খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্যের সমীকরণ কিন্তু খুব একটা সহজ নয়। আপনি যা খান, যতটা খান, যেভাবে খান, তার প্রভাব পড়ে শরীরের উপর। কিছু খাবার যেমন শরীরের জন্য ভাল, কিছু আবার খুব খারাপ। আর এই তালিকা রোজই বদলাচ্ছে। এত দিন যেমন মনে করা হত নিরামিষ বা ভেগান ডায়েটে হৃদযন্ত্র ভাল রাখতে সবচেয়ে কার্যকারী। মাংস খেলে বরং হার্টের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণা করে জানা গেছে যে এর পুরোটা সত্যি নয়।

এই গবেষণা বলছে,ভেগান বা নিরামিষ খাবার খেলে হার্টের অসুখের সম্ভাবনা কমতে পারে, কিন্তু বেড়ে যায় স্ট্রোকের সম্ভাবনা! দেখা গেছে যাঁরা আমিশাষী তাঁদের তুলনায় যাঁরা নিরামিষাশী বা ভেগান ডায়েট মেনে চলেন, তাঁদের স্ট্রোক হতেই পারে। প্রায় ৪৮৮১৮ মানুষের উফর পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে উফনীত হয়েছেন গবেষকরা। এঁদের কারওর হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ইতিহাস ছিল না। তিন ভাগে ভাগ করা হয় অংশগ্রহণকারীদের—যাঁরা মাংস বেশি খান, যাঁরা মাছ খান কিন্তু মাংস খান না আর যাঁরা নিরামিষ বা ভেগান ডায়েটে বিশ্বাস করেন। ১৮ বছর ধরে চলে এই গবেষণা। এই সময়ের মধ্যে ২৮২০টি ইসকিমিক হার্ট ডিসিস ও ১০৭২টি স্ট্রোকের কেসের কথা জানা যায়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এই স্টাডি থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলেই মনে করছেন গবেষকরা।

রিপোর্ট অনুযায়ী, যাঁরা মাছ খান তাঁদের হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা যাঁরা মাংস খান, তাঁদের চেয়ে ১৩% কম। নিরামিশাষী বা ভেগানদের সেই সম্ভাবনা ২২% কম। কিন্তু তাঁদেরই আবার স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে ২০% বেশি। হ্যামরেজিক স্ট্রোক যাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় এদেঁর বেশি হতে পারে। মনে করা হচ্ছে, ভেগান বা নিরামিশাষীদের পুষ্টির অভাবে হতে পারে, কিছু জরুরি ভিটামিন থেকে তাঁরা বঞ্চিত রয়ে যান, আর সেই কারণে স্ট্রোক হতে পারে। তবে এই প্রসঙ্গে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কোলেস্টেরল, ভিটামিন বি১২, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিডের ভূমিকা জানাও জরুরি বলে মনে করছেন গবেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *