ছোটবেলায় বাবা মা-র সঙ্গে অনেক ঠাকুর দেখতাম। আমার মামাবাড়ি হালিশহরে। হালিশহরে পুজো দেখার মজা একটু অন্য রকম। ওখানে পুজোর সময় প্রচুর ফুচকা,ঘুগনি খেতাম। সঙ্গে থাকত ফুল ফ্যামিলি। মা,মাসি আর মামা। সে সব অনেক ছোটবেলার কথা। আমি রিক্সায় দাদুদিদার কোলে কোলে বসে ঠাকুর দেখেছি।কলকাতায় আমাদের বাড়ি ছিল বেহালা পর্ণশ্রী-তে। পর্ণশ্রীর পুজো প্যান্ডেলে আমরা সবাই  মিলে অন্তক্ষরী খেলতাম। অঞ্জলি দিতাম অষ্টমীতে। আমার মা ঠাকুর বরণ করতেন। সিঁদুর খেলতেন। আমিও মা-র সঙ্গে সিঁদুর খেলতে যেতাম। পুজোর সঙ্গে যে কত স্মৃতি জড়িয়ে! বাবা মা-র সঙ্গে গাড়ি বুক করে হোল নাইট ঠাকুর দেখতে খুব ভাল লাগত। আমার জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বড় হওয়া। ষষ্ঠীর দিন আমরা পাঁচ বোন মিলে রেস্তোরাঁয় ডিনার করতাম। তখন এত থিম পুজো ছিল না। তবে পুজোগুলো ছিল বেশ আন্তরিক। পুজোর আগে থেকেই চলত জল্পনা কল্পনা। মনের মধ্যে সে কী উত্তেজনা!

আগেই বলেছি আমরা থাকতাম বেহালায়। এক বার বাবা বেসব্রিজ থেকে ট্রেনে করে নর্থের দিকে দুর্গা পুজো দেখিয়েছিলেন। কলেজে পড়ার সময় আমার পুজো দেখার ফিলিংস আর পাঁচ জনের থেকে ছিল আলাদা। আমি যখন এগারো ক্লাসে,তখন আমার ছেলে হোল। আমি মা হলাম। ছেলেকে নিয়েই শুরু হল ঠাকুর দেখা।ঘোরাঘুরি। এখন আমার ছেলে একটু বড় হয়েছে। ও স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে ঠাকুর দেখে। কমপ্লেক্সের পুজোতে আড্ডা মারার চল এখনও আমার আছে। আমি আগের বছর শ্রীভূমিতে ঠাকুর দেখেছি। বিভিন্ন ক্লাব থেকে আমাকে পুজো উদ্বোধনের জন্য বলা হয়। এই উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে আমি অনেক ঠাকুর দেখি। এ ছাড়া গাড়ি নিয়ে অনেক রাতে বেরোই। কিছু কিছু প্যাণ্ডেল বাইরে থেকে দেখি। খুব একটা গাড়ি থেকে নামি না। নামলেও নিজেকে আড়াল করে ঠাকুর দেখি। যাতে কেউ আমাকে চিনতে না পারে। পুজোর সময় কলকাতা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছে হয় না। আমি কোনওদিন দুর্গা পুজোয় জুরি হইনি। কারণ মা-কে বিচার করা যায় না। মা সবর্ত্রই এক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *