নোবেল!!! নোবেল পাবে মহিলারা?? মহিলারা আবার বিজ্ঞানী কবে হল?? হ্যাঁ এখন মেয়েরা পড়াশোনা করছে। তার জোরে কেউ কেউ শিক্ষক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানীও হচ্ছে বটে। কিন্তু নোবেল তো শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি। মেয়েরা এসব ব্যাপারে ছেলেদের ধারে কাছে আসতে পারে না। বহুবছর আগে এক শিক্ষক এহেন অভিমত পোষণ করেছিলেন। প্রতিবাদ করেছিলাম মুষ্টিমেয় কয়েকজন। মেয়েদের এই পিছিয়ে পড়ার জন্য তিনি আঙুল তুলেছিলেন সমাজের দিকেই। সংসারের ঘানি টানতে গিয়েই মেয়েদের এই সব প্রতিভা নাকি চাপা পড়ে যায়। শুধু ওই শিক্ষক নয় ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে বহু সহপাঠীও দেখলাম মনে করে মেয়েদের পক্ষে সাফল্যের ওই শিখরে ওঠা সম্ভব না।
কিন্তু মাদাম কুরি বা মহাকাশ স্পর্শ করা কল্পনা চাওলা?? ওঁরা তো ব্যতিক্রম, exception! এবং কে না জানে, exception proves the rule! তবুও গোঁয়ার আমি হার মানতে নারাজ। বললাম, বরেণ্য বিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান বলেছিলেন, “exception proves that the rule is wrong.” সেই কবে থেকেই তো মেয়েরা বিজ্ঞানের প্রায় সব শাখাতেই নজির গড়েছেন এবং নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। শুধু বিজ্ঞান নয়, সাহিত্য এবং বিশ্বশান্তি স্থাপনে অবদানের জন্যও নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। সেখানেও পিছিয়ে নেই মহিলারা। যদিও নোবেল শান্তি পুরস্কার বহু সময় উঠে এসেছে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। বিশ্বাস না হয় দেখুন পরিসংখ্যান কি বলছে।
সেই পরিসংখ্যানই অবশ্য একেবারে জল ঢেলে দিল আমার সব উৎসাহে এবং যুক্তিতে। ১৯০১ থেকে ২০২১ এই সুদীর্ঘ একশো কুড়ি বছরের বিভিন্ন শাখায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মাত্র ৫৯ জন মহিলা। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ৮৮৮। তবে সামাজিক বঞ্চনা, প্রতিকূলতা, বিজ্ঞানীদের অবজ্ঞা, কোনও কিছুই কিন্তু দাবিয়ে রাখতে পারেনি মহিলাদের। বিজ্ঞান সাহিত্য অর্থনীতি এবং শান্তি সবক্ষেত্রেই মহিলারা কোনও না কোনও সময় জিতে নিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের এই শিরোপা। ১৯০১ থেকে ১৯২৫– এই সময়ে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন চারজন মহিলা; ১৯২৬ থেকে ১৯৫০– এই সময়ে সংখ্যাটা ছিল আট; ১৯৫১ থেকে ১৯৭৫– এই পঁচিশ বছরের মহিলা নোবেল প্রাপকের সংখ্যা ছিল মাত্র তিন। ১৯৭৬ থেকে ২০০০– নোবেল জিতেছেন ১৫ জন মহিলা। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দুই দশকে অবশ্য বিভিন্ন ক্ষেত্র মিলিয়ে মহিলা নোবেল বিজয়ীদের সংখ্যা আগের দশকের মহিলা নোবেল প্রাপকদের সম্মিলিত সংখ্যার প্রায় সমান: ২৯ জন।
গত দু’বছর ধরে করোনা মহামারীর প্রকোপ আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে ধ্বস্ত করেছে। প্রিয়জনের বিয়োগ, সামাজিক মেলামেশার অভাব আমাদের বিষণ্ণ করেছে। এই মুহূর্তে মহামারীর তৃতীয় ঢেউয়ে ভেসে যাচ্ছে সারাবিশ্ব। বাদ নেই আমাদের দেশও। দেশের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যায় কলকাতা রয়েছে একেবারে শীর্ষে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের ত্রাতা এবং পরম সহায় চিকিৎসক এবং চিকিৎসা কর্মীরা, যাঁরা চরম ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়েও হাসিমুখে তাঁদের কর্তব্য করে চলেছেন নিরলস। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একবার দেখে নিই চিকিৎসাবিজ্ঞানে যে সমস্ত মহিলা বিজ্ঞানীরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তাঁদের অবদান। প্রথমেই বলে রাখি, এখনও অবধি এই শাখায় নোবেল পেয়েছেন মাত্র বারোজন মহিলা। প্রথম মহিলা চিকিৎসাবিজ্ঞানী এই পুরস্কারটি পাচ্ছেন ১৯৪৭ সালে এবং এখনও অবধি এই শাখায় শেষ মহিলা চিকিৎসাবিজ্ঞানীর হাতে এই পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয় ২০১৫ সালে।

প্রথম নোবেল বিজয়ী মহিলা চিকিৎসাবিজ্ঞানী গার্টি রাজনিৎজ় (কোরি)-এর জন্ম তৎকালীন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির প্রাগ শহরে। ১৯২০ সালে তিনি সহপাঠী কার্ল কোরিকে বিবাহ করেন এবং ওই বছরেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে ডক্টরেট হন। ১৯২২ সালে তাঁরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অধ্যাপনা শুরু করেন। কিন্তু মহিলা হওয়ার কারণে অন্যান্য পুরুষ এবং তার স্বামীর তুলনায় কম সম্মানজনক পদে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। ১৯৪৭ সালে তিনি বায়োকেমিস্ট্রির প্রফেসর নিযুক্ত হন এবং ওই বছরই নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হন। গার্টি তাঁর স্বামীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমাদের শরীরের শক্তি কীভাবে ব্যবহৃত হয় তার উপরে গবেষণা করেন এবং ১৯২৯ সালে শরীরের মেটাবলিজম বোঝার ক্ষেত্রে এক বিশেষ প্রক্রিয়ার কথা বর্ণনা করেন যা ‘কোরি সাইকল’ নামে পরিচিত। এই বিষয়ে তাঁরা গবেষণা চালিয়ে যান এবং গ্লুকোজ থেকে প্রাপ্ত গ্লাইকোজেন কীভাবে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয় তা বিশদে বর্ণনা করেন। প্রকাশ হয় গবেষণাপত্র। এই কাজের স্বীকৃতিতে গার্টি তাঁর স্বামী কার্ল এবং আর্জেন্টিনীয় চিকিৎসক বের্নার্দো হুসে-এর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে নোবেল পুরস্কার পান।
দ্বিতীয় মহিলা চিকিৎসাবিজ্ঞানীর নোবেল পেতে পেতে কেটে যায় আরও ৩০ বছর। ১৯৭৭ সালে রোজালিন সুসমান ইয়োলা ডক্টর সলোমন বেরিওন-এর সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান Radioimmunoassay (RIA) পদ্ধতিটি আবিষ্কারের জন্য। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন মৌলের খুব সামান্য পরিমাণ উপস্থিতিও পরিমাপ করা যায়। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রমাণ করেন শরীরে ইনসুলিনের অভাব নয় বরং শরীর ইনসুলিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারার জন্যই টাইপ ২ ডায়াবেটিস দেখা দেয়।

তবে নোবেল প্রাপ্তির পথটা মোটেও সহজ ছিল না রোজালিনের জন্য। তাঁর বাপ-মা চেয়েছিলেন তিনি স্কুল শিক্ষক হন। স্কুলে পড়াকালীন রোজালিনের আগ্রহ রসায়নে হলেও পরে পদার্থবিদ্যা নিয়েই পড়াশোনা করেন তিনি। এবং ১৯৪১ সালে যখন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সহায়ক হিসাবে যোগদান করেন, তখন ওই বিভাগে চারশো অধ্যাপক এবং শিক্ষক সহায়কের মধ্যে তিনি ছিলেন একমাত্র মহিলা। সমসাময়িক মহিলাদের নানারকম সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন। অনেকেই মনে করেছিলেন তিনি অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী। পরবর্তীকালে তাঁর নোবেলপ্রাপ্তি অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু মহিলা বিজ্ঞানীকে উদ্বুদ্ধ করে এবং তিনি হয়ে ওঠেন একজন রোল মডেল।

বারবারা ম্যাকক্লিনটক নোবেলে ভূষিত হন ১৯৮৩ সালে। আমাদের শরীর এবং মনের বহু বৈশিষ্ট্যই নির্ধারিত হয় বংশগতির দ্বারা। আরো সূক্ষ্মভাবে বললে জিনের দ্বারা— যে জিনগুলো শরীরের কোষের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত ক্রোমোজোমের মধ্যে সংরক্ষিত থাকে। বারবারা ভুট্টাদানার বংশধারাগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করে প্রমাণ করেন কীভাবে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। এদিকে, মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হলে যদি বিয়ের উপযুক্ত পাত্র না পাওয়া যায়! এই কারণে বারবারার মা ছিলেন তাঁর পড়াশোনার ঘোর বিরোধী। বাবার প্রশ্রয়েই তাঁর উচ্চশিক্ষায় আসা এবং গবেষণাকেই ধ্যান-জ্ঞান করে পরবর্তীতে বারবারা তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন।
শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক মহলেই নয়, তাঁর কাজ প্রভাবিত করেছে সাধারণ মানুষকেও। বিভিন্ন জীবনীগ্রন্থ যেমন প্রকাশিত হয়েছে তেমনি তাঁর জীবনকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে বেশ কিছু উপন্যাস এবং নাটিকাও। ২০১১ সালে প্রকাশিত জেফ্রি ইউজিনাইডস লিখিত ‘ম্যারেজ প্লট’ নামক উপন্যাস, ২০১৫ সালে শিকাগোর আর্টেমেশিয়া থিয়েটারে পঠিত ‘মেইজ়’ শীর্ষক নাটক (লেখক জুডি প্র্যাট) অথবা সদ্যপ্রকাশিত উপন্যাস ‘ইন দ্য ফিল্ড’ (লেখক রাচেল পাস্তান, প্রকাশকাল ২০২১)— প্রতিটি আখ্যানের কেন্দ্রীয় চরিত্রই বারবারার দ্বারা অনুপ্রাণিত।
পরবর্তী নোবেল প্রাপক মহিলা চিকিৎসাবিজ্ঞানী রিটা লেভি মন্তাক্লিনি পুরস্কার পাচ্ছেন ১৯৮৬ সালে তাঁর সহকর্মী স্ট্যানলি কোহেনের সঙ্গে যৌথভাবে। ১৯০৯ সালে ইতালিতে জন্ম, মৃত্যু ২০১২ সালে। তিনিই প্রথম নোবেল প্রাপক যিনি শতবর্ষজীবি। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানকে মাথায় রেখে ইতালি সরকার ২০০১ সালে তাকে আমৃত্যু সেনেটর (Senator for life) হিসেবে সম্মানিত করেন।

গার্ট্রুড বি এলিয়ন এবং তাঁর সহকর্মীদের গবেষণা আধুনিক ওষুধ প্রস্তুতির পদ্ধতিতে নিয়ে আসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বায়োকেমিস্ট্রি এবং অসুখ সংক্রান্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ওষুধ তৈরি করার নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন ইলিয়ন এবং জর্জ হিচিংস। তাঁরা প্রথম ওষুধটি তৈরি করেন লিউকোমিয়ার, যা বহু শিশুর প্রাণ বাঁচায়। এছাড়াও ম্যালেরিয়া, গেঁটে বাত এবং অন্যান্য সংক্রমণ রোধক বহু ওষুধ তৈরির কৃতিত্বও তাঁদের। ১৫ বছর বয়সে পেটের ক্যান্সারে দাদুর মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছিলেন গার্ট্রুড, যা তাঁকে ওষুধ নিয়ে গবেষণা করতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁদের উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে ইলিয়ন, হিচিংস এবং স্যর জেমস ব্ল্যাকের সঙ্গে যৌথভাবে ১৯৮৮ সালে নোবেল পান।

এরপর ১৯৯৫ সালে ভ্রূণ গঠনের সময় জিনের প্রভাব সম্পর্কে গবেষণার জন্য নোবেল পুরস্কার জিতে নেন জার্মানির ক্রিস্চিয়ান নাসেলিন ভলহার্ড। লিন্ডা বাক এই পুরস্কার পাচ্ছেন ২০০৪ সালে ঘ্রানেন্দ্রিয় সম্পর্কে গবেষণার সূত্রে। ২০০৮ সালে মেন্টর ল্যুক মন্টানিওর সঙ্গে যৌথভাবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল জিতে নেন ফ্রাঁসোয়া বারি সিনোসি। এইডস রোগের কারণ হিসেবে Human Immunodeficiency Virus (HIV) আবিষ্কার করার স্বীকৃতি হিসেবেই এই পুরস্কার পান তারা। ২০১৫ সালে গবেষণামূলক কাজকর্ম থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। ২০১৭ সাল থেকে যাপন করছেন সম্পূর্ণ অবসর।

মানুষের জিনগুলো গচ্ছিত থাকে DNA অণুতে। যখন কোষ বিভাজন হয় তখন ক্রোমোজ়োমগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। এবং তাই সব ক্রোমোজোমের মাথায় থাকে একটা করে টুপি, যাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় টেলোমেয়ার। ১৯৮৪ সালে এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন এবং ক্যারল গ্রাইডার আবিষ্কার করেন টেলোমেয়ার্স উৎসেচক। ২০০৯ সালে এই আবিষ্কার তাঁদের এনে দেয় নোবেল প্রাইজ। ২০১৪ সালে নরওয়ে নিবাসী মনোবিদ এবং স্নায়ু বিশেষজ্ঞ মে ব্রিট মোজার তাঁর তৎকালীন স্বামী এডওয়ার্ড মোজার-এর সঙ্গে জিতে নেন নোবেল। আমরা কখন কোথায় আছি এবং কীভাবে অন্য জায়গায় যাওয়া যায় তা নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের মস্তিষ্কে অবস্থিত এক বিশেষ ধরনের কোষ। সেই কোষের হদিশ দিয়েই নোবেল জয় এই দম্পতির। ২০১৫ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পান চিনের তো ইউইউ। শুধু চিন নয়, সমগ্র এশিয়ায় তিনিই প্রথম মহিলা যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পান।
এরপর কেটে গেছে সুদীর্ঘ ছ’বছর। আর কোনও মহিলা চিকিৎসাবিজ্ঞানী নোবেল সম্মানে এখনও ভূষিত হননি। কোভিড-১৯ এবং তার প্রতিষেধক সংক্রান্ত গবেষণায় উঠে এসেছে অজ়লেম তুরেচি, ক্যাটালিন কারিকো এবং অন্যান্য মহিলা বিজ্ঞানীদের নাম। আগামী বছরের নোবেল হয়তো কুর্নিশ জানাবে এমনই যোদ্ধাদের, যাঁরা ভাইরাসের সঙ্গে এই অসম যুদ্ধে লড়েছেন অকুতোভয়ে।
*ছবি সৌজন্য: Wikipedia, The Nobel Prize, Science History Institute
পেশায় সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক। কর্মক্ষেত্র হলদিয়া কলেজ। এককালে সাংবাদিকতা করেছেন চুটিয়ে। এখন অবসর কাটে গান শুনে, বই পড়ে আর চার বছরের ছেলের সঙ্গে নানাবিধ গভীর পরামর্শ করে। নেশা ছিল ভ্রমণের। বর্তমানে অতিমারীর প্রকোপে গৃহবন্দি জীবন। পুরনো অ্যলবামের পাতা উল্টে স্মৃতি রোমন্থন। বাড়িতে টিভি নেই। তবে ওয়েব সিরিজের পোকা।