তলতলে কাদামাটিতে ঘোড়ার খুড়ের শব্দ উথছিল খপখপ। ঘোড়ার পিঠে দারোগা খোদাবক্স খান। এই ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঢুঁড়ে ফেলেছেন গোটা জেলা। কিন্তু মানতেই হবে এ রকম একটা পাণ্ডববর্জিত জায়গা চাক্ষুষ করার অভিজ্ঞতা এর আগে হয়নি কখনও। মানুষ নামে কোনও জীবের অস্তিত্ব যে এই খোদাতালার দুনিয়ায় আছে, সেটা বেমালুম ভুলে যেতে হবে এখানে এলে।
নদে-মুর্শিদাবাদের সীমান্তে জায়গাটা। নামগোত্রহীন, জনমানবশূন্য। একপাশে ভাগীরথী আর নদী বেয়ে ঢুকে পড়া অসংখ্য শুঁড়িখাল। চওড়ায় মেরে কেটে বড় জোর এক একটা নালার মত। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় একলাফে পেরিয়ে যাওয়া যাবে বুঝি। আর সেটা করতে গেলেই ঘটে যেতে পাড়ে মারাত্মক বিপদ। প্রত্যেকটা নালা চোরাপাঁকে ভর্তি। একবার পা ফস্কালে মানুষ তো কোন ছার, হাতি পর্যন্ত তলিয়ে যাবে ওই দলদলে। মুখ তুলে আকাশের দিকে তাকালেন খোদাবক্স। ঘন কালো মেঘে ঢেকে আছে আকাশ। বৃষ্টিটা বন্ধ হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। কাদামাখা পথ আর শুঁড়িনালাগুলোর মধ্যে কোনও ফারাক করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় একমাত্র ভরসা লাটনা। উপরগস্তিদের দলের একটা ছেলে। হাতে একটা মশাল। সরু সরু হড়হড়ে শুঁড়িপথ ধরে পাঁকাল মাছের মত এগিয়ে চলেছে সামনে। ঘোড়ার লাগাম এদিক ওদিক ঘুরিয়ে আঁকাবাঁকা কাদা রাস্তা ধরে মশালের আলোটাকে অনুসরন করছেন খোদাবক্স। চোরা ভয়ের ছাপ দারোগাসাহেবের চোখেমুখে।
আচ্ছা, একবার একচুলের জন্যও যদি রাস্তা একটু এদিকওদিক হয়ে যায় ছেলেটার! সিধা ওই দলদলে। জিন্দা গোর হয়ে যাবে সঙ্গে সঙ্গে। ভাবতেই বিনবিন করে ঘামের ফোঁটা দেখা দিল খোদাবক্সের কপালে। বিশুর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে এই জায়গাটাকেই ওদের গা ঢাকা দেয়ার আস্তানা হিসেবে বেছে নিয়েছে উপরগস্তিরা। চার দিকে মারাত্মক চোরাপাঁক ভরতি নালার মাঝাখানে সরু সরু কাঁচা রাস্তা। এই রাস্তাগুলো চেনে একমাত্র উপরগস্তিরা। ওদের সাহায্য ছাড়া এই ভুলভুলাইয়ায় ঢুকলে মৃত্যু অনিবার্য। ‘ভ্রুঁ উ উ ম’ — দূরে কোথাও ভুতুম পেঁচা ডেকে উঠল। পরমুহূর্তেই সড়সড় করে কী একটা যেন সরে গেল রাস্তার ওপর থেকে। একটা বিশাল ফাঁকা মাঠের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল লাটনা। ঘাড় ঘুরিয়ে সতর্ক চোখে দেখে নিল পেছনে। তারপর ফের এগিয়ে চলল।
চুনসুরকির প্রলেপ খসে নোনাধরা ইটের দাঁত বেড়িয়ে পড়া কুঠুরি। দেয়ালের গায়ে চারদিকে চারটে চৌকোনা খুপরিতে রেড়ির তেলের সেজবাতি রাখা। কাঁপা কাঁপা আলো-আঁধারিতে কেমন একটা ভূতুড়ে পরিবেশ কুঠুরি জুড়ে। তেলের ধোঁয়ায় ভারী হয়ে রয়েছে গোটা ঘরটা। মেঝেতে বিছনো একটা বড় শীতলপাটি। পাটির ওপর গোল হয়ে বসা হিরা, মোতি, পাঁচকড়ি সর্দার আর খোদাবক্স খান।
এতক্ষণে মেঘ সরে গিয়ে একফালি চাঁদ উঠেছে আকাশে। চাঁদের আলোয় একটু দূরে একটা উঁচু ঢিপিমতো। আসলে একটা কেল্লার ধ্বংসস্তূপ। তৈরি হয়েছিল সেই বারোভূঁইয়ার আমলে। এরই কয়েকটা ভাঙাচোরা কুঠুরিকে সাফসুতরো করে কোনওরকমে আস্তানা গেড়ে রয়েছে উপরগস্তিরা। দেখতে দেখতে ঢিপির সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল দারোগাসাহেবের ঘোড়া। ঢিপির ওপর দাঁড়ানো হিরা আর মোতি। দুই ভাই। উপরগস্তিদের সর্দার। পাশে পাঁচকড়ি সর্দার আর মেগাই।
— সেলাম। নেমে আসুন দারোগাসাহেব।
সামনে এগিয়ে এলো হিরা। রেকাবে পা দিয়ে ঘোড়া থেকে নেমে এলেন খোদাবক্স। সামনে একটা বড় গাছের গায়ে ঘোড়াটাকে বেঁধে দিলো লাটনা।
— চাঁদ বেটা অনেকটা রাস্তা এসছিস। বহোত মেহনত গেছে। আব থোড়া সা আরাম কর। হাওয়া বাতাস খা। আমি একটু ঘুরে আসছি।
প্রিয় বাহনের গলায় আদর করে একবার হাত বুলিয়ে দিলেন খোদাবক্স। তারপর ঢিবির এবড়োখেবড়ো চড়াই ভেঙে এগিয়ে চললেন তিনজনের পিছু পিছু।
চুনসুরকির প্রলেপ খসে নোনাধরা ইটের দাঁত বেড়িয়ে পড়া কুঠুরি। দেয়ালের গায়ে চারদিকে চারটে চৌকোনা খুপরিতে রেড়ির তেলের সেজবাতি রাখা। কাঁপা কাঁপা আলো-আঁধারিতে কেমন একটা ভূতুড়ে পরিবেশ কুঠুরি জুড়ে। তেলের ধোঁয়ায় ভারী হয়ে রয়েছে গোটা ঘরটা। মেঝেতে বিছনো একটা বড় শীতলপাটি। পাটির ওপর গোল হয়ে বসা হিরা, মোতি, পাঁচকড়ি সর্দার আর খোদাবক্স খান। দেয়ালের চারদিক ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা ওপরগস্তি আর পাঁচু সর্দারের দলের দু’চার জন। চুপচাপ সবাই। থমথমে গম্ভীর চোখমুখের চেহারা।
— তা দারোগাসাহেব, কী মনে করে এতদিন বাদে আমাদের ডেরায়? প্রথম নীরবতা ভাঙল পাঁচকড়ি সর্দার। বিষণ্ণতার সঙ্গে অনেকটা চোরা শ্লেষ আর বিদ্রূপ মিশে রয়েছে গলায়। উত্তরে মুচকি হেসে পাঁচকড়ির দিকে তাকালেন খোদাবক্স।
— এই দেখতে এলাম তোমরা সব কেমন আছোটাছো আর কি?
শোনামাত্র হো হো করে হেসে উঠলো পাঁচকড়ি। গলায় শ্লেষটাও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
— সে তো নিজে চোখেই দেখতে পাচ্ছেন। চারদিকে সাপখোপ, জলার কুমির, চোরাপাঁকের দহ, রোগভোগ, ওলাউঠো, আমাশা, কালাজ্বর, পালাজ্বর…তার মাঝখানে আমাদের এই হাওয়ামহল। সব মিলিয়ে দিব্যি আছি আমরা।
পাঁচুর কথা শেষ হওয়ার আগেই ঝাঁঝিয়ে উঠলো হিরা।
— একযুগের ওপর হতে চলল এই জাহান্নামে আমরা পচে মরছি দারোগাসাহেব। কুমিরের পেটে যাচ্ছি, আমাশা, ন্যাবা, পালাজ্বরে, সাপের বিষে মরছি। আর এতদিন বাদে আপনি এসে জানতে চাইছেন আমরা কেমন আছি!
ফের মুখ খুললো পাঁচকড়ি।
— চিরটাকাল কোম্পানি, নীলকর সাহেব আর জমিদারবাবুদের নিমকহালালি করলাম আমরা। বেইমানি করিনি একদিনের জন্যেও। অথচ যখন বিপদে পড়লাম, কেউ পাশে এসে দাঁড়াল না। আমার সর্বস্ব লুটে নিয়ে আমাকে ভিটে ছাড়া করলো ওই রাঁড়ের ব্যাটা বিশে বাগদি…ইজ্জত, মানসম্মান সব গেল। কুড়িয়েবাড়িয়ে কষ্টেসৃষ্টে দুই মেয়ের বিয়ে দিল গিন্নি। কন্যাবিদেয় করতে পর্যন্ত যেতে পারলাম না। তার বদলে চোরের মতো লুকিয়ে রয়েছি এখানে। নেহাত উপরগস্তিরা আশ্রয় দিয়েছে বিপদের দিনে। নয়তো মরেহেজে যেতাম কবেই…
পাঁচকড়ির কথা শেষ হতে না হতেই ভারি একটা হট্টগোল লেগে গেল ঘরজুড়ে। সবাই সবার রাগ, ক্ষোভের কথা বলতে চায়। উগরে দিতে চায় মনের মধ্যে এতদিন ধরে জমিয়ে রাখা জ্বালা। কিন্তু চিৎকার চেঁচামেচিতে কারও কথাই শোনা যাচ্ছে না। নীরবে বসে ধাক্কাটাকে সামলালেন খোদাবক্স। কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি একটু ঠান্ডা হলে শান্ত চোখে তাকালেন সর্দারদের দিকে।
— এবার আমি একটু বলি? আমি জানি এরকম একটা জাহান্নামে ভাঙাচোরা খণ্ডহরে কত কষ্টের মধ্যে রয়েছ তোমরা। বলে দেওয়ার দরকার নেই। একনজর দেখলেই যে কেউ বুঝতে পারবে সেটা। তবে একটা কথা ভেবে আমার আশ্চর্য লাগে। উপরগস্তি আর মানসুরে ডাকাত, হুগলীর কালো রায়, দমন রায়, গোবিন্দপুরে মনোহর সরদার…বাংলা কাঁপানো নাম সব। বিশের মত একটা কচি বাচ্চা আর ওর ছেলেছোকরাদের সামনে ঘুটনা টেকে বসে পড়ল একেবারে? মানছি কোম্পানি বাহাদুর, নীলকর সাহেব আর জমিদারবাবুরা এসে দাঁড়ায়নি তোমাদের পাশে। কিন্তু তোমরা নিজেরা? এত বড় বড় দল, এত হাতিয়ার, এত দাপট আর ক্ষমতা…সব ফেলে ছেড়ে পালালে একরত্তি ওই একটা দুধের বাচ্চার সামনে!
একটু থামলেন খোদাবক্স। তারপর ফের শুরু করলেন।
— তবুও একটা মন্দের ভালো যে বাকিরা ওর বশ মেনে নিলেও তোমরা দু’দল সেটা করনি। পালিয়েছ নিজের জায়গা ছেড়ে। তকলিফ উঠিয়েছ বহোত। তবু বিশের তাঁবে আসনি কখনও। ভরসার কথা এই একটাই। আর এখানেই তোমাদের একটা সওয়াল করছি আমি। এই জাহান্নাম আর টুটাফুটা খণ্ডহর ছেড়ে তোমরা বেরতে চাও কিনা?
তবে একটা কথা ভেবে আমার আশ্চর্য লাগে। উপরগস্তি আর মানসুরে ডাকাত, হুগলীর কালো রায়, দমন রায়, গোবিন্দপুরে মনোহর সরদার…বাংলা কাঁপানো নাম সব। বিশের মত একটা কচি বাচ্চা আর ওর ছেলেছোকরাদের সামনে ঘুটনা টেকে বসে পড়ল একেবারে? মানছি কোম্পানি বাহাদুর, নীলকর সাহেব আর জমিদারবাবুরা এসে দাঁড়ায়নি তোমাদের পাশে। কিন্তু তোমরা নিজেরা? এত বড় বড় দল, এত হাতিয়ার, এত দাপট আর ক্ষমতা…সব ফেলে ছেড়ে পালালে একরত্তি ওই একটা দুধের বাচ্চার সামনে!
শোনামাত্র বিলকুল থম মেরে গেল ঘরের আবহাওয়া। নিশ্চুপ সবাই। ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা কেউই।
— কী বলতে চাইছেন হুজুর আপনি? বেশ কিছুক্ষণ বাদে ঘরের কোণ থেকে প্রশ্ন করলো মেগাই।
— বাত বহোত সিধা হ্য়ায়।
ঘাড় ঘুরিয়ে মেগাইয়ের দিকে তাকালেন খোদাবক্স।
— এবার এই ঘোসলা ছেড়ে বেরতে হবে তোমাদের। বিশু তোমাদের মারার আগেই ওকে পাল্টে মারতে হবে তোমাদের। ওর গুহা থেকে টেনে বের করতে হবে বিশেকে। আর তোমরা মানে উপরগস্তিরা, যেহেতু তোমরা কোনও একটা বাঁধাধরা এলাকায় কাজ করতে না, তাই গোটা বাংলা তোমাদের হাতের তালুর মতো চেনা। কী, ঠিক বলছি তো?
স্থির চোখে হিরা মোতির দিকে তাকালেন খোদাবক্স। নীরবে ঘাড় নাড়ল দুই ভাই।
— তাই বিশুকে ঢুঁড়ে বের করার কাজটা প্রায় পুরোটাই করতে হবে তোমাদের দলকে। আমি জানি বিশের সঙ্গে লড়াইয়ে অনেক লোকসান হয়েছে তোমাদের। দলের বহু লোক মারা পড়েছে। তবে চিন্তা কোরও না। কোলকাতায় বড়লাটের সঙ্গে কথা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের। বাড়তি এক কোম্পানি ফৌজ আসছে। দরকার হলেই তোমাদের পাশে দাঁড়াবে তারা। এছাড়া আশপাশের সব জমিদারবাবুদের এত্তেলা করে দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট সায়েব। সবাই তাদের পাইকদের মধ্যে থেকে বাছা বাছা পাঁচ ছ’জন করে লেঠেল দেবে তোমাদের সঙ্গে। নিজে দু’গণ্ডা পাইক পাঠাবেন, কথা দিয়েছেন স্বয়ং কেষ্টনগরের মহারাজবাহাদুর। শুধুমাত্র তোমাদের হুকুম মেনে চলবে তারা। আর এইসব কাজে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে সাহায্য করার জন্য আর এক জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট, নাম শুনছি মিঃ ব্লাকুয়ার, উনিও আসছেন কলকাতা থেকে। আর একটা কথা। এত বড় দল বিশের। মুর্শিদাবাদ থেকে নদে হয়ে সেই কলকেতা… অনেকগুলো সর্দার ওর অধীনে। ওর নিজের দলেও অনেক লোক। খুব গোপনে আমি খবর পাচ্ছি তাদের মধ্যে কেউ কেউ নাকি এই কষ্ট করে লুঠ করা টাকায় বিশের দান খয়রাতির ব্যাপারটা পছন্দ করছে না।
পাঁচকড়ি সর্দারের দিকে তাকালেন দারোগাসাহেব।
— তোমার দলের কাজ হবে সেই সব লোকেদের খুঁজে বের করা। যেহেতু তোমার সঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছে বিশে, তাই ওর দলের প্রায় প্রত্যেককে চেনো তুমি। দরকারে চারদিকে মাছি (খবরদাতা/গুপ্তচর) লাগাও। টাকাপয়সা নিয়ে ভেবো না একদম। দরকার হলেই যোগাযোগ করবে আমার সঙ্গে। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব পুরো আজাদি দিয়েছেন এ ব্যাপারে। শর্ত শুধু একটাই। আগামী একবছরের মধ্যে বিশে নামের উৎপাতটা খতম হয়ে যাওয়া চাই বাংলার বুক থেকে।
দাঁতে দাঁত পিষলেন খোদাবক্স।
— একটা…শুধু একটা মিরজাফর খুঁজে বের করতে হবে ওর দলের মধ্যে থেকে। যে ওর প্রত্যেকটা আস্তানা চেনে। দলে কত লোকলস্কর, কত হাতিয়ার…বিশের পুরো শক্তির খবর রাখে। ব্যাস! তাহলেই খেল খতম। এবার তোমরা আমায় বল আমার এই প্রস্তাবে তোমরা রাজি কিনা? রাজি থাকলে হাত মেলাও।
বলতে বলতে ডানহাতটা মাদুরের ওপর রাখলেন খোদাবক্স। এক মুহূর্তের নীরবতা। স্থির চোখে একে অন্যের দিকে তাকালেন তিন সর্দার। তারপর সবার ডানহাত নামিয়ে রাখলো দারোগাসাহেবের হাতের ওপরে।
“মঞ্জুর!”
পরের পর্ব – শোণিতমন্ত্র (পর্ব ১২)
আগের পর্ব – শোণিতমন্ত্র (পর্ব ১০)
জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তর কলকাতার পুরোনো পাড়ায়। বহু অকাজের কাজী কিন্তু কলম ধরতে পারেন এটা নিজেরই জানা ছিল না বহুদিন। ফলে লেখালেখি শুরু করার আগেই ছাপ্পান্নটি বসন্ত পেরিয়ে গেছে। ১৪২১ সালে জীবনে প্রথম লেখা উপন্যাস 'দ্রোহজ' প্রকাশিত হয় শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায় এবং পাঠকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে। পরবর্তীতে আরও দুটি উপন্যাস 'জলভৈরব' (১৪২২) এবং 'বৃশ্চিককাল' (১৪২৩) প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে পুজোসংখ্যা আনন্দবাজার এবং পত্রিকায়। এছাড়া বেশ কিছু প্রবন্ধ এবং দু চারটি ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা আর লিটিল ম্যাগাজিনে। তার আংশিক একটি সংকলন বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে 'ব্যবসা যখন নারীপাচার' শিরোনামে। ২০১৭ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার।
ভাষা টা যার মুখে যেটা সেটাই এসেছে , অসাধারণ ! একেবারে ঐতিহাসিক , শুধু মুখের জবানী টা নয়, ওটা ঐতিহাসিক হলে সেটা কারো মনে দাগ কাটতো না। দুগ্গি , দালালি, নেমক হারামি এগুলো কে কাটিয়েই যে লড়াই গুলো করতে হয় সেটা ক্রমশ প্রকাশ্য হচ্ছে , একটা আপ্তবাক্য তুমি লেখক জীবন দিয়ে বুঝিয়েছো সেটা হলো “শত্রুকে বাঁচিয়ে রাখার অর্থ মৃত্যু” , এটা এবার আমাদের বোঝাচ্ছ , এখানেই লেখকের মুন্সিয়ানা। মাঝে মাঝে লেখার মধ্যে এটা জানান দেওয়ার যে ঘটনা গুলো সম্পূর্ণ ঐতিহাসিক , একেবারেই কাল্পনিক গপ্পোবাজি নয়। এ সবের মধ্যে থেকেই আমাদের ছোট খাটো অবলোকন থেকেই বিরাট সূত্র গুলো শিখে নেওয়ার দায় যেমন আমাদের আছে আবার তোমারও দায় থাকলো আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর।