কবিতা: মেলার নাম বই

ধুলো ওড়ার বসন্তে কলকাতা,/ভিড়ের মাঝে অনন্ত হাতছানি/সে আমাকে নাও বা যদি চেনে/আমি তাহার পদ্য কিছু জানি।
উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: শেষ পর্ব

পশমিনা শালটার সঙ্গে সিমোন আর একটা জিনিস পাঠিয়েছে সীমন্তিনীর জন্য৷ একটা ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ছবি৷ ছবিতে এক সুখী দম্পতির মাঝখানে একটি ছোট্ট মেয়ে মায়ের কোল ঘেঁষে বসে৷ রণো সন্তর্পণে ওর সঙ্গের একটা ফোল্ডার থেকে বার করে এনেছিল ছবিটা৷ সীমন্তিনীর হাতে দিয়ে দেখেছিল কাঁপছে মাম্মার হাতখানা৷ ছবির বাচ্চা মেয়েটা হাসি মাখা মুখে ঢলে পড়েছে মা’র কোলে৷ মা আর বাবা দুজনেই হাসিমুখে তাকিয়ে রয়েছে মেয়েটার দিকে।
তিতিরের তুরুপের তাস

যেকোনও সাধারণ তাসের প্যাকেট দেখলে তুমি দেখবে রুইতনের বাদশার একটা চোখ। কিন্তু এটা তো সাধারণ প্যাকেট নয়। এগুলো ম্যাজিক কার্ড। তাই এখানে দুটো করেই চোখ আছে। আর সেগুলো হল জ্ঞানচক্ষু। এবার মন দিয়ে শোনো। এই এক একটা তাসের দিকে চেয়ে তোমাকে একটা মন্ত্র বলতে হবে। তারপরে একমনে প্রার্থনা করলে তোমার যে সব পড়ার সাবজেক্ট বা চ্যাপ্টার কঠিন লাগে, বা পারো না, সেগুলো দেখবে একেবারে জলবৎ তরলং হয়ে গেছে।
… কুহকীর নতুন গল্প ‘তিতিরের তুরুপের তাস’
জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ১৬

এক রাতে বারোটা নাগাদ হঠাৎ খামারের উঠোনে কিছু একটা ভেঙে পড়ার জোর শব্দ পাওয়া গেল। জন্তুরা হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে এল নিজেদের খুপরি থেকে। জ্যোৎস্না রাত৷ চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। সবাই দেখল, গোলাবাড়ির দেওয়ালের একেবারে শেষ প্রান্তে, যেখানে সাতটি বিধান লেখা আছে, তার ঠিক নীচে দু-টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে রয়েছে একটা মই। আর সেই মইয়ের ঠিক পাশে হতবুদ্ধি অবস্থায় হাত-পা ছড়িয়ে চিৎপাত হয়ে রয়েছে স্কুইলার৷
জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা তর্জমা অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। পর্ব ১৬
উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২৩

পনেরো-ষোলো বছরের রণো যেন একজন ব্ল্যাক ছেলে৷ আত্মরক্ষার জন্য কী একটা ঘোরতর অন্যায় করেছে সে৷ পুলিশ এসে জেরা করছে রণোকে৷ রণো অসহায়ভাবে খুঁজছে ওর বাবাইকে৷ পুলিশ কোনও কথা না শুনে পিস্তল বার করে গুলি করছে রণোর কানের কাছে৷ সাইলেন্সার লাগানো পিস্তল৷ কোনও আওয়াজ হচ্ছে না৷ শুধু নির্বাক ছবির মতো রণো পড়ে যাচ্ছে৷ সীমন্তিনী ঘুমের মধ্যে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে— ‘রণো! রণো! যাস্ না! তুই থাক্৷ তুই আমার কাছে থাক৷’ চারদিক অন্ধকার৷
জেলে বসে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে লেখা নেতাজির চিঠি

সময়ে সময়ে আমি মনে না করে পারি না যে, দেশবন্ধুর অকাল-মৃত্যু ও দেহত্যাগের জন্য তাঁর দেশবাসীরা ও তাঁর অনুচরবর্গও কতকটা দায়ী। তাঁরা যদি তাঁর কাজের বোঝা কতকটা লাঘব করতেন, তা’হলে বোধ হয় তাঁকে এতটা পরিশ্রম করে আয়ু শেষ করতে হত না। কিন্তু আমাদের এমনই অভ্যাস যে, যাকে একবার নেতৃপদে বরণ করি, তাঁর উপর এত ভার চাপাই ও তাঁর কাছ থেকে এত বেশী দাবী করি যে কোনও মানুষের পক্ষে এত ভার বহন বা এত আশা পূরণ করা সম্ভব নয়। রাজনীতি-সংক্রান্ত সব রকম দারিত্বের বকলমা নেতার হাতে তুলে দিয়ে আমরা নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকতে চাই।
কবিতা: অহং

ফড়িং-এর ওড়াউড়ি, হালকা কারুকাজ/ মুগ্ধ করে ঘাসজমি, আর/
বাজের প্রখর চোখে/ বয়সের গল্পগাছা…
কবি শুভাশীষ ভাদুড়ীর নতুন কবিতা
উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২২

সুন্দরী হিসেবে দিদির খ্যাতি ছিল৷ কুড়ি বছর বয়সে দিদির ছবি ‘ফেমিনা’তে কভার হয়েছিল৷ দিদির প্রথম বিয়ে হয় ডাক্তার এ সি রায় বা অম্বিকাচরণ রায়ের সঙ্গে, কলকাতা সার্কিটে আপ অ্যান্ড কামিং ডাক্তার হিসেবে যার তখন প্রচুর খ্যাতি আর সম্মান৷ বিয়ের পরের বছরই সীমন্তিনীর জন্ম৷ দিদির তখন সবে তেইশ আর আমার আঠেরো৷ সীমন্তিনীর জন্মের বছরখানেক পরেই কলকাতায় আসেন ইংল্যান্ডের এক নামকরা থিয়েটার পার্সোনালিটি ডেভিড ব্রুক৷ ইনি ডক্টর রায়ের পূর্বপরিচিত৷ কলকাতায় শেক্সপিয়রের থিয়েটার প্রোডাকশনের কাজে ইনি কয়েকজন অ্যাসিস্ট্যান্ট খুঁজছিলেন৷ আমার দিদি রাধিকা ওঁকে সাহায্য করার কাজে যোগ দেয় এবং অচিরেই দুজনের মধ্যে তুমুল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷