আবার কথা বলে উঠে, সেই ধর্মযাজিকা অনুরোধ করল, যুক্তি এবং আবেগ সম্পর্কে কিছু বলুন আমাদের।
এবার উত্তরে তিনি বলতে লাগলেন:
আদতে, তোমার হৃদয়ই একটি যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে তোমারই যুক্তি ও বিচারবোধ বারংবার যুদ্ধ ঘোষণা করছে, তোমার ওই আবেগ ও স্পৃহার বিরুদ্ধে।
আমিও কি তোমার হৃদয়ে সেই শান্তিস্থাপক হতে পারব, যে এক সামগ্রিক মূর্ছনায় ঘুরিয়ে দেবে তোমার মৌলিক উপাদানগুলির বেসুর এবং প্রতিদ্বন্দ্ব?
আর, আমি তা পারবই বা কী করে, যদি তুমি নিজেই তোমার নিজের শান্তিস্থাপক না হও, বিশেষত না ভালবাসো, তোমার নিজস্ব উপাদানগুলিকে?
তোমার যুক্তি এবং তোমার আবেগ– দু’টিই তো সমুদ্র পারাপারে সেই দাঁড় আর পালের মতো।
যদি তোমার পাল বা দাঁড়– কোনও একটাও ভেঙে পড়ে, তখন হয় তুমি উৎক্ষিপ্ত হবে আকাশে বা ভাসতে থাকবে দিশাহীন, আর তা না হলে, মাঝ সমুদ্রে নিশ্চল দাঁড়িয়ে যাবে, স্থাণুবৎ – পারাপারহীন।
যুক্তিকেই যদি বেশি চেপে ধর, তো সে তোমাকে গতিহীন করে দেবে; আর আবেগকে গুরুত্ব না দিলে, স্ফুলিঙ্গের মতো ধেয়ে এসে, তা তার নিজেরই ধ্বংসের কারণ হবে।
ফলে, তোমার হৃদয়, যুক্তিকেই এমন এক মহিমা দিক, যাতে তা সর্বোচ্চ আবেগ হয়ে গান গেয়ে ওঠে।
যুক্তির সেই নির্দেশই আবেগকে পাঠাও, যাতে ওই আবেগও তার প্রতিদিনের পুনর্জন্মে চিরনবীন হয়ে ওঠে, ঠিক সেই ফিনিক্স পাখিটির মতো, যে নিজের ভস্ম থেকেই পুনরায় পায় এক নতুন শরীর।