শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৮)

“কে যায়?” দুর থেকে বাজখাই গলায় হাঁক পাড়ল কেউ। একটু এগিয়ে গিয়ে ঠাহর করতেই নজরে পড়ল হাত নেড়ে ওদের ডাকছে পাঁচকড়ি সর্দার। পাঁচকড়ি, আশপাশের দশবিশটা গাঁয়ের লোক থরথর করে কাঁপে ওর নামে। দুনিয়ার যত বাঘা বাঘা লেঠেলদের সর্দার।…
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৫)

পরমুহূর্তেই “হা রে রে রে রে” ভয়ঙ্কর বজ্রহুঙ্কারে কেঁপে উঠলো নীলের জঙ্গল। পালকির ভিতরে ভূপতি রায়ের মনে হল গোটা জঙ্গলটাই যেন ভেঙে পড়ছে মাথার ওপর। কুলকুলি শোনামাত্র গাছ থেকে লাফিয়ে মাটিতে নেমে পড়েছে দলের ছেলেরা। ভোজপুরি সেপাইরা তো আগেই ফৌত হয়ে গেছিল। বাকি চল্লিশজনের লেঠেল ফৌজ খড়কুটোর মত উড়ে গেল বিশ্বনাথের দলবলের সামনে।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৪)

“জয় মা কালী।” রক্তচোখে স্যাঙ্গাতদের দিকে তাকিয়ে ফের একবার হুঙ্কার ছাড়লো বিশ্বনাথ। “ফেরাসনে মা হাতখালি/একশো পাঁঠা দেবো বলি।” প্রত্যুত্তরে সমবেত গলায় বজ্রগর্জন উঠলো রাতের নিস্তব্ধতা চিরে। এক এক করে সামনে এগিয়ে আসতে লাগলো দলের লোকেরা। বাটিতে তর্জনী চুবিয়ে সবার কপালে রক্ততিলক এঁকে দিলো বিশ্বনাথ।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৩)

ধীর পায়ে খাজাঞ্চিখানা থেকে বেরিয়ে দোতলার সিঁড়ি ভেঙে অন্দরমহলের দিকে পা বাড়ালেন ভূপতি রায়। একটা চাপা খুশির ছাপ চোখেমুখে। আদায় পত্তর ভালোই হয়েছে এবার। কেষ্টনগরে কোম্পানির ঘরে খাজনাটাও পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে সময়মতো। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, ঠারেঠোরে খবর পাচ্ছেন ছোট তরফের ওই নেপোটা, সে ব্যাটার নাকি হাঁড়ির হাল এবার। খাজনার টাকা দিতে পারবে না শোনা যাচ্ছে। তা পারবে কী করে? জুয়ো আর মদ-মাগীতে টাকা উড়িয়ে দেউলে একেবারে।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২)

লোকের মুখে খবর পাচ্ছি আপনার সাতটা গাঁয়ের মধ্যে নসিবপুর মৌজাটা নাকি ওই নীলকর ফেডি সায়েবের কাছে দাদন দেয়ার বন্দোবস্ত করছেন আপনি। এ কাজটা করবেন না। আপনি অত্যাচারী ঠিকই, কিন্তু এই নীলকর সায়েবরা নরপিশাচ একেবারে। বাপঠাকুরদার আমলের প্রজাদের মানুষখেকোদের হাতে তুলে দেবেন না, দোহাই আপনার।