বললে ছেলে “ধন্যি তুমি বাহাত্তুরে বাপ
দুধ সাদা রঙ ধরল মাথার চুলে।
তবুও দেখি একনাগাড়ে দিচ্ছ বেদম লাফ
মুণ্ডু নীচে পা ওপরে তুলে।
প্রশ্ন আমার আজ-
এই বয়সে উচিত কি এ কাজ?”
 
“নাড়া লেগে মগজের ঘিলু পাছে নড়ে ওঠে
ছেলেবেলা ছিল সেই ভয়,
আজ জানি নিশ্চিত- ঘিলুটাই নেই মোটে,
তাই নির্ভয়”- বাপ কয়।
 
বললে ছেলে – “বুড়ো তোমার বাড়ছে দ্যাখো ভুঁড়ি
নাদুসনুদুস কুমড়োপটাশ যেন,
তবুও তুমি ডিগবাজি খাও একসাথে পাঁচ কুড়ি,
ভাবছি মনে ঘটছে এমন কেন!
জানতে পারি না কি-
এই ঘটনার বিশদ কারণটা কী?”
 
বাপ বলে- “মলম এক কিনে এনে এক আনায় ছোট থেকে মাখি নাকে, চোখে
সে মলমে জং টং ধরে না তো হাতে পায়,
অনুমতি পেলে বেঁচি তোকে।”
 
বললে ছেলে- “দাঁতের পাটি যাচ্ছে তোমার ন’ড়ে,
ফ্যান ছাড়া আর কিছুই খাওয়া কষ্ট;
ঠ্যাং চিবিয়ে মুরগিটা খাও তবুও কেমন করে- আমার কাছে হয় না সেটা পষ্ট।
কারণটা এর কী যে
একটু আমায় বুঝিয়ে দেবে নিজে!”
 
বাপ বলে “গিন্নির সাথে রোজ কর্তার
ঝগড়া হয়েছে পাকাপোক্ত,
সে ব্যায়ামে চোয়ালটা হলো ভারি জোরদার
দাঁতগুলো আজও আছে শক্ত।”
 
বললে ছেলে- “দৃষ্টিটা আর নেই যে তোমার আগের,
মগজখানা করছে না ঠিক কাজও-
তবুও তুমি কেউটেটাকে বসিয়ে ডগায় নাকের কেরামতি দেখাও কেমন আজও!
বলবে আমায় খুলে,
কান্ড এমন হচ্ছেটা কার ভুলে?”
 
এইবার রেগেমেগে গলা ছেড়ে বুড়ো বলে-
“দিয়েছি তো সবকটা জবাবই,
ভাবো বুঝি আমাদের বাজে বকে পেট চলে,
ভুলে যাও এইসব নবাবী।
হয় পালাও তুমি নিজে,
নইলে আমার মারের গুঁতোয় পড়বে সিধে নীচে।”
 

ছড়াটি ‘অ্যালিস ইন ওয়ন্ডরল্যান্ড’ গ্রন্থের অন্তর্গত

ভূগোলের অধ্যাপিকা। ছোটবেলা থেকেই আঁকা-লেখার সৃজনশীল জগতে আনন্দ খুঁজে পান। ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে প্রথম বই "দাড়িওয়ালা বুড়োটার"। এডওয়ার্ড লিয়রের ননসেন্স লিমেরিক ও ছড়ার বাংলা রূপান্তরের এই সংকলনের অলংকরণও তাঁর নিজের করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *