গাড়ির সঙ্গে জুতো বা বার্গার বা বেগুনের কোনও সম্পর্কে আবার হয় না কি? একদম হয়। শুধু তাই নয়, লাড্ডু থেকে পেনসিলের সঙ্গে গাড়ির সম্পর্ক হতে পারে। আর তার কারিগর হায়দরাবাদ নিবাসী সুধাকর। ছোটবেলা থেকেই গাড়ির প্রতি বিশাল ঝোঁক ছিল। ৯০ দশকে আমেরিকায় থাকাকালীন একটি কার্নিভালে স্কেটিং শু-র আকারে গাড়ি দেখে হতবাক হয়ে যান। আর তারপরই সিদ্ধান্ত নেন যে উনি নানারকম গাড়ি বানাবেন। এখন পর্যন্ত ৫৫টি বিভিন্ন শেপের গাড়ি বানিয়েছেন। নিজের একটি মিউজিয়মও আছে। নাম ‘সুধা কার মিউজিয়ম।’ আর এই গাড়ির কালেকশন দেখতেই দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।

সবার প্রথমে সুধাকর গাড়ির আকারে জুতো বানিয়েছিলেন, তারপর বেগুন এবং তারপর একটি হেলমেট। এই ধরনের ভিনটেজ গাড়ি বানাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয় বলেই জানিয়েছেন সুধাকর। গাড়ির প্রতিটা পার্টের খেয়াল রাখতে হয়। কাঠের ফার্নিশিং লাগে। গাড়ি ছাড়াও ৭০ জন বসার মতো বাস, ডাবল ডেকার বাস বানিয়েছেন তিনি। যাঁরা সুধাকরের গাড়ি দেখেছেন তাঁরা সকলেই স্বীকার করেছেন যে তাঁর কাজ অত্যন্ত নিখুঁত এবং অভিনব।

৯০ দশক আর ২০০০-এর শুরু দিকে সুধাকর বেশ কিছু স্টেজ শো-এরও আয়োজন করেছিলেন হুসেন সাগর লেকের কাছে, যেগুলো উপস্থিত সমস্ত দর্শকই খুব উপভোগ করতেন। তারপর থেকেই সুধাকর সিদ্ধান্ত নেন যে উনি শুধু গাড়ি বানাবেন। এখন তিনি উপলক্ষ্য অনুযায়ী গাড়ি বানান, যেমন ফিফা ওয়র্ল্ড কাপের সময় বানিয়েছেন ফুটবল, বড়দিনের সময় গাছ আর গণেশ পুজোর সময় লাড্ডুর আকারে গাড়ি। ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে সুধাকর এই ধরনের গাড়ি বানান। প্রতিটা গাড়ির সাসপেনসন, চাকার পোজিশন আলাদা হয়। কখনও তিন মাস কখনও আবার গোটা বছর লেগে যায় গাড়ি বানাতে। ১০০টা এরকম অদ্ভুত গাড়ি বানাতে চান সুধাকর। নিজেই বলেন যে ১০-১৫ বছর লেগে যাবে ওঁর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে। কিন্তু উনি তার আগে থামবেন না।

ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র-ছাত্রীরাতাঁদের অন্তিম বর্ষে সুধাকরের কাছে পরামর্শ নিতে আসেন, যাতে তাঁরাও ২৫০০০টাকার মধ্যে নিজেদের গাড়ি তৈরি করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *