‘ফায়ার অফ লাভ’ – সেলুলয়েডে পৃথিবীর হৃৎস্পন্দন শোনার গল্প

Movie review Fire of Love

শেষমেশ ১৯৯১। ৩ জুন। জাপানের গ্রে ভলক্যানো মাউন্ট উনজেন। ছবির শুরুতেই ঘটনাস্থলে আগের দিন বাকিদের সঙ্গে ক্রাফট দম্পতি। হাসতে হাসতে মরিস বলছিলেন, ‘দ্য ভলক্যানো ইজ ওয়েটিং ফর আস’। ব্যাকগ্রাউন্ডে মিরান্ডার ন্যারেশন— ‘This is Katia and this is Maurice. Tomorrow will be their last day.’ ৩ জুন বিকেল চারটেয় কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় ক্যামেরা নিয়ে উনজেনের আরেকটু কাছে আরও বিপজ্জনক জায়গায় গিয়ে শ্যুট করার চেষ্টা করলেন মরিস, কাতিয়া। আর তখনই ইরাপশন।

লিখলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য…

দুটি কবিতা

Two poems of Ayan Bandyopadhyay

একমাত্র বর্ষার সঙ্গেই বোধহয় সম্পর্ক নেই চোখের;/ ছাতার বাঁকানো হাত আঁকশি-হয়ে আটকে থাকে কোথাও/ গরম ফুলুরির গন্ধে রক্ত-ঝরে টপটপ

অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি নতুন কবিতা…

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ২১

George Orwell's Animal Farm-episode 21

আতঙ্কিত জন্তুরা গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখতে লাগল, শুয়োরের দল সারি বেঁধে উঠোন ঘিরে চক্কর দিচ্ছে৷ জন্তুদের মনে হল, পৃথিবীটা যেন উল্টে গেছে৷ প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে উঠেই জন্তুদের মনে হল এর একটা প্রতিবাদ করা দরকার। এ-ক্ষেত্রে কুকুরের ভয় আছে। তা ছাড়াও বহু বছর ধরে কোনওরকম অভিযোগ বা সমালোচনা না-করে-করে কেমন একটা জড়তাও যেন এসে গিয়েছে তাদের স্বভাবে৷ তবুও ওরা হয়তো প্রতিবাদ করত, কিন্তু সেই মুহূর্তেই কোনও একটা সংকেত পেয়ে ভেড়ার দল তুমুল হল্লা জুড়ে দিল, “চারপেয়েরা ভালো, দুপেয়েরা আরও ভালো! চারপেয়েরা ভালো, দুপেয়েরা আরও ভালো!”

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ২১

গল্প: দিবসের শেষে – জগদীশ গুপ্ত

short story Jagadish Gupta

অধর বকশি সে-বার নৌকা যাত্রা করিবার ঠিক পূর্বদিন সন্ধ্যাবেলায় আবছায়া জ্যোস্নায় নিজেরই ছায়া দেখিয়া আঁৎকাইয়া উঠিয়াছিল,— প্রাঙ্গণে লাফাইয়া লাফাইয়া সে নিজেরই ছায়ার দিকে আঙুল দেখাইয়া ভীতস্বরে কেবলই চিৎকার করিয়াছিল— ও কে? ও কে ? …সে-দিন তার রক্তবর্ণ নিস্পলক চক্ষুর দিকে ভালো করিয়া চাহিয়া থাকিতে কাহারও সাহস হয় নাই। বহু চেষ্টায় সেদিনকার মতো আতঙ্কের নিবৃত্তি হইয়া সে নিরস্ত হইয়াছিল বটে, কিন্তু তার নৌকা আর ফেরে নাই, সে-ও না।

অনুবাদ গল্প: তিনটে আঙুল (অন্তিম পর্ব)

E Santosh Kumar Story-translation Final part

আমার যখন জ্ঞান ফিরল, তখন রক্ত পড়ছিল। হ্যাঁ রক্ত। মেঝেময় রক্ত। ছেনির ডগায় রক্ত, কাটা আঙুলগুলোয় রক্ত, হাতের তালুতে রক্ত। রক্ত মাখা কাপড় যেন লাল সিল্কের মতো। আমার নিজের রক্তের গন্ধ, কী ঠান্ডা অনুভূতি! হুঃ! কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। আমি তখনও ওকে আঁকার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কোথায় সে? আমি ওকে খুঁজছিলাম। দেওয়ালে ওর নাম লিখলাম রক্ত দিয়ে। যেন নিজেকে বলি দিয়ে ওকে লুব্ধ করার চেষ্টা করছিলাম।

অনুবাদ গল্প: তিনটে আঙুল (দ্বিতীয় পর্ব)

E-Santosh kumar Story translation part 2

আমি শিউরে উঠলাম। ‘মনাই, তোমার হাতে কী আছে? সেইদিনও উনি বারবার হাত শুঁকছিলেন।’
‘সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। উনি আমাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিলেন। আমার খুব খারাপ লেগেছে। জানো, আমার ডান হাতে কোনও সমস্যা নেই।’ সে নিজের লম্বা, শীর্ণ ডান হাতটা তুলল যেন নিশ্চিত হবার জন্যে।

কমলাকান্তের দপ্তর: পতঙ্গ

Bankim chandra Chottopadhyay classic Kamalakanter daptar

অন্য জীবে কি ভাবে, তাহা বলিতে পারি না, কিন্তু আমরা পতঙ্গজাতি, আমরা ভাবিয়া পাই না, কেন এ শরীর? -লইয়া কি করিব? নিতা নিত্য কুসুমের মধু চুম্বন করি, নিত্য নিত্য বিশ্ব-প্রফুল্লকর সূর্য্যকিরণে বিচরণ করি– তাহাতে কি সুখ? ফুলের সেই একই গন্ধ, মধুর সেই একই মিষ্টতা, সূর্য্যের সেই এক প্রকারই প্রতিভা। এমন অসার, পুরাতন বৈচিত্র্যশূন্য জগতে থাকিতে আছে? কাচের বাইরে আইস, জ্বলন্ত রূপশিখায় গা ঢালিব। দেখ, আমার ভিক্ষাটি বড় ছোট-আমার প্রাণ তোমাকে দিয়া যাইব, লইবে না? দিব বৈ ত গ্রহণ করিব না। তবে ক্ষতি কি? তুমি রূপ, পোড়াইতে জন্মিয়াছ, আমি পতঙ্গ, পুড়িতে জন্মিয়াছি; আইস, যার যে কাজ, করিয়া যাই। তুমি হাসিতে থাক, আমি পুড়ি।

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ২০

George Orwells Animal F Farm-episode 20

খামারের ইতি-উতি এখনও লুকিয়ে-চুরিয়ে ‘ইংল্যান্ডের পশুরা’ গাওয়া হয়৷ এই গানটা খামারের সবাই মোটামুটি জানে, তবুও কেউ প্রকাশ্যে গলা ছেড়ে গাইতে সাহস পায় না৷ যদিও খামারের সাধারণ জন্তুরা বেশ কষ্ট করেই দিন কাটায়, তাদের সব আশা পূর্ণ হয় না, তবুও তারা যে বাকি জন্তুদের চেয়ে আলাদা সে-ব্যাপারে তারা বেশ সচেতন৷ তারা যদি খিদের জ্বালায় কষ্ট পায় তা হলেও সান্ত্বনা এটাই যে, অভাবটা অত্যাচারী মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য হয়নি৷

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ২০