গুরু দত্ত— ক্ষণজন্মা প্রতিভা শেষ হয় নেশা, নৈরাশ্য আর নারীসঙ্গে

এরপর গুরু দত্ত বানালেন ‘কাগজ কে ফুল’। ছবির প্লট যেন গীতা, গুরু আর ওয়াহিদার গল্পই পর্দায় নিয়ে এল। ছবি সেভাবে সাফল্য পেল না বক্সঅফিসে, তবে গীতার আকুতি ভরা কণ্ঠের গান— “ওয়াক্ত নে কিয়া কেয়া হাসি সিতম’ দুলিয়ে দিল সারা ভুবন।
অভিনেতা হিসেবে গুরু দত্তর আরেকটি উল্লেখযোগ্য ছবি ‘সতেলা ভাই’। এটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বৈকুণ্ঠের উইল’ অবলম্বনে হিন্দি চলচ্চিত্র। বাঙালি চরিত্রে বারবার ফিরে এসেছেন গুরু। এই রোল পরে বাংলা ছবিতে দুবার জহর গাঙ্গুলি, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করেছিলেন।
গুরু দত্তের জন্মদিনে লিখলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়…
ফ্লার্ট করতে গিয়ে মৃণাল সেনের নজরে, নকশাল তকমা মুছে দিল রুপোলি পর্দা

প্রথম ছবি ‘মৃগয়া’-তেই মিঠুন জিতে নেন সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সে বছর মিঠুনকে সেরা অভিনেতার পুরস্কার দেয় রবীন্দ্র সদনে। সেই অনুষ্ঠানে সেরা শিশু অভিনেতার পুরস্কার পান অরিন্দম গাঙ্গুলি ‘হংসরাজ’ ছবির জন্য। দেশ ও রাজ্য দুয়েতেই পুরস্কৃত হন মিঠুন। রাষ্ট্রীয় সম্মান পেলেও স্ট্রাগল কিন্তু কমলো না।
মৃত্যুর দশ বছর পর ঋতুপর্ণ শুধুই কি সমকামের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর?

ঋতুপর্ণ কিন্তু তাঁর ছবিগুলির মধ্যে নিজের কথাই বারবার বলেছেন। ‘উনিশে এপ্রিল’-এর মিঠু দেবশ্রী রায়, ‘বাড়িওয়ালি’র বনলতা কিরণ খের বা ‘দোসর’-এর কাবেরী কঙ্কনা, যেই হন, আদতে সে ঋতুই। আসলে ঋতুও অভিমানে দুঃখে একইভাবে কাঁদত। ঋতু কাঁদলে মুঠো করে হাতটা সামনে চলে আসত। যেন নিজেকেই আয়নায় দেখতেন ঋতুপর্ণ। শেষ দেখা দেখলেন চিত্রাঙ্গদার সঙ্গে নিজের অস্তিত্বের লড়াইয়ের তুলনা করে। ঋতু বললেন পুরুষসিংহ নয়, সিংহবাহিনী হতে চাই।
ঋতুপর্ণর মৃত্যুদিনে তাঁর ব্যক্তিত্বের নানা দিক নিয়ে আলোচনায় শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়…
অভিনেতার আড়ালে থাকা পরিচালক বিকাশ রায়

হিংলাজ মাতার দুর্গম দর্শন নিয়ে ছবি। অভিনয়ে উত্তমকুমার, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এই সময় কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে উত্তম-সাবিত্রীর প্রেম ভেঙে গেছিল। তবু দৃশ্যে উত্তমের কোলেই সাবিত্রীকে পড়তে হবে। সেই দৃশ্য দুজনেই অনবদ্য করেছিলেন নিজেদের ব্যক্তিগত অভিমান দূরে রেখে। ছবির শেষে সাবিত্রী ওরফে কুন্তীর থিরুমল (উত্তমের চরিত্র-নাম) বলে একটা চিৎকার করে ডেকে ঝাঁপ দেবার দৃশ্য ছিল। বিকাশ রায় সাবিত্রীকে নির্দেশ দেন গায়ের যত শক্তি আছে তত জোরে চিৎকার করতে। সাবিত্রী বলেছিলেন “বিকাশদা আমার গলার শিরা ছিঁড়ে গেলে অন্য ছবি বা মঞ-নাটক আর কোনওদিন করতে পারব?”
লিখলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়…
উত্তমকুমার বাদ পড়লেন, মহাপ্রভু চৈতন্য হলেন বসন্ত চৌধুরী

বাংলা ছবিতে, ছবি বিশ্বাসের পর, ক্লাস কী জিনিস বুঝিয়ে দিলেন বসন্ত চৌধুরী। তিনি যেন ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছিলেন রাজা রামমোহন রায় রূপে। এমন অবিকল ‘রামমোহন’ আর কেউ হতে পারেননি, হতে পারবেনও না। বসন্ত চৌধুরী যেন রামমোহন রায়ের আরেক নাম। ঐ দৃঢ়চেতা ব্রাহ্ম ব্যক্তিত্ব, সুপুরুষ চেহারা, সঙ্গে আভিজাত্যের মিশেল— এমনটা বসন্ত চৌধুরীই আনতে পেরেছিলেন। আসলে বসন্ত চৌধুরী যতখানি বাঙালি, ততখানি সাহেবও। তাই সবটাই তাঁর হাতের মুঠোয় থাকত। জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চেও ‘রাজা রামমোহন’ সেরা বাংলা ছবির শিরোপা পায় এবং বিএফজেএ-তে সে বছর সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান বসন্ত চৌধুরী।
বসন্ত চৌধুরীর জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে লিখলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়.
উত্তমের নায়িকা হতে সত্যজিৎকে ‘না’, সত্তরের সাহসিনী আরতি ভট্টাচার্য

সাত-সাতটি ছবি আরতি করেছেন উত্তম কুমারের সঙ্গে। তার মধ্যে দুটি শ্রেষ্ঠ ছবি ‘স্ত্রী’ এবং ‘আমি সে ও সখা’। ‘আমি সে ও সখা’র খল চরিত্রটি আরতি করতে চাননি। কিন্তু উত্তমের অনুরোধে রাজি হন। এই চরিত্র করে আরতি শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রীর বিএফজেএ পুরস্কার পান। ছবিতে উত্তমের সঙ্গে আরতির একটি চুম্বন দৃশ্য ছিল। আরতিকে উত্তম দেখিয়ে দিয়েছিলেন ক্যামেরার সামনে মাথা পিছনে রেখে কীভাবে চুমু খাওয়া সামলাতে হয়।
লিখলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়…