রম্যরচনা: চিতল মাছের মুইঠ্যা

মাকড়দহ বাজারে গেলে সচরাচর একজন মহিলার কাছ থেকেই দু’-তিন কেজি সাইজের কাতলা নিই। আঁশবঁটিতে বসে মহিলার বোন। কেজি দুয়েকের কাতলাটা সে কাটছিল। এমন সময় তাদের সামনে নিবেদন করলাম চিতল-বাসনা, কিছুটা সংকোচের সঙ্গেই। কিন্তু আমার কথা শুনে মাছ-বিক্রেতা দিদি যে এমন দয়ার অবতার হয়ে উঠবে তা ভাবতে পারিনি।
নবারুণ ভট্টাচার্যের উপন্যাস বা আখ্যান

তাঁর লেখাতে বারবার বিভিন্ন রকমের ঝুঁকি নিয়েছেন তিনি। চোখের সামনে একদিকে যেমন নকশাল আন্দোলন দেখেছেন, অন্য দিকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছেন। হয়ত তাই নির্মমভাবে বলতে পারেন, ‘যে পিতা তার সন্তানের লাশকে শনাক্ত করতে ভয় পায়, আমি তাকে ঘৃণা করি।’ এই বাংলায় যখন নকশাল আন্দোলন, ঐ বাংলায় তখন সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন চলছে। দুটো ক্ষেত্রেই শাসক ও শোষকের চরিত্র এক। নবারুণ তাঁর নিজের লেখাকে রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিসমের অংশ মনে করতেন।
প্রাকশতবর্ষের আলোয় শনিবারের চিঠি

‘শনিবারের চিঠি’ মুদ্রিত হত প্রথম দিকে ‘প্রবাসী’ প্রেস থেকেই। প্রকাশকের ঠিকানা ছিল যোগানন্দ দাসের বাড়ির ঠিকানা। প্রতি সংখ্যার মূল্য এক আনা। বার্ষিক সডাক তিন টাকা। রঙ্গ-ব্যঙ্গ পরিপূর্ণ পত্রিকাটিতে সেই সময়ে যারা লেখক ছিলেন, তাঁরা কেউই স্বনামে লিখতেন না। অশোক চট্টোপাধ্যায়, শান্তা দেবী, যোগানন্দ দাস, মোহিতলাল মজুমদার, সজনীকান্ত দাস, হেমন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ কবি-অধ্যাপক-সাহিত্যিকরাই এসব ছদ্মনামে লিখতেন।
ফ্লার্ট করতে গিয়ে মৃণাল সেনের নজরে, নকশাল তকমা মুছে দিল রুপোলি পর্দা

প্রথম ছবি ‘মৃগয়া’-তেই মিঠুন জিতে নেন সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সে বছর মিঠুনকে সেরা অভিনেতার পুরস্কার দেয় রবীন্দ্র সদনে। সেই অনুষ্ঠানে সেরা শিশু অভিনেতার পুরস্কার পান অরিন্দম গাঙ্গুলি ‘হংসরাজ’ ছবির জন্য। দেশ ও রাজ্য দুয়েতেই পুরস্কৃত হন মিঠুন। রাষ্ট্রীয় সম্মান পেলেও স্ট্রাগল কিন্তু কমলো না।
হেমন্ত-র স্বর্ণকণ্ঠ : কিছু ভাবনা

হেমন্তর মনে কিন্তু সংগীতশিল্পী নয়, সাহিত্যিক হবার বাসনাই গেড়ে বসেছিল। এ ব্যাপারে বাধ সেধেছিলেন সুভাষ। আপামর গানপ্রেমীদের সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাছে এজন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। ইস্কুলের অফ পিরিয়ডে বেঞ্চি বাজিয়ে গান গাইতেন হেমন্ত। তাই দেখে সুভাষ একদিন তাঁকে বলেছিলেন, গানই হেমন্তর দুনিয়া। সাহিত্য নয়। তার পরেও বেশ কিছুদিন অবশ্য হেমন্তর সাহিত্য-পাগলামি বজায় ছিল। তখন সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁকে বলেছিলেন, সাহিত্য করলে হেমন্ত মোটামুটি একটা জায়গা পর্যন্ত পৌঁছবে। কিন্তু সংগীতে সে সেরার পর্যায়ে যেতে পারে।
লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়।
কুস্তিগিরদের বিদ্রোহে ক্রিকেটারদের সোনালি নীরবতা

তাই রাজধানীর রাস্তায় অলিম্পিকে পদকজয়ী সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া, এশিয়ান গেমস চ্যাম্পিয়ন বিনেশ ফোগাটকে পুলিশ চূড়ান্ত হেনস্থা করলেও একেবারে চুপটি করে বসে থাকেন। লিখলেন রূপায়ণ ভট্টাচার্য।
হাইপাশিয়া : জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার প্রথম মহিলা শহিদ

শিক্ষক হিসাবে তিনি জীবৎকালে এতটাই কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন যে মিউজিয়াম ও লাইব্রেরির মতোই তাঁর বাড়ি আর বক্তৃতা কক্ষ দেখার জন্য দেশবিদেশের ছাত্ররা ভিড় করত। তিনি গণিতের বেশ কয়েকটি উৎকৃষ্ট পুস্তক রচনা করেছিলেন, কিন্তু কোনোটাই অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়নি।
রাঢ়বাংলার বাঁকুড়ায় মনসা পুজোর একাল ও সেকাল

সর্পদেবী মনসার প্রাচীন শিলামূর্তিগুলি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের শাসন যক্ষিণী পদ্মাবতী ও জৈন দেবী গৌরীর সঙ্গে তাঁর মিল আছে। আবার তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের লাঞ্ছনচিহ্ন সাপ। জৈন ধর্মের সঙ্গে লোকায়ত ধর্মঠাকুর বা ধম্মঠাকুর ও লোকদেবী মনসা এখানে মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠেছে। এটা সম্ভব হয়েছে, অধিকাংশ থানে মনসা বা ধর্মঠাকুরের কোনও মূর্তি না থাকার ফলে। উভয়ের প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন মাপের পোড়ামাটির হাতি-ঘোড়ায় সিঁদুর ও চাঁদমালা পরিয়ে পুজো করা হয়।
লিখলেন ভজন দত্ত।