‘শাত্-ইল-আরব’-এর কবির প্রতিভায় আবিষ্ট ছিলেন ছন্দের জাদুকর

বিবেকানন্দ রোডের মোড়ের কাছেই ৩৮ নম্বর কর্নওয়ালিশ স্ট্রিটে (অধুনা বিধান সরণি) থাকতেন গজেন্দ্রকুমার ঘোষ। কবি-সাহিত্যিক মহলে তিনি পরিচিত ছিলেন গজেন, গজেনদা, বা গজেনবাবু হিসাবে। সেই বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় আড্ডা বসত কবি-সাহিত্যিকদের। কে আসতেন না সেই আড্ডায়— প্রেমাঙ্কুর আতর্থী, করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়, হেমেন্দ্রকুমার রায়, নরেন্দ্র দেব, মোহিতলাল মজুমদার প্রমুখ! সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত কিন্তু কবি-সাহিত্যিকদের অন্য আড্ডায় খুব একটা যেতেন না। এই গজেনদার বাড়িতেই এক সন্ধ্যায় সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে আলাপ হল নজরুলের এবং আলাপটা হয়েছিল সত্যেন্দ্রনাথের আগ্রহেই।
লিখলেন শম্ভুপ্রসাদ সেন।
রামমোহন রায় ও যুক্তি রাজ্যের রাজনীতি

যুক্তি-রাজনীতিতে পারদর্শী রামমোহন জানতেন যে ধর্মীয় অনুষঙ্গে যুক্তি না সাজালে ধর্মের নামে অত্যাচারী কুচক্রকে বাগে আনা যাবে না। নিজের পড়াশোনার অভ্যেস ও ভারতের ধর্মীয় ইতিহাসকে হাতিয়ার করে তুলে ধরলেন মনু-তত্ত্বের যুক্তি।
সমরেশ মজুমদার ও বাংলা টেলিভিশন

একটু আসি ‘কালবেলা’র শেষটায়। “এখন অনিমেষের দু’হাতে একতাল নরম কাদা, যা নিয়ে ইচ্ছে মতন মূর্তি গড়া যায়।” সেই নরম কাদা, অনিমেষ-মাধবীলতার সন্তান অর্ক যখন বছর পনেরো, তখন শুরু ‘কালপুরুষ’। সেখানে তিন নম্বর ঈশ্বরপুকুর লেনের বস্তির বাসিন্দা অর্ক ঘুমচোখে তার বাবাকে বলছে, “ফোট তো, ন্যাকড়াবাজি করো না।” আবার অর্কই একদিন বস্তির পরিত্রাতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। সেই উত্তরণের গল্পই পরিচালক রাজা দাশগুপ্ত ধারাবাহিক হিসাবে তুলে ধরেছিলেন দূরদর্শনের পর্দায়— ন’য়ের দশকের গোড়ায়, সপ্তাহে একদিন করে।
লিখলেন অভিজিৎ সেন…
এক বাঙালি গুপ্তচরের গল্প

শরৎচন্দ্র দাশকে প্রস্তাব দেওয়া হয় সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে তিব্বতে যাত্রা করার। অচেনা দুর্গম পথ চেনানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় সহ-প্রধানশিক্ষক গ্যাটসোকে, কারণ অতীতে তিব্বত যাত্রার অভিজ্ঞতা ছিল এই বৌদ্ধ ভিক্ষুর। আইনি কাগজপত্র সইসাবুদ করে দিতে হয় শরৎচন্দ্রকে, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হবে না এই মর্মে। তাঁর মাসিক আয় ধার্য হয় ৩০০ টাকা। শুধু তাই নয়, তাঁর স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্বনামা পর্যন্ত সইসাবুদ করা থাকে। এমন গোপনীয়, এমন গুরুত্বপূর্ণ, এমন ঐতিহাসিক ছিল শরৎচন্দ্রের এই তিব্বতযাত্রা।
এক বাঙালি গুপ্তচরের জীবনকাহিনি, লিখলেন ইশা দাশগুপ্ত…
রবীন্দ্রকাব্যে জন্মদিন এবং পঁচিশে বৈশাখ

বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, রবীন্দ্রনাথ তাঁর সত্তর বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর কবিতায় মাত্র কয়েকবার জন্মদিনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন, সেই তিনিই পরবর্তী দশ বৎসরের জীবৎকালে অসংখ্যবার এই প্রসঙ্গে ফিরে ফিরে গেছেন। তাহলে কি সাধারণ মানুষের মতোই রবীন্দ্রনাথও যত জীবন-সমাপনের দিকে এগিয়েছেন, ‘শেষ পারানির কড়ি’ হিসাবে জন্মদিনকেই ‘স্মরণবীণ’ করে তুলতে চেয়েছেন?
লিখলেন দিলীপ কুমার ঘোষ…
উত্তমকুমার বাদ পড়লেন, মহাপ্রভু চৈতন্য হলেন বসন্ত চৌধুরী

বাংলা ছবিতে, ছবি বিশ্বাসের পর, ক্লাস কী জিনিস বুঝিয়ে দিলেন বসন্ত চৌধুরী। তিনি যেন ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছিলেন রাজা রামমোহন রায় রূপে। এমন অবিকল ‘রামমোহন’ আর কেউ হতে পারেননি, হতে পারবেনও না। বসন্ত চৌধুরী যেন রামমোহন রায়ের আরেক নাম। ঐ দৃঢ়চেতা ব্রাহ্ম ব্যক্তিত্ব, সুপুরুষ চেহারা, সঙ্গে আভিজাত্যের মিশেল— এমনটা বসন্ত চৌধুরীই আনতে পেরেছিলেন। আসলে বসন্ত চৌধুরী যতখানি বাঙালি, ততখানি সাহেবও। তাই সবটাই তাঁর হাতের মুঠোয় থাকত। জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চেও ‘রাজা রামমোহন’ সেরা বাংলা ছবির শিরোপা পায় এবং বিএফজেএ-তে সে বছর সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান বসন্ত চৌধুরী।
বসন্ত চৌধুরীর জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে লিখলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়.
এই বসন্তে

১৯৬৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘রাজা রামমোহন’, অসাধারণ অভিনয় বসন্তের। মহানায়কের বাড়ির আড্ডায় কোন এক স্তাবক মন্তব্য করে বসলেন, “রামমোহনে বসন্তের অ্যাক্টিং নিয়ে কেন যে এত হইচই হচ্ছে তা বুঝি না বাবা! দাদা ওই রোলটা করলে এর চেয়ে অনেক ভাল করতেন, একবারে ফাটিয়ে ছেড়ে দিতেন।” এই মন্তব্যে নাকি উত্তম রীতিমত রুষ্ট হয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং পরে বলেন, “বইয়ের পাতায় রামমোহনকে যেমন দেখেছি, তাঁর সম্পর্কে যা পড়েছি, বসন্ত যেন সেখান থেকেই হুবহু উঠে এসেছে।”
বসন্ত চৌধুরীর জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে লিখলেন সপ্তর্ষি রায় বর্ধন…
যেথা সময় থমকে থামে বটের ছায়ে…হ্যারি বেলাফন্টের গান

গিটার হাতে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে তো এলাম কিন্তু কী গাইব? তখনই পেলাম পল রোবসন, হ্যারি বেলাফন্টে, পিট সিগারকে। এঁদের কাছে নিলাম বিশ্বমানবতার পাঠ। বিশেষ করে বেলাফন্টে, যাঁর একদিকে ছিলেন পল রোবসন, অন্য দিকে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, মানবাধিকার আন্দোলনের দুই পুরোধা।