বাজবরণের আঠার গল্পটা আমাকে শুনিয়েছিল সুদীপদা। সুদীপ সেনগুপ্ত। তবে বাজবরণ প্রসঙ্গে ঢোকার আগে টুক করে সুদীপদা সম্পর্কে দু’চারটে কথা সেরে নিই। সুদীপদা আসলে একজন ঘাঘু চোর। মধ্যমগ্রাম না বিশরপাড়া কোথায় যেন একটা বাড়ি। ফর্সা, টানটান, ঝকঝকে সুভদ্র চেহারা। আদ্যন্ত মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। পেটে ক্লাস নাইন টেন অবধি দু’চার কলম বিদ্যেও ছিল।
এরকম একটা ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কীভাবে ছটকে গিয়ে অনেকগুলো বছর আগে এই ধর্মতলার ফুটপাথে এসে পড়েছিল সে গল্পটা কখনওই বলেনি আমাকে। তবে বিশ্বাস করুন পাঠক, এরকম নাম, চেহারা আর পারিবারিক পটভূমি থেকে উঠে আসা একজন তস্কর, সুদীপদার আগে অথবা পরে আর কখনও এই অধম প্রতিবেদকের চোখে পড়েনি।
কলকাতায় এসে সুদীপদা প্রথমে উঠেছিল এলিয়ট রোডে হাজি মহম্মদ মহসিন স্কোয়্যার, এলাকার ভাষায় ‘গোলতালাও’-এর ফুটপাথে। সেখানে ওর সঙ্গী কাম মেন্টর ছিল সাঁতাল মিয়াঁ। আদতে ওড়িশার কটক জেলার মুসলমান। সাঁতাল মিয়াঁর হাত ধরেই চুরির লাইনে হাতেখড়ি সুদীপদার। ওদের অপারেশনের এরিয়া ছিল ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, এলিয়ট রোড থেকে শুরু করে পার্ক স্টিট, থিয়েটার রোড হয়ে ক্যামাক স্ট্রিট, বিশপ লেফ্রয় রোড অঞ্চলের ধনী গৃহস্থের বাড়ি আর অফিসগুলো। সাঁতাল মিয়াঁর গুরু ছিল দোখনো লাইনে মগরার সন্নিসি মণ্ডল। সন্নিসির গুরু ঘুঁটিয়ারির মোবারক আলি। তিরিশ, চল্লিশ, পঞ্চাশ দশকে দখিন লাইনে ধনী গেরস্তর হাড়ে কাঁপ তুলে দেওয়া দুই কিংবদন্তী চোর।
চুরি করতে যাওয়ার আগে সারা গায়ে কষে দলাইমলাই করে তেল মেখে নিত ওরা, যাতে জাপ্টে ধরলেও পিছলে বেরিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে সিঁধকাঠি। সে সময় চুরির প্রধান অস্ত্র। ড্রিলিং রডের মতো আগার দিকটা পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে ছুঁচোল করা। গভীর রাতে গেরস্ত বাড়িতে সবাই যখন গভীর ঘুমে অচেতন, তখন অতি সাবধানে, খুব ধৈর্য এবং যত্ন সহকারে সিঁধকাঠি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বিশাল হাঁ করে ফেলা হত দেওয়ালে যাতে অনায়াসে ভিতরে গলে যাওয়া যায়। যদিও এসব তথ্যের বেশকিছু আগেই জানা ছিল বাঁকাউল্লার দপ্তর, প্রিয়নাথ দারোগার ডায়েরি, মনোজ বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র, সমরেশ বসু, ডঃ পঞ্চানন ঘোষালদের লেখা পড়ে। কিন্তু জানা ছিল না চোরের গুণিন, ধোঁয়া দেওয়া, তাগা ধারণ, মন্তর বাঁধা আর বাজবরণের আঠার ইতিহাস। জানা হত না সুদীপদার সঙ্গে আলাপ না হলে।
চোরের গুণিন। সেসময় সন্নিসি, মোবারকদের মতো ডাকসাইটে নিশিকুটুম্বদের একটা বিশাল ভরসার জায়গা ছিল এইসব তান্ত্রিক গুণিন বা ওঝারা। ওরাই শেখাত কীভাবে নিশাদলের গাঁট, বিষমেটেলির শেকড়, এরকম আরও একাধিক জানা অজানা বিষাক্ত জড়িবুটি পুড়িয়ে ঠিকঠাক পরিমাণমত ধোঁয়া দিলে গোটা একটা গেরস্ত বাড়ি মড়ার মতো ঘুমিয়ে পড়ে। কীভাবে চিনতে হয় বাজবরণ (একধরনের ফণীমনসা) গাছ। কীভাবে বার করতে হয় বাজবরণের আঠা। মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে খাইয়ে দিলে কেমন বিলকুল বোবা মেরে যায় গেরস্তের তাগড়া তেজি পাহারাদার কুকুর। কীভাবে গলার ধারে বানানো থলিতে লুকিয়ে রাখা হয় হার, টিকলি বা কানের ঝুমকো, জেলখানায় কীভাবে প্লাস্টিকে পাকিয়ে পায়ুদ্বারে ঢুকিয়ে লুকিয়ে রাখা হয় পঞ্চাশ, একশো, পাঁচশো টাকার নোট, কোন মন্তরে শরীর বেঁধে নিলে বেধড়ক হাটুরে মার খেলেও এতটুকু ব্যথা লাগবে না।
আর সবার ওপর সেই মন্ত্রপূত অলৌকিক দৈব তাগা! মাইক্রোচিপের মতো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটা মাদুলি বা পুরিয়া। শরীরের একটা অংশে একটুখানি চিরে ভেতরে ঢুকিয়ে সেলাই করে দিলেই কেল্লাফতে। মেরে মেরে শরীরের প্রত্যেকটা হাড় গুঁড়ো করে দিলেও মৃত্যু হবে না কিছুতেই। আবার পুলিশ লকআপে থার্ড ডিগ্রির মহৌষধ কমপক্ষে দু’তিন বছরের পুরনো চোলাই। একটু মালিশ করে দিলেই নাকি রুলের রামঠ্যাঙানির সব যন্তোন্না গায়েব এক নিমেষে! এসব বেজায় গূঢ়, জটিল আর গোপন তথ্য শুনেছিলাম খোদ সুদীপদার মুখেই। এবং দেখেছিলাম গুরু এবং গুরুর গুরুদের কাছে শোনা উপরোক্ত ওইসব তত্ত্ব এবং তথ্যগুলো কি আশ্চর্যজনক দৃঢ়তায়, বেদবাক্যের মতো বিশ্বাস করে ও।
এই পর্যন্ত পড়ে পাঠকদের মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগতে পারে, সুদীপদার মতো এহেন একটি চরিত্রের সঙ্গে আমার আলাপ হল কী করে? আর সেই আলাপ কতটা ঘনিষ্ঠ পর্যায়ে পৌঁছলে এভাবে মনের চোরকুঠুরিতে আত্মগোপন করে থাকা চূড়ান্ত সব ট্রেড সিক্রেটের দরজা খুলে দেওয়া যায় হাট করে? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে পিছিয়ে হবে অনেকগুলো বছর। তিন দশকেরও বেশি।
সেটা ৯০-এর দশক। করোনা তখনও ভাবীকালের গর্ভে। পৃথিবীতে অসুখের ইতিহাসে সদ্য সদ্য পা রেখেছে নতুন অভিশাপ। এইচআইভি / এইডস। একটা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার দীর্ঘ একটি প্রজেক্ট। নাম – ভালনারেবলিটি অফ এইচআইভি অ্যান্ড এইডস অ্যামং রেসিডেন্সিয়াল অ্যান্ড ফ্লায়িং সেক্স ওয়ার্কার্স। সেই প্রজেক্ট নিয়ে চষে বেড়াচ্ছি গোটা দেশ।
সেসময় ফ্লাইং অর্থাৎ ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মীদের বেশ কয়েকটা জমজমাট ঠেক ছিল ময়দান চত্বর জুড়ে, রাজস্থান আর ক্যালকাটা জুডো ক্লাবের মাঝখানের গলিতে, ভেটারেন্স ক্লাবের পিছনে, ফোর্ট উইলিয়ামের প্রাচীরের গায়ে, এরকম আরও একাধিক জায়গায়। কারবারটা চলত ভর দিনের বেলায়, ময়দানের ঝোপঝাড়ের আড়ালে।
ওরকমই একটা ঠেকের খুব উল্লেখযোগ্য চরিত্র ছিল সুমতি। বারিপদায় বেজায় সামন্ততান্ত্রিক পরিবারের বউ। বাপের বয়সী বুড়ো বরের ঘর আর শাশুড়ির অত্যাচার, কোনওটাই সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে এসে ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছিল কলকাতার পথেঘাটে। একই ভাষাভাষী হওয়ার ফলে সাঁতাল মিয়াঁর সঙ্গেই মাখামাখিটা বেশি হয়েছিল প্রথমে। পরে আস্তে আস্তে সেটা ঘুরে যায় স্বপনদার দিকে, মারকাটারি হ্যান্ডসাম চেহারাটার জন্যই হয়তো বা।
দিনের বেলায় সুমতির কামাইধামাইয়ের সময় ময়দানে বসে বিড়ি টানতে টানতে সামার ক্রিকেট বা সেকেন্ড থার্ড ডিভিশনের ফুটবল দেখত মন দিয়ে। গোলতালাওয়ের ফুটপাথের ঠিকানা ছেড়ে নতুন আস্তানা তখন চৌরঙ্গী রোডের ওপর একটি সিনেমা হলের এক বিহারী দারোয়ানের খুপরি কোয়ার্টার। নাইট শো শেষ হওয়ার পর দারোয়ান যখন সুমতির বিছানায় এসে উঠত, সুদীপদা বেরোত চুরি করতে। পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ সহবস্থান যাকে বলে। সেখান থেকে কীভাবে তিল তিল করে টাকা জমিয়ে মাছলন্দপুরে একতলা বাড়ি তুলে, বিঘেকয়েক চাষের জমি কিনে, গোটাকয়েক গরুছাগল, হাঁসমুরগি পুষে, চুরি আর বেশ্যাবৃত্তি ছেড়ে পাক্কা চাষিবাসি গেরস্ত দম্পতি হয়ে উঠল দুজনে, সে এক অন্য ইতিহাস। ফলে প্রসঙ্গে ফিরি আবার।
এই প্রজেক্টে ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মীদের মধ্যে আমার কাজ ছিল ওদের কাস্টমারদের মধ্যে কন্ডোম ব্যবহারের পার্সেন্টেজটা হিসেব কষে বার করা। একাজে আমার লিয়াজোঁ ছিল সুদীপদা। খদ্দের কাজটাজ সেরে ঝোপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ামাত্র মেয়েটিকে (সুমতিকেও) জিজ্ঞেস করে জেনে নিত সে কন্ডোম নিল কিনা। এভারস্মার্ট সুদীপদা। এদিকে পেটেও খানিকটা বিদ্যে থাকার ফলে ব্যাপারটা বোঝাতও খুব সুন্দর। তাই ওর সঙ্গে আমার জমে গেছিল খুব।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে ময়দানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুরন্ত আড্ডায় হাঁ করে শুনতাম পুরাতন চৌর্যবৃত্তি থেকে আধুনিক চুরিবিদ্যার দীর্ঘ বিবর্তনের ইতিহাস। পুরাকালের সেই সিঁধকাঠি কীভাবে পাল্টে গেল গামছাতে (গাড়ি থেকে বাড়ি হয়ে সিন্দুক, যে কোনও তালা নিমেষে খুলে ফেলার মাস্টার-কি), নিশাদলের গাঁট আর বিষমেটেলির ধোঁয়া কোন পথে বদলে গেল ক্লোরোফর্মে, চাকুছুরি, ভোজালি কীভাবে পরিবর্তিত হল ওয়ান শটার বা পাইপগানে, পুরনো তোড়বাজ-দের (তালা ভাঙিয়ে) নাম হালফিলে কেন হল ‘গাব্বাবাজ’ বা ‘গাব্বা ভসকান’, সাবেককালে গৃহস্থের ঘরের কোণা কোণার খবর নিশিকুটুম্বদের কাছে পৌঁছে দেওয়া আড়কাঠি আর আলতা সিঁদুর পরাতে আসা নাপতেনি মাসিরা কীভাবে হয়ে গেল বাড়িতে বাচ্চা নাচাতে আসা বৃহন্নলা বা রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে, স্তব্ধ হয়ে শোনার মতো সে এক আখ্যান বটে! তবে নিজে অন্ধভাবে বিশ্বাস করলেও ওইসব মন্তরতন্তরে শরীর বাঁধা, শরীরের ভেতর লুকোন তাগা, বাজবরণের হালহদিশ, কিছুই আমার কাছে খোলসা করেনি সুদীপদা। একটু পীড়াপীড়ি করলে একহাত জিভ কেটে মুচকি হেসে বলত- ‘গুরুর বারণ।’
কাজের ফাঁকে ফাঁকে ময়দানে ঘন্টার পর ঘন্টা দুরন্ত আড্ডায় হাঁ করে শুনতাম পুরাতন চৌর্যবৃত্তি থেকে আধুনিক চুরিবিদ্যার দীর্ঘ বিবর্তনের ইতিহাস। পুরাকালের সেই সিঁধকাঠি কীভাবে পাল্টে গেল গামছাতে (গাড়ি থেকে বাড়ি হয়ে সিন্দুক, যে কোনও তালা নিমেষে খুলে ফেলার মাস্টার-কি)
অতঃপর আসি অন্ধকারজগতের বহু পুরনো একটি ধারার প্রসঙ্গে। কেপমারি। রাস্তা দিয়ে ব্যস্ত পায়ে চলেছেন কোনও কাজে। হঠাত্ পিছন থেকে উদ্বিগ্ন গলার হাঁক- “ও মশাই! কীরকম মানুষ আপনি? পিঠটা কীরকম কেটে গেছে, কিচ্ছু টের পাচ্ছেন না!” চমকে উঠে পিঠে হাত দিয়ে দেখলেন সত্যিই হাতটা চ্যাটচ্যাট করছে কাঁচা রক্তে। ততক্ষণে আপনাকে ঘিরে জড় হয়ে গেছে আরও কয়েকজন। প্রত্যেকেই চরম উদ্বিগ্ন আপনার এই অবস্থায়। ওষুধের দোকানে গিয়ে ওষুধপাতি লাগানোর পরামর্শও দিচ্ছেন অনেকে। এই এতশত উপদেশ পরামর্শের ধাক্কায় আদৌ কোনও জ্বালাযন্ত্রণা হচ্ছে কিনা, সেসব বোধ হারিয়ে ফেলে পড়ি কি মরি ছুটলেন ওষুধের দোকানে।
পৌঁছেই সব রহস্যের পর্দা ফাঁস! আদৌ কোথাও কাটেনি। তড়িঘড়ি পকেটে হাত দিতেই শিরে বজ্রাঘাত! পকেটের মানিব্যাগটা উধাও। সঙ্গে সাধের কেনা দামী ঝর্ণাকলমটাও। ব্যাপারটা আর কিছুই না, আপনাকে ঘিরে থাকা শুভানুধ্যায়ীদের ওই দলটা আসলে একটা সংগঠিত কেপমার গ্যাং। ওদের হাতেই সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে আপনাকে। তস্করবৃত্তির এই অভিনব কায়দাটা খুব প্রচলিত ছিল পঞ্চাশ, ষাট এমনকী সত্তরের দশকেও। ইদানীং বিলুপ্তপ্রায় পর্যায়ে চলে গেলেও একটু চেহারাচরিত্র বদলে ময়দানে ফিরে এসেছে নতুন কায়দায়। ঘটছে মূলত শহরবৃত্তে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে।
রাস্তা দিয়ে চলেছেন সালঙ্কারা কোনও সুবেশিনী। সামনে এসে দাঁড়াল স্বাস্থ্যবান চেহারার কয়েকজন। পরিচয় দিল আইনরক্ষক। ‘এত দামী গয়নাগাটি পরে এভাবে রাস্তায় ঘুরছেন কেন?’ – জাতীয় মৃদু ধমক আর সুপরামর্শ দিয়ে, সব গয়না খুলিয়ে, কাগজে মুড়ে ব্যাগে ঢুকিয়ে দিল নিজেরাই। বাড়ি ফিরে এসে দেখা গেল মোড়কের ভিতরে ফুটপাথের গিল্টি করা দশ-পনেরো টাকার হার, দুল আর চুড়ি। উক্ত দুটো ঘটনাই আদি ও অকৃত্রিম হাতসাফাইয়ের খেল। কায়দাকৌশল একটুআধটু বদলেটদলে গেলেও উদ্দেশ্য সেই চিরন্তন! নিখাদ লুণ্ঠন বা চৌর্যবৃত্তি।
তবে এখনকার সময়টা অনেক বেশি আধুনিক। গোটা বিশ্বই এখন একটা বাজার। খাবার থেকে খবর- সবকিছুই পণ্য। প্রতি মুহূর্তে পাল্টে যাওয়া এই বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল রেখে ধারা বা চেহারা বদলাচ্ছে অন্ধকার জগতও। পুরনো কায়দার চুরি, ডাকাতি, জালিয়াতি, চিটিংবাজির জায়গায় অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি এটিএম হ্যাকিং, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণখেলাপি হয়ে বিদেশে পলায়ন, এসবই এখন অপরাধের নতুন সংজ্ঞা। হোয়াইট কলার বা জেন্টেলমেন’স ক্রাইম, ভাবীকাল বইবে তস্করবৃত্তির এই নতুন খাতেই। এমনটাই ধারণা এই প্রতিবেদকের।
সংযোজন- তস্করদের খবরদাতা হিসাবে কিছু গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এ লেখায়। এখানে স্পষ্টভাবে যেটা বলা দরকার, এদের অধিকাংশই এধরনের অপরাধ বা অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। আবার একইসঙ্গে এইসব গোষ্ঠীর একটি ক্ষুদ্রাংশের নামে এই অভিযোগ উঠেছে বারবার। তবে তার জন্য কোনও এক অথবা একাধিক গোষ্ঠী বা পেশার সমস্ত মানুষকেই অপরাধীর আসনে বসিয়ে দেওয়া যায় না। চিরশাশ্বত সত্য এটাই।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তর কলকাতার পুরোনো পাড়ায়। বহু অকাজের কাজী কিন্তু কলম ধরতে পারেন এটা নিজেরই জানা ছিল না বহুদিন। ফলে লেখালেখি শুরু করার আগেই ছাপ্পান্নটি বসন্ত পেরিয়ে গেছে। ১৪২১ সালে জীবনে প্রথম লেখা উপন্যাস 'দ্রোহজ' প্রকাশিত হয় শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায় এবং পাঠকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে। পরবর্তীতে আরও দুটি উপন্যাস 'জলভৈরব' (১৪২২) এবং 'বৃশ্চিককাল' (১৪২৩) প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে পুজোসংখ্যা আনন্দবাজার এবং পত্রিকায়। এছাড়া বেশ কিছু প্রবন্ধ এবং দু চারটি ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা আর লিটিল ম্যাগাজিনে। তার আংশিক একটি সংকলন বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে 'ব্যবসা যখন নারীপাচার' শিরোনামে। ২০১৭ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার।
সম্পাদনার শৈলীটা তো বহু বছর ধরে একটা ধাঁচ বা প্রোটোকল কে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যিনি প্রচ্ছদ , করেছেন এবং করে থাকেন , কিন্তু তিনি যে এই প্রচ্ছদ টি এঁকেছেন এবং গল্পটিতে অবদান রাখেন নি, সেটা কি খুব পরিষ্কার হলো ? সুপ্রিয় চৌধুরীর যত স্বল্প হোক একটা পরিচয় হলে কি খুব খারাপ সম্পাদনা হতো? এই এত সব ক্রিটিভ ক্রিয়েটিভ সম্পাদনার চাপে আমার মতো হাঁদা পাঠক বোঝে ক্যামতে ?
মাপ করবেন, আপনার বক্তব্যটি ঠিক বোধগম্য হল না। লেখক সুপ্রিয় চৌধুরী এবং অলঙ্করণ শিল্পী স্যমন্তক চট্টোপাধ্যায়ের পরিচিতি লেখার নীচেই দেওয়া রয়েছে। এর সঙ্গে সম্পাদনার কোনও সম্পর্ক নেই। এভাবেই প্রতিটি গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ এখানে প্রকাশিত হয়।
লেখক পরিচিতিটা তো আমিও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
ওঁর বক্তব্যটা একেবারেই বুঝতে পারলাম না সুপ্রিয়দা। আপনি পারলে বলে দেবেন একটু।