জীবন থেকে জীবনে: পর্ব ১৫

Pundit Ravishankar playing

রবিশঙ্কর ওঁর জন্মদিনের আসর শেষ করেছিলেন অতি মধুর ও রোমান্টিক পঞ্চম সে গারা বাজিয়ে। হল সেদিন ভেঙে পড়ছিল ‘আ হা হা!’ ও হাততালিতে। পণ্ডিতজি থেকে রবুদা হওয়ার গল্প শংকরলাল ভট্টাচার্যের কলমে। পর্ব ১৫।

ঈশ্বর এ রকমই দেখতে

Ravishankar portrait by Syamantak Chattopadhyay

মাঝরাতের কিছু আগে পণ্ডিতজি বসলেন বাজাতে। আমি অনুভব করলাম একটা রাত কী করে তৈরি হয়। একটু একটু করে কালো থেকে গাঢ় নীল থেকে আরও গভীর কোনও বর্ণহীন রাত। মোহিত ছিলাম। মোহভঙ্গ হল, যখন দেখলাম চ্যাপেলের ছাদের কাছের অনেক উঁচু প্য়ানেল দিয়ে ভোরের আলো এসে পড়ছে। সেতারে তখন ভৈরবী। সে ভোরও তৈরি করছেন পণ্ডিতজি। ভোরের যেন একটা গন্ধও ছড়িয়ে পড়ছে সুরের সেই মূর্ছনা থেকে।

ঈশ্বরকণা

https://satyagrah.scroll.in/

তাঁর মতো রসিক মানুষও কম আছে। ওঁর বাড়ির কাছে একটা বড় মাঠে খুব বড় হ্যালোউিন-এর পার্টি হত। দু-তিন বার আমি আর বিক্রমও গিয়েছি। এবং ভাবলেও অবাক লাগে, জ্যাঠামশাই, চিন্নামা, অণুষ্কা, আমি, বিক্রম—সবাই আমরা অদ্ভুত সমস্ত পোষাক পরে দারুণ হুল্লোড় করেছি। কেউ পাইরেট, কেউ ভূত, কেউ পেত্নি সেজে মহানন্দে মেতে উঠেছি।

বিশ্বজন মোহিছে

pandit ravishankar

রবিশঙ্কর আজীবন ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের প্রতি থেকেছেন শ্রদ্ধাশীল। আর বারে বারে পাশ্চাত্যের উপযোগী করে তাকে পরিবেশন করেছেন। আবার জাপানি সঙ্গীতের সঙ্গে তাকে মিলিয়েও, দুই দেশের বাদ্যযন্ত্রের সম্মিলিত ব্যবহার করে নিরীক্ষা করেছেন। সারাক্ষণ, সব শুচিবায়ু ভেঙে, তিনি মেলানোর, মেশানোর, চেষ্টার, কৌতূহলের রাজ্যের বাসিন্দা হতে চেয়েছেন। এই প্রাণশক্তি আর প্রতিভার মিশ্রণেই, তিনি বিদেশের কাছে ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের মুখ। আর ভারতের কাছে, পাশ্চাত্যের জৌলুসযুক্ত তারকা।

মীড় দিলে নিষ্ঠুর করে…

pandit ravishankar

রবিশঙ্কর তাঁর গুরু আচার্য আলাউদ্দিন খানের তালিম মাফিক শুরু করলেন বিলম্বিত তিনতালে গৎ বাজানো। এবং আজীবন কর্ণাটকী সঙ্গীত পদ্ধতিতে বিশ্বাসী থাকার দরুণ তিনি সেই গতে লয়ের মারপ্যাঁচ, অঙ্কের হিসেব, তেহাই ইত্যাদি নিয়ে এলেন। এতে তাঁর বাজনায় আমরা পেলাম সুরের সঙ্গে তাল-লয়ের অসামান্য সামঞ্জস্য।