এক তাঁতি এবার বলল, পরিধেয় সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন।
তিনি বললেন:
তোমার সৌন্দর্যের অনেকটাই আড়াল করেছে এই পরিধেয়, অথচ তাতেও কিন্তু ঢাকা পড়েনি, তোমার যা কিছু অসুন্দর।
এই পরিধেয়র মধ্যে তুমি খোঁজো গোপনীয়তার স্বাধীনতা, কিন্তু আদপে যা জোটে, তা হল বর্ম ও শিকল।
বাতাস ও আলো যত সরাসরি স্পর্শ করে উন্মুক্ত ত্বক, তার সিকিভাগ স্পর্শও তো সে ত্বক পায় না, যখন ওই অঙ্গবাস তোমার শরীরে।
সূর্যলোকে আছে জীবনের শ্বাস, আর বাতাস হল তার হাত।
তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে যে “উত্তুরে হিম-বাতাসই তো এই পরিধেয় আমাদের দিয়ে বোনায়”,
আর আমি বলব, হ্যাঁ ঠিকই এবং তা সব সময়তেই ওই উত্তরের বাতাস।
কিন্তু একই কথা তো প্রযোজ্য, তার ওই তাঁতযন্ত্রটি সম্পর্কে এবং সেটিতে বোনবার ওই নরম সুতা- তন্তুগুলির ক্ষেত্রেও।
তাই কাজ শেষ হয়ে গেলেই সে অট্টহাসি হাসে জঙ্গলে ।
ভুলে যেও না যে, অপরিচ্ছন্নের চোখকে আড়াল করবার বর্মই হল বিনয়।
কিন্তু সেই অপরিচ্ছন্নতা দূর হলে, ওই বিনয়ই কি তখন এক চরম বাধা এবং মনের দূষণ হয়ে দাঁড়াবে না?
ঘুণাক্ষরেও এ কথা ভুলো না যে, পৃথিবীর স্পর্শ সুখই হল, তোমার ওই অনাবৃত পায়ের পাতা দু’টি, আর বাতাসও তো ব্যাকুল হয়ে আছে তোমার মাথার চুলগুলি নিয়ে খেলতে।