লং ড্রাইভ ভালবাসেন? গাড়ি ছাড়া এক মুহূর্ত চলে না আপনার? কিন্তু জানেন কি, এই গাড়ি থেকে হতে পারে নানা রকম অসুখ। মনে হতেই পারে যে যাতাযাতের জন্য গাড়ির চেয়ে ভাল উপায় আর নেই। কিন্তু জীবাণু থেক সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাও গাড়ি থেকে প্রবল। কীভাবে? আসুন দেখে নিই—
● আপনার গাড়ি কত সময় নোংরা, ধুলোমাখা, দূষিত জায়গায় পার্ক করা থাকে। এবার আপনি যতবার গাড়ির দরজা খোলেন বা বন্ধ করেন, বা জানলা ওঠানামানো করেন, ততবার কিন্তু জীবাণুর সংস্পর্শে আসেন। পাবলিক বাথরুমের মতো গাড়িও কিন্তু জীবাণুর প্রবেশ পথ। ছোট ছোট ভাইরাস যে কখন আপনার গাড়ির উপর বাসা বাঁধে তা আপনি জানতেও পারেন না। তাই গাড়ি নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। শুধু মুছলেই হবে না, গভীরভাবে পরিষ্কার করতে হবে। যেমন বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন, ঠিক সেইভাবেই।
● প্রত্যেকদিন একই রাস্তায় অফিস আর বাড়ি করে করে আপনি কি ক্লান্ত, বিরক্ত? তা হলে মন দিয়ে পড়ুন। সম্প্রতি গবেষণা করে দেখা গেছে যে যত লম্বা আপনার যাতায়াতের রাস্তা ততটাই নাকি কম আপনার খুশির পরিমাণ। গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন হ্যাপিনেস স্কোর। দেখা গেছে যাঁরা নিয়মিত ৫০-৯০ মিনিট গাড়িতে ট্র্যাভেল করেন, তাঁদের উদ্বেগ এবং ডিপ্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বদ্ধ জায়গার মধ্যে দীর্ঘ সময় থাকলে মানুষ মন খারাপ হয়, কিছুই ভাল লাগে না। ঘুমেও সমস্যা হতে পারে, ওজন বাড়ে কমে, খেতে ইচ্ছে করে না, মুডও ঘন ঘন ওঠানামা করে।
● এসি ছাড়া ট্র্যাভেল করার কথা ভাবতেও পারেন না। কিন্তু জানেন কি এর ফলে কত ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার সংস্পর্শে চলে আসছেন আপনি? বন্ধ এসি ভেন্টে জীবাণু লুকিয়ে থাকে। এসি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির ভিতরের হাওয়ায় তারা মিশে যায়। ফল কাশি, সর্দির মতো সমস্যা দেখা যায়। এসি থেকে গরম হওয়া বেরলে তো আরও সর্বনাশ। জীবাণু আরও আনন্দে গাড়ির মধ্যে বাঁচতে পারে।
● শহরে ধুলোবালি, দূষণ যে মাত্রায় বেড়েছে তাতে গাড়ির মধ্যে কেমিক্যাল, কালি ঠিক কোনও না কোনওভাবে প্রবেশ করেই যায় যা শরীরের পক্ষে মোটে ভাল নয়। তার উপর তো ফ্রেশনার আছেই। গাড়ির দুর্গন্ধ দূর করে ঠিকই কিন্তু বিষাক্ত কেমিক্যালের গন্ধ চাপা দিয়ে। সুতরাং গাড়ির সুগন্ধ নিয়ে বড়াই করার আগে একটি ভেবে দেখুন।
● গাড়িতে যত সময় লাগে যাতায়াত করতে, ততটাই দেখবেন খিদে বেড়ে যায়। লং ড্রাইভ তো আবার সফ্ট ড্রিংক, স্ন্যাকস ছাড়া ভাবাই যায় না। দেখবেন যখন আমরা ট্র্যাফিক জ্যামে আকে যাই তখন স্ট্রেস কাটাতে কমফর্ট ফুডের দিকেই হাত বাড়াই, সে খিদে থাকা আর না থাক। তার মানেই খামোখা অতিরিক্ত ক্যালরি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে যায়। এর থেকে ভবিষ্যতে হার্টের সমস্যা,ওবিসিটি হতে পারে। ভাবুন না লম্বা সময় কোনওরকম নড়াচড়া ছাড়া যদি চিপস, কেক, কোলা জাতীয় খাবার খেতে থাকেন, অসুস্থ তো হবেনই। এরপর থেকে এরকম পরিস্থিতি হলে, জল খান। তা হলেও স্ট্রেস কমবে।
● ড্রাইভিং মুখের কথা নয়। সব সময় ভাবতে হয়। একসঙ্গে অনেক গুলো কাজ করতে হয় গাড়ি চালানোর সময় ফলে উদ্বেগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তারপর অন্য গাড়ির ড্রাইভারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি, ট্র্যাফিকের বেহাল অবস্থার কারণে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। নার্ভ অতিরিক্ত চঞ্চল হয়ে যায়। ঠিকমতো মনকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে দূর্ঘটনা পর্যন্ত ঘটতে পারে।