“এমন সময় অমিয়া নিয়ে এল

থালায় করিয়া জলখাবার

চিঁড়ে, কলা, নারকেল নাড়ু,

কালো পাথর-বাটিতে দুধ,

এক-গেলাস ডাবের জল।

মেঝের উপর থালা রেখে

পশমে-বোনা একটা আসন দিল পেতে”।

বাঙালির সাবেকী জলখাবারের এমন সরস বর্ণনা রবি ঠাকুর আমাদের উপহার দিয়েছিলেন তাঁর ‘শ্যামলী’ কাব্যগ্রন্থের ‘অমৃত’ কবিতায়।

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে খাদ্যরসিক জাতি হিসেবে বাঙালির পরিচিতি সর্বজনবিদিত। প্রাচীন সাহিত্যে, তা সে কৃত্তিবাসের রামায়ণ বা মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্য, যেখানেই হোক না কেন- সর্বত্রই বাঙালির নানাবিধ রন্ধন কলা এবং পদের অনুপুঙখ বর্ণনা। তবে তার অধিকাংশটা জুড়েই ভারী ভারী সব খাওয়াদাওয়া অর্থাৎ দুপুর বা রাতের খাওয়ার গল্প এসবের বাইরে সকাল বা বিকেলের হালকা খাবার, যা বিশেষভাবে পরিচিত ‘জলখাবার’ নামে, তা নিয়ে তুলনামূলক ভাবে খুব বেশি কিছু চর্চা হয়েছে, তা কিন্তু নয়। 

ফলার
প্রখর গ্রীষ্মের আদর্শ জলখাবার

এককালে বাংলার অতিপ্রচলিত একটি জলখাবার ছিল ফলার। এই ফলার শব্দটি এসেছে ‘ফলাহার’ অর্থাৎ ফল মিশ্রিত আহার থেকে। প্রাচীনকালে মিহি সরু চিঁড়ে, মুড়কি, শুখা দই, চিনি, ক্ষীর, মণ্ডা, আম, কাঁঠাল, কলার মতো রসালো স্বাদু সব ফল দিয়ে তৈরি হত এই ফলার। কোথাও কোথাও দইয়ের পরিবর্তে মেশানো হত দুধ। মধ্য যুগের মঙ্গলকাব্যগুলিতে বারবার ফলারের উল্লেখ মেলে। মুকুন্দ চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে ‘দুর্বলার হাটে গমন’ অংশে রয়েছে, ‘স্নান করি দুর্বলা/ খায় দধি খণ্ড কলা/ চিঁড়া দই দিয়া ভারিজনে’। এর থেকেই স্পষ্ট যে সে যুগে মহিলাদের স্নানাদির পরে চিঁড়ে দই দিয়ে জলখাবার খাওয়ার চল ছিল। 

চৈতন্যদেবের সময়ে বৈষ্ণবদের মধ্যেও নানাবিধ ফলারের প্রচলন ছিল। ওঁদের উৎসবে যে ‘চিঁড়াভোগ’ পরিবেশিত হত, তাও ফলারেরই নামান্তর। এই চিঁড়া মহোৎসবের বিস্তৃত বিবরণ মেলে ‘চৈতন্যাচরিতামৃত’তে। এখনও বৈষ্ণবদের উৎসবে ভক্ত অতিথিদের চিঁড়ে-দইয়ের ফলার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

তবে রবীন্দ্রনাথের ‘জীবনস্মৃতি’তে এসে আবার আমরা আর এক রকমের ফলারের বর্ণনা পাই। “আমসত্ত্ব দুধে ফেলি, তাহাতে কদলী দলি/ সন্দেশ মাখিয়া দিয়া তাতে/ হাপুস হুপুস শব্দ চারিদিক নিশব্দ/ পিঁপিড়া কাঁদিয়া যায় পাতে”। 

ফলার শব্দটি এসেছে ‘ফলাহার’ অর্থাৎ ফল মিশ্রিত আহার থেকে। প্রাচীনকালে মিহি সরু চিঁড়ে, মুড়কি, শুখা দই, চিনি, ক্ষীর, মণ্ডা, আম, কাঁঠাল, কলার মতো সরস স্বাদু সব ফল দিয়ে তৈরি হত এই ফলার। কোথাও কোথাও দইয়ের পরিবর্তে মেশানো হত দুধ।

১৮৫৪ সালে রামনারায়ণ তর্করত্নের লেখা ‘কুলীনকুলসর্বস্ব’ গ্রন্থে তিন রকমের ফলারের বর্ণনা আছে- উত্তম, মধ্যম এবং অধম। উত্তম ফলার বলতে বোঝাত আমাদের অতি পরিচিত এবং প্রিয় জলখাবার ঘিয়ে ভাজা লুচি, কুমড়োর ছক্কা থেকে শুরু করে ক্ষীর, নিকুঁতি, গজা, ছানাবড়া, জিলিপি, সুখো দই ইত্যাদি। মধ্যম ফলারের বর্ণনা দিতে গিয়ে কবি লিখলেন, “সরু চিঁড়ে সুখো দই/ মত্তমান ফাকা খই/ খাসা মণ্ডা পাতপোরা হয়।/ মধ্যম ফলার তবে/ বৈদিক ব্রাহ্মণ কবে/ দক্ষিণাটা ইহাতেও রয়”। আর  অধম ফলারে থাকত “গুমো চিঁড়ে জলো দই তিতো গুড় ধেনো খই”য়ের মতো সব পদ যা মানের দিক থেকে খুব একটা সরেস ছিল না।

বিজ্ঞ কৃষ্ণদাস কবিরাজ বিরচিত ‘চৈতন্যচরিতামৃত’ কাব্যগ্রন্থে আবার ফলার বাদ দিয়ে সেকালের অন্য জলপানের বর্ণনা পাই। “অমৃত মোণ্ডা সেবতি কর্পূর কুলী/ রসামৃত সরভাজা আর সরপুলি। হরিবল্লভা সেবতি কর্পূর মালতি/ ডালিমা মরিচা লাড়ু নবাত অমৃতি”। বৈষ্ণব সমাজের জলপানে মিষ্টান্নের এই বহুল বর্ণনা বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। খইতে গুড় মিশিয়ে তৈরি মুড়কিও এক সময়ে গ্রামেগঞ্জে জলখাবারের অন্যতম প্রধান অঙ্গ ছিল। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে, ছোটবেলায় একবার শীতের ছুটিতে এক বন্ধু ও তার পরিবারের সঙ্গে ধামুয়া নামের এক গ্রামে যাওয়ার কথা। ষাটের দশকে তখনও গ্রামেগঞ্জে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির কুঁড়েঘর, নিকনো দাওয়াতে আলপনা আঁকা। আঙিনা পেরিয়ে পুকুর। যেন পটে আঁকা ছবি। বন্ধুর বাবা ছিলেন গ্রামের অত্যন্ত মান্যগণ্য ব্যক্তি। সেই সুবাদেই বোধ হয় আমাদের খাতির যত্নও বেশ ভালো হয়েছিল সেদিনআদর করে ঘরে ডেকে গ্রামের মানুষজনেরা আমাদের যে আপ্যায়ন করেছিলেন, সে কথা আজও ভুলিনি। কেউ বাটি ভর্তি করে মুড়কি দিলেন, কেউ নারকেলের নাড়ু আবার কেউ সদ্য ভাজা মুড়ি আর কুচনো নারকেল বা ঝোলা গুড়। তৃষ্ণা মেটাতে ডাবের স্বাদু জল। কে জানে আজকাল নাগরিকতার জোয়ারে গ্রামেগঞ্জে এধরনের আতিথেয়তা মেলে কিনা। 

নাড়ু
নারকেল নাড়ু – বাঙালির ঘরে ঘরে একসময় যে মিষ্টি মজুত থাকত

মহেন্দ্রনাথ দত্তের ‘কলিকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা’ গ্রন্থে আমরা সেকালের খাদ্য সম্পর্কিত অনেক তথ্য পাই। তাঁদের সময়কার জলখাবার হিসেবে বাসি রুটির কথা তিনি লিপিবদ্ধ করে গেছেন তাঁর গ্রন্থে। “সকালে আমরা বাসি রুটি ও কুমড়ার ছক্কা খাইতাম। কুমড়ার ছক্কা বাসি হইলে খাইতে ভাল লাগিত। রুটি না থাকিলে মুড়ি-মুড়কি জল খাইতাম”। রোজকার এই রুটি, ছক্কা বাদ দিয়ে মহেন্দ্রনাথের জলখাবারের তালিকায় আর যা পাই তা হলো রাধাবল্লভী, কচুরি-জিলিপি, ছাতুর গুটকে গজা, কুচো গজা, জিবে গজার মতো রকমারি স্বাদু জলখাবার। এখনকার মতো হাজারো রকমের মিষ্টির চল ছিল না। মিঠাই বলতে বোঝাতো মুড়কির মোয়া, তিল বা নারকেলের নাড়ু ইত্যাদি। জলখাবারে নোনতার আধিপত্য জারি ছিল ছিল সে যুগে। চূড়াভাজা, চালভাজা, নানা প্রকারের কলাইভাজা, বেগুনি, ফুলুরি দিয়ে কলকাতার নব্য বাবুরা জলযোগ সারতেন।

আজকের যুগের মানুষ শুনলে আশ্চর্য হবেন, যে সে কালে চটজলদি জলখাবারের মধ্যে পান্তাভাত ছিল অন্যতম। আগের দিনের উদ্বৃত্ত ভাত জল দিয়ে রেখে পরের দিন এক থালা পান্তা খেয়ে রুজি রোজগারের সন্ধানে সারাদিনের মতো বেরিয়ে পড়তেন বাংলার চাষি, দিন মজুর, ও অন্য জীবিকার মানুষজনেরাপান্তা প্রসঙ্গে মনে পড়ে যাচ্ছে এক নামী সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক গ্রন্থকারের কথা। হায়দ্রাবাদবাসী অবসরপ্রাপ্ত এই সাংবাদিক আমাকে জানিয়েছেন যে, রাতের খাওয়ার পরে উদ্বৃত্ত ভাতটুকু আজও তিনি এক বাটি জলে ভিজিয়ে রাখেন। সকালে তাতে এক চিমটে নুন, সামান্য সর্ষের তেল ও একটি কাঁচালঙ্কা ভেঙে দিলেই প্রস্তুত স্বাদু পান্তা দিয়ে চটজলদি প্রাতরাশ। 

জল ঢালা ভাতে কাঁচা পেঁয়াজ লঙ্কা ব্যস…

কল্যাণী দত্ত তাঁর ‘থোড় বড়ি খাড়া’ গ্রন্থে লিখেছেন, “গেরস্ত বাড়িতে আপিসের ভাত নামাবার আগে পর্যন্ত ছিল জলখাবারের পাট-’। বাসি লুচির সঙ্গে সাদা আলুর চচ্চড়ি হতো আবার কখনো হতো ফুলকো লুচির সঙ্গে সুজির মোহনভোগ।এছাড়া নিমকি, সিঙ্গাড়া, কচুরি, রাধাবল্লভী, পরোটা এসবই ছিল বাঙালির সেরা সব জলখাবারের অঙ্গ। পরোটার ময়দায় নাকি ঘিয়ের ময়ান ছাড়া এক ছিটে টক দই ও এক চিমটে নুন দিয়ে মাখা হত। আর মেশানো হতো লঙ্কার গুঁড়ো ও কালোজিরে।তবে কল্যাণী স্বীকার করেছেন যে এসবের মধ্যে “সবচেয়ে সহজ ও আদরের জিনিস ছিল লুচি”। এটি ছাড়া নাকি সকালের জলখাবার সম্পূর্ণ হতনা।

রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবীর ‘আমিষ ও নিরামিষ’ গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে জলখাবার স্থান পেয়েছিল। সেই অধ্যায়ের নাম ছিল ‘জলপান’। পুরো অধ্যায় জুড়ে হরেক রকমের রুটি, লুচি, কচুরি, নিমকি, রাধাবল্লভীর প্রণালীর মেলা। খাদ্যরসিক ঈশ্বর গুপ্ত তো লিখেই ফেললেন,“দেবতার প্রিয় খাদ্য সকলের আগে।/ ময়দার কাছে আর কিছুই না লাগে।।/ দুধে গমে ঘিয়ে ভাজা যার নাম লুচি।/ ছেলেবুড়ো সকলেরই ভোজনান্তে রুচি”।

পান্তা
লুচিতে রুচি নেই এমন বাঙালি মেলা ভার

রাধাবল্লভীর উল্লেখ কোন প্রাচীন গ্রন্থে বা শাস্ত্রে না মিললেও ময়দার মধ্যে মুগ বা বিউলির ডালবাটা দিয়ে ঘিয়ে ভাজা এই খাদ্যবস্তুটির দ্রব্যগুণে সংস্কৃত নামকরণ হয়েছে ‘বেষ্টনিকা’। রাধাবল্লভীর ডালের পুর কিন্তু খুব মোলায়েম হবেনা। মুখে দিলে মশলা মিশ্রিত শুখা ডালের স্বাদটা বোঝা যাবে আর এটাই রাধাবল্লভীর স্বাদের মূল কথা।

রাধাবল্লভীর উৎপত্তি এবং নামকরণ নিয়ে নানা মুনির অর্থাৎ নানা গবেষকের নানা মতকেউ বলেন এর নামকরণ হয়েছে রাধিকা বা শ্রীরাধার রাধা এবং কৃষ্ণের অপর নাম বল্লভ থেকে। আবার কোনও কোনও গবেষকের মতে খড়দহের শ্যামসুন্দরের জন্য চৈতন্য মহাপ্রভু নাকি রাধাবল্লভী উদ্ভাবন করেন। শ্রীকৃষ্ণের আর এক নাম ‘রাধাবল্লভ’। সেই সূত্রে মহাপ্রভুই নাকি এই ভোগের নাম দেন ‘রাধাবল্লভী’। 

kachuri jilipi
কচুরি শব্দটা এসেছে সংস্কৃত কর্চরিকা থেকে

বাংলার অতি প্রিয় জলখাবার ‘কচুরি’ শব্দটি আমরা পেয়েছি সংস্কৃত ‘কর্চরিকা’ শব্দ থেকে। এর মধ্যে খাস্তা কচুরির পুরে ভাজামুগডাল বাটা ও তার সঙ্গে হিংয়ের আভাস পড়লে সে স্বাদের কোনও জুড়ি নেই। স্বাস্থ্যের কারণে স্বামী বিবেকানন্দ যতই লুচি, কচুরি, তেলেভাজা খাওয়ার বিরুদ্ধে বঙ্গসন্তানকে সচেতন করার চেষ্টা করে থাকুন না কেন, তাঁর গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কিন্তু কচুরির প্রতি দুর্বলতা ছিল। ঠাকুরের পছন্দ ছিল দক্ষিণেশ্বরের ফাগুর দোকানের কচুরি। প্রিয় শিষ্য গিরিশ ঘোষকেও নাকি একবার সেই দোকানের কচুরি খাইয়ে ছিলেন।

এক সময়ে লুচি বা পরোটার সঙ্গে ঘুগনি ছিল বাঙালির অন্যতম স্বাদু জলখাবার। পাড়ার মোড়ে মোড়ে ঘুগনি বিক্রি হত। রকে বসে আড্ডা দিতে দিতে ঘুগনি দিয়ে জলখাবার সারতেন সেকালের আড্ডাপ্রিয় বাঙালি। আমার ছোটবেলায় মাকে দেখেছি দুর্গাপুজোর শেষে বিজয়া করতে আসা অতিথি সামলাতে বাড়িতে নানাবিধ নোনতা, মিষ্টি বানাতে। মিষ্টির মধ্যে যেমন থাকত নারকেলের নাড়ু, মালপোয়া, জিবে গজা, নোনতার মধ্যে আমাদের কাছে সেরার সেরা ছিল মাংসের কিমার ঘুগনি। অতিথি আসার আগে আমরাই ঘুগনির হাঁড়ি প্রায় শেষ করে ফেলতাম। মা তখন আবার নতুন করে ভাঁড়ারে অবশিষ্ট মালমশলা দিয়ে যে নিরামিষ ঘুগনি বানিয়ে ফেলতেন তাও কিন্তু স্বাদগুণের বিচারে কোন অংশেই কম ছিলনা।

ghugni courtesy news18Bengali
জিভে জল আনা ঝাল ঝাল টক টক ঘুগনি

বাঙালির সাবেকি জলখাবারের তালিকায় পিঠে-মিষ্টির  ভূমিকাকেও কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়ের ‘মিষ্টান্নপাক’ গ্রন্থে বোঁদে, মিঠাই, সীতাভোগের উল্লেখ যেমন আছে, তেমনি আছে নানা প্রকারের খাজা-গজা এবং মোহনভোগ-বরফি, পায়স-পিঠের উল্লেখ। 

এককালে পিঠে পার্বণের দিনে বাঙালির জলখাবারের তালিকায় থাকত শুধুই পিঠে। জলখাবারের প্রথম পর্ব শুরু হত গরম গরম চিতই পিঠে দিয়ে। সঙ্গতে নারকেল কোরা আর ঝোলা গুড়। পাটিসাপটা, চন্দ্রপুলি বা নারকেল ছাপা, রস পুলি বা ভাজা পুলি, ভাপা পিঠে তো থাকতই। আর সব শেষে দুধ পিঠে। ওপার বাংলায় নোনতা পিঠেরও খুব চল। ওদেশিদের মতে চিতই পিঠের সঙ্গে মুরগির ভুনা বা মাছের ঝাল ঝাল বিরান নাকি জমে ভালো। 

chitai pitha
চালের তৈরি চিতই পিঠে আর খেজুরের ঝোলা গুড় ছাড়া শীতকাল মানায় না

আজকের বিশ্বায়নের যুগে বাঙালির জীবনধারায় এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন আর তার ছোঁয়া পড়েছে তার খাদ্যরুচিতেও। তাই আধুনিক বাঙালির আজকাল জলখাবারের জন্য পছন্দ ক্রেপ, পিৎজা, মোমো, চিলি বেবিকর্ন, রেশমি বা টিক্কা কাবাব, পনির পকোড়া কিংবা চিকেন ড্রামস্টিকের মতো সব স্বাদু আমিষ-নিরামিষ পদ। কোনও বিশেষ পুজো-আর্চা, নববর্ষ ইত্যাদির মতো অনুষ্ঠান ব্যতিরেক স্বাস্থ্যসচেতন, জিমগামী, আধা-সায়েব আধুনিক বঙ্গসন্তান যে প্রায় ভুলতে বসেছে লুচি-মণ্ডার স্বাদ, এ কি কম আক্ষেপের বিষয়? 

পেশা শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে। পরে নামী ইস্কুলের বাচ্চাদের দিদিমণি। কিন্তু লেখা চলল। তার সঙ্গে রাঁধা আর গাড়ি চালানো, এ দুটোই আমার ভালবাসা। প্রথম ভালবাসার ফসল তিনটি ব‌ই। নানা রাজ্যের অন্নব্যঞ্জন, মছলিশ আর ভোজনবিলাসে কলকাতা।

17 Responses

  1. ছোট্টবেলার অনেক খাবারের স্মৃতি মনে এলো সঙ্গে অজানা তথ্য জেনে সমৃদ্ধ হলাম । লেখিকা কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা । এমন লেখা আরো চাই আপনার কাছ থেকে ।

  2. লেখাটা ভারী সুন্দর হয়েছে | একটা জিনিস জানতে ইচ্ছে করছে | জলখাবার সাধারণত আমরা বিকেলের খাবার টা মনে করি | সকালটা প্রাতঃরাশ | প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে কি দুটোই জলখাবার মনে করা হতো ? আর পান্তাভাত সম্পর্কে বলি —- ছোটবেলায় দেখেছি অনেকে পান্তা pele অন্য কিছু কিছুতেই খেতে চাইতেন্না /. সম্ভবত সারারাত ভাতটা জলেভিজে একটু ফার্মেন্টেড হতো / তাই খাওয়ার পরে একটু আমেজ আসত
    Md. Yasin

  3. চমৎকার লেখা। একদিকে যেমন জিভে জল আনা সব জলখাবার, যা ছোটবেলার স্মৃতি, মায়ের হাতের ঘুঘনির স্বাদ মনে করিয়ে দেয় – তেমনি অন্যদিকে তথ্য সম্বৃদ্ধ এই রচনা এক অন্য মাত্রা পায়। ধন্যবাদ লেখিকাকে।

  4. লেখাটা অপূর্ব হয়েছে। বাঙালিয়ানার এক সুন্দর তথ্যসমৃদ্ধ বিবরণ ।
    ছোটবেলার অনেক স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠল। বিশেষতঃ পৌষ সংক্রান্তির দিনের চিতই পিঠা কিম্বা বিজয়ার দিনের নানা ধরণের নাড়ু, গজা, নিমকির স্বাদ কি ভোলা যায় ?
    এখনকার ব্যস্ত জীবনের যাঁতাকলে আমরা সবকিছু ভুলতে বসেছি । লকডাউনের অবসরে অবশ্য আবার সময় বার করা যেতে পারে । কিন্তু ছোটবেলার যৌথপরিবারের সকলের সাথে ভাগ করে খাওয়ার আনন্দ বোধহয় আর কোনোদিন ফিরে আসবে না ।

    — গৌরী

  5. Ki opurbo lekha, Didi ! Amon soros, jive jol aana , rosona tripto kora, monojna rochona daarun upovog korlam. Bangalir jolkhabarer udbhaboni shokti, tar paakjontrer ak somoykar khomotar itibritto mugdho koreche. Tobe tumi bipod tomar ghore nimontron kore anle. Ak akti kore oisob aahar porokh korte thakbo tomar bari gie. Tumi chao ba na chao ami amake tomar barite suswadu jolkhabarer nimontron korlam. Facebook dwara nimontroner truti saanonde marjona korlam.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *