম জেটিতে। কমপ্লিমেন্টারি মিষ্টি ফলের রস দেওয়া হল, যার স্থানীয় নাম খিরেলা। বেনটোটা ফিরে লাগেজ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়লাম শ্রীলংকা সফরের শেষ গন্তব্য কলম্বোর উদ্দেশে। মাঝে শুধু একবার মধ্যাহ্নভোজনের বিরতি ছিল। সে এক অভিনব লাঞ্চ। শোকেসে সাজানো আছে হরেক মাছ। পারা, রেড স্ন্যাপার, কোরাই, টাইগার প্রভৃতি। মাছ দেখে পছন্দ করে অর্ডার দাও, আধঘণ্টা পর পাতে পড়বে সেই মাছের পদ। তবে গোটা মাছটা কিনতে হবে, আধাআধির কোনও ব্যাপার নেই। লাল রঙে আকৃষ্ট হয়ে রেড স্ন্যাপার অর্ডার করেছিলাম, বড়ই সুস্বাদু।

ফিশ থেরাপির জেরে চোখ টেনে রাখা যাচ্ছিল না। সারাটা রাস্তা গাড়িতে ঘুমিয়েই কাটল। সারাদিন ধরে টুকরো টুকরো কালো মেঘ জমাট বাঁধছিল। বিকেলের দিকে জোরে বৃষ্টি শুরু হল। কলম্বো যখন পৌঁছালাম তখন পৌনে সাতটা বাজে। বৃষ্টি থেমেছে। একটা অ্যাপার্টমেন্টের তিনতলায় আজকের রাত্রিবাস। বারান্দা থেকে সমুদ্রের এক টুকরো ছবি নজরে আসে। সফরের শেষ রজনী। রাত পোহালেই এদেশকে বিদায় জানানোর পালা। বুকের ভেতরটা কেমন যেন মোচড় দিচ্ছে।

Fish on restaurant showcase
মাছ দেখে পছন্দ করে অর্ডার দাও, আধঘণ্টা পর পাতে পড়বে সেই মাছের পদ

সকাল ঠিক আটটা নাগাদ কাছাকাছি কোন সরকারী অফিসে জাতীয় সংগীতের সুর বাজছিল। মনে পড়ে গেল সিগিরিয়ার কথা। এ দেশের তো এটাই নিয়ম। এরকম আরও অনেক কথা মনে আসছিল। এবারের শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে রাজধানী শহর কলম্বো অদেখাই রইল। বড় বড় শপিং মল, আকাশছোঁয়া বহুতল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, অফিস সব মিলিয়ে ঝাঁ চকচকে শহর। পরেরবারের জন্যে তোলা রইল। 

এয়ারপোর্টের দিকে চলেছি। সাহান গাড়িটা ‘গল ফেস গ্রিন’ সৈকতের পাশ দিয়ে নিয়ে চলল। এরপর গাড়ি থেকেই একে একে দেখিয়ে দিল পার্লামেন্ট ভবন, চিনের তৈরি লোটাস টাওয়ার (নির্মাণ কাজ তখনও শেষ হয়নি, এই টাওয়ার থেকে গোটা কলম্বো শহরকে দেখা যাবে), ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কোয়ার, গঙ্গারামায়া টেম্পল, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ইত্যাদি। 

উড়ান ঠিক সময়েই ছেড়েছিল। গাঢ় নীল জলে ভেসে থাকা এক টুকরো সবুজ শ্যাওলার মতো দ্বীপটা ধীরে ধীরে চোখের আড়ালে চলে গেল। রয়ে গেল স্বর্ণ-লঙ্কার স্বর্ণ স্মৃতিগুলো।

ছবি সৌজন্য: লেখক
Shreyoshi Lahiri

দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ সংক্রান্ত লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। ভ্রমণ, আনন্দবাজার ই-পেপার, ভ্রমী পত্রিকার নিয়মিত লেখক। এছাড়া যারা-যাযাবর, তথ্যকেন্দ্র, লেটস্‌-গো, আজকাল, প্রতিদিন, গণশক্তি প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায় ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত। ট্র্যাভেল রাইটার্স ফোরাম ইন্ডিয়ার সদস্য। প্রধান শখ ও নেশা বেড়ানো আর ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *