আগের পর্ব [১] [২] [] [] []

শুকনো নারকেল পাতার ছাউনির তলায় কাঠের গুঁড়ি পেতে পর্যটকদের বসার জায়গা। সেখানে বসে সাহানের সেই ‘চেনাজানা’ বোট মালিকের জন্য অপেক্ষা করছি। আধঘণ্টা পরে সে এল, সঙ্গে বোটচালক। কাছেই বালির মধ্যে খুঁটি পুঁতে স্পিড বোটটা বাঁধা ছিল। লাইফ জ্যাকেট পরে তাতেই চেপে বসলাম। ভুটভুট শব্দ তুলে বোট তার গতি বাড়িয়ে মাঝসমুদ্রের দিকে ছুটে চলল। ভরা জোয়ার। বড় বড় ঢেউ ধেয়ে আসছে। সে ধাক্কা সামলাতে ঢেউয়ের মাথায় উঠে ব্যাঙলাফানি দিতে দিতে বোট এগিয়ে চলেছে। এক এক সময় প্রবল ধাক্কা আর ঝাঁকুনি সামলানো যাচ্ছে না। বোট হেলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে, এবার বোধহয় উল্টেই যাবে। শক্ত করে ধরে বসে আছি।   

দূরের সেই আবছা দ্বীপটা ক্রমে স্পষ্ট হলদু’কিলোমিটার রোমাঞ্চকর জলযাত্রা শেষে পৌঁছলাম পিজিয়ন আইল্যান্ড মেরিন ন্যাশনাল পার্কে ততক্ষণে প্রায় আধভেজা হয়ে গেছি। দ্বীপের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে মৃত ও জীবন্ত কোরাল। দেখে মনে হচ্ছে, মৃত প্রাণির হাড়গোড়কাচের মতো স্বচ্ছ জল। পাড়ে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের অনেকটা নীচ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। নীল রঙের সমস্ত শেড যেন এই সমুদ্র শুষে নিয়েছে। এত রং, চোখ ফেরানো যায় না। পিজিয়ন আইল্যান্ড, ২০০৩ সালে মেরিন ন্যাশনাল পার্কের স্বীকৃতি পেয়েছে। এই দ্বীপে বসবাসকারী স্থানীয় পাখি ‘ব্লু রক পিজিয়ন’-এর নামানুসারে নাম পিজিয়ন আইল্যান্ড। দ্বীপটি রক পিজিয়ন প্রজননের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। একদিকে ঘন ম্যানগ্রোভ অরণ্য। সরু বনপথ ধরে ডালপালা, ঝোপঝাড় সরিয়ে এগিয়ে চলেছে বনকর্মী জনতাকে অনুসরণ করে এগোচ্ছিএক এক জায়গায় বেশ ঝুঁকে কুঁজো হয়ে যেতে হচ্ছে। জন বলল, এ জঙ্গলে বিষধর সাপ আছে। যদিও, একটা গিরগিটি ছাড়া কিছুই চোখে পড়ল না। সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ৪৫ মিটার উচ্চতায় দ্বীপের সর্বোচ্চ স্থানে উঠে এলাম। সেখান থেকে নীল সমুদ্রের বিস্তার দেখতে অপূর্ব লাগছিল। মাঝখানে দিকচক্রবালের রেখাটা না থাকলে আকাশ আর সমুদ্রকে হয়তো আলাদা করা যেত না।

স্থানীয় কিছু মানুষ আর অল্প কয়েকজন ইওরোপীয় ছাড়া পর্যটকের ভিড় একেবারেই নেই। দ্বীপের পিছনদিকে লোকজন জলকেলিতে মত্ত। সামনের দিকটায় মূলতঃ কয়েকজন স্নরকেলিং করছেন। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পর্যটকদের একাংশ স্কুবা ডাইভিং করার জন্য বোটে চেপে নাইফ আইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিল। মনে স্নরকেলিং-এর ইচ্ছা জাগছে। কিন্তু, সাঁতার জানি না বলে সাহস পাচ্ছি না। পাঁচ বছরের একটি ব্রিটিশ মেয়ে তার বাবার সঙ্গে জলে নেমেছে। বাবার সাহায্য নিয়ে স্নরকেলিং করতে করতে অনেকদূর এগিয়ে যাচ্ছে। ওই ছোট্ট মেয়েটাকে দেখে মনে ভরসা পেলাম। বনদফতরের অফিসে গিয়ে সরাসরি বললাম, “সাঁতার জানি না। স্নরকেলিং করতে চাই, কোনো হেল্পার পাওয়া যাবে?” অফিসার ইন চার্জ মিঃ লিয়ানেজ চতুরঙ্গা জানালেন, “এখানে স্নরকেলিং করার জন্য কোনো গাইড বা হেল্পার পাওয়া যায় না। মে আই হেল্প ইউ?” রাজি হয়ে গেলাম। দশ মিনিট অপেক্ষা করতে বললেন। 

pigeon island
পিজিয়ন আইল্যান্ডের সমুদ্রসৈকত

একটা গাছতলায় বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছিসেই ছোট্ট মেয়েটি স্নরকেলিং সেরে উঠে এসেছে। চোখেমুখে উত্তেজনা। তার মা সারা গায়ে অ্যান্টি র‍্যাশ লোশন মাখিয়ে দিচ্ছে। গোল গোল চোখে সে তার মাকে সমুদ্রের তলায় দেখা বিস্ময়গুলোর বর্ণনা দিচ্ছে। এদিকে বহুক্ষণ হয়ে গেল। চতুরঙ্গা আসছে না। খোঁজ নিতে গিয়ে দেখি, একটি স্থানীয় পর্যটক দলের সঙ্গে তিনি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন। এ দ্বীপে মদ্যপান নিষিদ্ধ। পর্যটকদের ব্যাগ থেকে দুটো বোতল আটক করা হয়েছে। ৫০০০ এলকেআর (ভারতীয় মুদ্রায় ২০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে, সেই নিয়েই ঝামেলা। যাইহোক, একটু পরে চতুরঙ্গা স্নরকেলিংয়ের সরঞ্জাম নিয়ে এলেন। মুখে স্নরকেলিং মাস্ক আর পায়ে মাছের পাখনার মতো লম্বাটে জুতো, অর্থাৎ ফিন পড়ে নিলাম। একটা লম্বাটে টিউবের একপ্রান্ত মুখে গুঁজে দাঁত দিয়ে চেপে রাখতে বলল। মুখ থেকে টিউব যেন খুলে না যায়, শ্বাসপ্রশ্বাস কেবল নাক দিয়ে নিতে হবে… সে ব্যাপারে সতর্ক করে দিল। 

pigeon island
এই জলেই হয় স্নরকেলিং।

জলে নামার আগে চতুরঙ্গা জানতে চাইলেন হাই প্রেশার আছে কিনা। দুদিকে মাথা নাড়লাম। দুশো মিটার দূরে একখণ্ড পাথর সমুদ্রের বুকে জেগে আছে। অতদূর পর্যন্ত তিনি আমায় নিয়ে যাবেন। হাতে একটা টায়ার ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “কোনো ভয় নেই, এটা ধরে থেকো, ডুববে না”। নিজে তরতর করে সাঁতরে কিছুটা দূরে চলে গেলেনআমিও একপা-দুপা করে পা ঘসে ঘসে এগিয়ে চলেছি। দু’বার পা থেকে ফিন খুলে গেল। আবার গলিয়ে নিয়ে এগোতে লাগলাম। একটু পরেই বুঝলাম পায়ের তলায় আর জমি নেই। এবার আমায় ভাসতে হবে। টায়ারটা গলিয়ে নিয়ে সাঁতার কাটার মতো ভাসার চেষ্টা করলাম। চতুরঙ্গা বলেছেন মাথাটা জলে ডুবিয়ে সমুদ্রের নীচটা দেখার চেষ্টা করতে। সে চেষ্টা করতে গিয়ে আর এক বিপত্তি ঘটল। সমুদ্রের গভীরতা তখন তিনতলা বাড়ির সমান। সেটা দেখে নার্ভাস হয়ে মুখ থেকে টিউব খুলে গেল। অনেকখানি জল খেয়ে কাশতে শুরু করলাম। মাথা তুলে দেখি, পাড়ের থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছি। প্রতি মুহুর্তে মনে হচ্ছে ডুবে যাচ্ছি। আমার “ওরে বাবা গো! আমি ফিরব!” মাতৃভাষায় চিৎকার শুনে চতুরঙ্গা এসে আমার একটা হাত শক্ত করে ধরে ফেললেন, ভরসাও দিলেনকিছুটা সাহস সঞ্চয় করে টিউবটা আবার দাঁত দিয়ে চেপে ধরে মাথা ডোবালাম।

সমুদ্রের তলায় এক অন্য জগতসে শোভায় এতটাই মুগ্ধতা যে আর ভয় করল না। বড় বড় লাল প্রবাল, যেন ফুল ফুটে আছে। গায়ের পাশ দিয়ে শয়ে শয়ে রঙিন মাছ ভেসে বেড়াচ্ছে। ১০০ প্রজাতির প্রবাল আর ৩০০ প্রজাতির মাছ আছে এই অঞ্চলে ট্রাম্পেট, অ্যাঞ্জেল ফিস, প্যারট ফিস, ইল প্রভৃতি আরও অনেক রঙিন মাছএ অঞ্চলে স্নরকেলিংয়ের সময় হক্সবিল, গ্রিন টার্টল এবং অলিভ রিডলি নামক সামুদ্রিক কচ্ছপ দেখতে পাওয়া যায়। আমার কচ্ছপ দর্শন না হলেও চতুরঙ্গা আমাকে পাঁচ ফুট লম্বা ব্ল্যাকটিপ রিফ হাঙর দেখিয়েছিলেন। এর বৈশিষ্ট্য, পাখনায় ব্ল্যাকটিপ অর্থাৎ কালো ছোপ থাকে। উপরে উঠে চতুরঙ্গাকে অশেষ ধন্যবাদ জানালাম। বিদায় বেলায় তিনি স্পিডবোট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে এসে হ্যান্ডশেক করে বললেন, “টেন পারসেন্ট সাঁতার আজ তুমি শিখেই ফেললে। এন্ড ইউ আর সো লাকি, এতো কাছে ব্ল্যাকটিপ রিফ শার্ক সাধারণতঃ আসে না।” অনন্য এক অভিজ্ঞতা নিয়ে তৃপ্ত মনে স্পিডবোটে চেপে বসলাম। সমুদ্র এখন বেশ শান্ত। নীলাভেলি পৌঁছে গাড়িতে উঠে এগিয়ে চললাম পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে

pasikuda beach
পাসিকুডা সৈকতের দৃশ্য

সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি। বিকেল চারটে বেজে গেছে। খুব খিদেও পেয়েছে। ভেবেছিলাম, ট্রিঙ্কোমালি পৌঁছে লাঞ্চ করব। কিন্তু, তার আগেই পথের ধারে কয়েকটি ভারতীয় ধাবা দেখে তারই একটাতে ঢুকে পড়লাম। নাম কৃষ্ণভবন রেস্তোরাঁ। ধোসা খেয়ে আবার চলা শুরু। উপুভেল্লি থেকে ডানদিকে ক্যান্ডি রোড ধরে এগিয়ে চলেছি। কিছুটা এগোতেই ব্যাকওয়াটার। বেশ কিছু ট্রলার ভেসে আছে। ‘চায়না বে’ রেলস্টেশন ছাড়িয়ে ব্যাকওয়াটারের ওপর লম্বা সেতু। এই জায়গাটার নাম কিন্নিয়া। পথের ধারে স্থানীয় কিছু মন্দির-মসজিদ চোখে পড়ল। ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙতে দেখি বাট্টিকালোয়া রোড ধরে চলেছি। সন্ধ্যা নেমেছে, অন্ধকারে আশপাশ ভালো বোঝা যাচ্ছে না। গ্রাম্য পরিবেশ। রাত্রিবাসের ঠিকানাটা খুঁজতে সাহান মোবাইলে লোকেশন দেখে এগিয়ে চলেছে। গাড়ি পিচের রাস্তা ছেড়ে কাঁচা পথ ধরল। দু’কিলোমিটার চলার পর পূর্বনির্ধারিত খামারবাড়িতে এসে পৌঁছলাম রাত প্রায় আটটা নাগাদ। গ্রামের নাম নাসিভান্তিভু। বাড়ির নাম ‘রিফ পাসিকুডা’। মূল পাসিকুডা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে মালিক কলম্বো শহরে থাকেনমাঝে মাঝে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটি কাটাতে আসেনকেয়ারটেকার অ্যান্টনি সেরাভেন সবকিছুর দেখভাল করে। পাশাপাশি চারটে ঘর। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সাধারণ ব্যবস্থাপনারাতের মেনু এগ নুডুলস্‌ আর শ্রীলঙ্কান চিকেন কারি অ্যান্টনির বউয়ের হাতের রান্নাও চমৎকার। সমুদ্র অভিযানের ধকল, ১১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাপথ… ক্লান্তিতে তলিয়ে গেলাম ঘুমের অতলে।

পরদিন সকালে ফার্ম হাউসটা দেখে মন ভরে গেল। দড়ির দোলনায় দুলে চায়ের কাপে চুমুক, মনকাড়া স্নিগ্ধ সকালবিশাল চত্বরটায় নারকেল, পেঁপের বাগান, কলাবাগান ছাড়াও বেশ কিছু মরসুমি সবজির চাষ হয়েছে। উঠোনে হাঁসমুরগি চড়ে বেড়াচ্ছে। গাছপালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে নাসিভান্তিভু লেকের নীল জলরাশি। সমুদ্রের জল ঢুকে সৃষ্টি হওয়া লেগুন, স্থানীয় নাম করিয়ানকান্নি। এ গ্রামে অন্যান্য বাড়িগুলিও অনেকটা জমি-জায়গা নিয়ে তৈরি লাল মোরামের রাস্তা। অ্যান্টনি জানাল, সরকারি ব্যবস্থাপনায় গরিব মানুষের জন্য গৃহ প্রকল্প চালু হয়েছে। বেশিরভাগ পরিবারই মৎস্যজীবি। অনেকে চাষও করেনফার্মহাউস থেকে বালিমাখা কয়েক পা কাঁচাপথের শেষে জনমানবহীন নিরালা সৈকত। ডানদিকে লেগুন আর সাগরের নীল মোহনায় এক চমৎকার দৃশ্য। জেলেদের ডিঙি নৌকাগুলো লেগুনের বুকে শান্তিতে ভাসতে ভাসতে হঠাৎ উথালপাথাল সাগরে ঢুকে পড়ে যেন টাল সামলাতে পারছে না। ওপারটা পাসিকুডা, নৌকায় লেগুন পেরিয়ে চলে যাওয়া যায়। অ্যান্টনি বলেছিল এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা বিশেষ উন্নত নয়। তাই যাদের গাড়ি নেই, গ্রামের সেইসব মানুষেরা শহরে যায় নৌকায় চেপে। 

nasivantivu lagoon
নাসিভান্তিভু হ্রদের শোভা

নীল জলে পাখির দলের ভিড়। ম্যানগ্রোভের বাড়বাড়ন্ত। লেগুনের অপ্রশস্ত পাড় ধরে শর্টকাটে ঘরে ফিরলাম। বারান্দায় ব্রেকফাস্ট টেবিলে টোস্ট, ডিমসেদ্ধ, কলা আর পাকা পেঁপে সাজাতে সাজাতে অ্যান্টনি বলল, “শুধু পাঁউরুটিটাই যা দোকান থেকে কেনা। বাকি সব খামারের নিজস্ব।” আগেই গাছ থেকে ডাব পেড়ে রেখেছিল। মিষ্টি জলে গলা ভিজিয়ে, ব্যাগপত্তর গুছিয়ে অ্যান্টনিকে বিদায় জানালাম। গুগল জানান দিচ্ছে, তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘেমেনেয়ে প্রাণান্তকর অবস্থা। একে একে পেরিয়ে গেলাম লেগুনের ওপর সেতু, আমির আলি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, হিন্দু কলেজ, যার নাম লেখা আছে দেবনাগরী হরফে। এ অঞ্চলে কিছু স্থানীয় মন্দির-মসজিদ আছে। গাড়ি থামল প্রকান্ড এক মাঠের কাছেতার পাশেই সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে সৃষ্টি হয়েছে একটা জলাশয়। গাড়ি থেকে নেমে মেঠো পথ ধরে কয়েকপা এগিয়েই পৌঁছে গেলাম মনোরম বেলাভূমিতে। গাঢ় নীল থেকে পান্না সবুজ, জলের এই রংমিলন্তি দেখে মন তখন পাগলপারা। ট্রিঙ্কোমালির দক্ষিণে, পুর্ব উপকূলের বাট্টিকালোয়া জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় সৈকত পাসিকুডা। বাঁদিকে সৈকত ধনুকের মতো বেঁকে গেছে। দূরে কয়েকটা জেলেনৌকা ভেসে আছে। পাড়ে বাঁধা আছে স্পিডবোট। দু’একজন পর্যটক তাতে চেপে জলবিহারের আনন্দ নিতে পাড়ি দিল সাগরের গভীরে।  

বিলাসবহুল এক রিসর্টের পাশেই ক্যাফেটেরিয়া। সামনে বালির ওপর চেয়ার টেবিল পাতা আছে। এক কাপ কফি নিয়ে নারকেল গাছের ছায়ায় সাদা বালির ওপর লেপটে বসে পড়লাম। উপভোগ করতে লাগলাম নীল নির্জনতা। মাঝে মাঝে একটা কালো মেঘ সূর্যের প্রখর তেজকে স্তিমিত করে দিচ্ছে। তাতে, বদলে যাচ্ছে জলের রঙ। এ যেন এক প্রাকৃতিক জলছবি। বেলাভূমির এই একফালি অংশটা রিসর্টের নিজস্ব। বাইরের লোকের প্রবেশ নিষেধ। নেহাত কফি কিনেছিলাম, তাই কেউ কিছু বলেনিগার্ডের কড়া নজর ঠিক লক্ষ করেছে যে, কফির পেয়ালা ফাঁকা হয়ে গেছে। আর বসতে দিল না। নীল জলে পা ভিজিয়ে এবার ফেরার পথে পা বাড়ালাম। শ্রীলঙ্কার পুব সৈকতকে বিদায় জানিয়ে ইতিহাসের খোঁজে মধ্য শ্রীলঙ্কার পথে এগোতে হবে এবার।   (চলবে)

 

*পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ২৭ অগস্ট ২০২২
*সব ছবি লেখকের তোলা
Shreyoshi Lahiri

দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ সংক্রান্ত লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। ভ্রমণ, আনন্দবাজার ই-পেপার, ভ্রমী পত্রিকার নিয়মিত লেখক। এছাড়া যারা-যাযাবর, তথ্যকেন্দ্র, লেটস্‌-গো, আজকাল, প্রতিদিন, গণশক্তি প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায় ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত। ট্র্যাভেল রাইটার্স ফোরাম ইন্ডিয়ার সদস্য। প্রধান শখ ও নেশা বেড়ানো আর ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফি।

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *