কাল সেই বারোটি বছর 

কাল সেই অলিখিত যাপনের বারোটি বছর
সন্দিগ্ধ পাখির মতো এসে বসেছিলে চৌকাঠে
বেড়ে রাখা কুটো ধান আর মমত্ব
তোমায় বুঝিয়েছিল এ কোনও অভিনয় নয়!
তারপর সিঁথি পথ…
হাতের আলোয় জ্বলে ওঠা রামধনু
সব মেঘ কেটে গেলে বৃষ্টির কোমল স্পর্শে
আরও মাটির গভীরে গেঁথে যাওয়া বীজ!
পাখি খুঁজে নিল সূর্যাস্তে ঘরে ফেরা।
সে আশ্রয় বড়ো নিবিড়।
তবুও কেন যে ঝড় ওঠে?
কেন যে ভেঙে পড়ে মাস্তুল?
অপেক্ষা পথে আমি শুধু রেখে গেছি সন্ধের প্রদীপ
সিঁথি পথে সামলে রেখেছি পড়ন্ত রোদ
কৃষ্ণচূড়ার রং ধরলে সে পথ আলো হয়ে ওঠে
ঢেউ এলে ভিজে যায় ক্রমশ মগ্নতায়
একা এবং আরও একা হতে হতে কীভাবে যে এত কাছে
এসেছ, জানা নেই…
তুমিও কি জেনেছ আমিও কীভাবে তোমার শূন্যতায় মিশে
গেছি আরও?

Sabarna Poetry Image
কৃষ্ণচূড়ার রং ধরলে সে পথ আলো হয়ে ওঠে

শুধু দূরত্বটুকু

আজ কেন এত মেঘ বল তো?
কেন চিঠির পর চিঠির গন্ধ?
কেন মেঘের পিছু পিছু লুকানো জেট প্লেনের গতি
ধরা তো দাও না তবু!
তবু সময়, অসময়…নিজেকে নিংড়ে দাঁড় করিয়েছি বারবার
আয়নাও লজ্জা পায় আজকাল।
আজকাল যে ঘোরে কেটে যায় দুঃসহ দিন
সন্তান মোহ ছাড়া কেন আর কিছু নেই?
পথে পথে কত সোনার পরাগ
পাখিদের ঠোঁটে হয়ত কোনও ফুল ছিল সেদিন!
আমার চোখ এড়ায় না কিছুই।
তোমার ক্লান্তি আর প্রশান্তির চেয়ে আজও যে 
নয় পরিপূর্ণ সময়…
তবুও তো আজ শুধু আমাদের কথা হওয়া ছিল
তবুও তো আজ ভরাডুবি বাকি ছিল
দেখ তো কেমন একযুগ পার হয়ে গেল সুখী দম্পতির মতোই…
শুধু দূরত্বটুকু ওই নক্ষত্রের!

*ছবি সৌজন্য: Flickr, Facebook

সবর্ণা শূন্য দশকের কবি। জন্ম, বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর। গান, নাচ, ছবি আঁকার সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে নিজস্ব ভাবনার জগৎ। পরবর্তীতে হঠাৎই কবিতাকে আঁকড়ে ধরা। গদ্য কবিতার পাশাপাশি ছন্দে লিখতেও ভালবাসেন। ২০১৮-তে সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'চারদেওয়ালি চুপকথারা'। ২০১৯-এ পেয়েছেন সোনাঝুরি সাহিত্যসম্মান। ২০২০-তে বইতরণী থেকে প্রকাশ পায় তাঁর 'সাদা হরফের হাঁসগুলি' ই-বুক। ২০২১ সালে পূর্বা থেকে প্রকাশিত হয় ' রোদসংসার ও তারামন্ডল'। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। কিশোর সাহিত্যেও আগ্রহী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *