উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২২

Novel Akashpradip part 22

সুন্দরী হিসেবে দিদির খ্যাতি ছিল৷ কুড়ি বছর বয়সে দিদির ছবি ‘ফেমিনা’তে কভার হয়েছিল৷ দিদির প্রথম বিয়ে হয় ডাক্তার এ সি রায় বা অম্বিকাচরণ রায়ের সঙ্গে, কলকাতা সার্কিটে আপ অ্যান্ড কামিং ডাক্তার হিসেবে যার তখন প্রচুর খ্যাতি আর সম্মান৷ বিয়ের পরের বছরই সীমন্তিনীর জন্ম৷ দিদির তখন সবে তেইশ আর আমার আঠেরো৷ সীমন্তিনীর জন্মের বছরখানেক পরেই কলকাতায় আসেন ইংল্যান্ডের এক নামকরা থিয়েটার পার্সোনালিটি ডেভিড ব্রুক৷ ইনি ডক্টর রায়ের পূর্বপরিচিত৷ কলকাতায় শেক্সপিয়রের থিয়েটার প্রোডাকশনের কাজে ইনি কয়েকজন অ্যাসিস্ট্যান্ট খুঁজছিলেন৷ আমার দিদি রাধিকা ওঁকে সাহায্য করার কাজে যোগ দেয় এবং অচিরেই দুজনের মধ্যে তুমুল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২১

novel Akashpradip Part-21

সীমন্তিনী লক্ষ করেছিল অরুণাভ কষ্ট করে সহজ হচ্ছে বৃন্দার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে৷ অরুণাভকে কোনও অস্বস্তিতে ফেলতে চায়নি ও৷ কথা ঘুরিয়েছিল ওর মা-বাবা-বোনের প্রসঙ্গে৷ দমদমের বাড়ি থেকে কবে ইংল্যান্ডে গেল, জিনিয়ার জন্ম, আমেরিকায় চলে আসা, একটা সুখী পরিবারে বড় হয়ে ওঠা- সব কিছুই যেন সীমন্তিনীর অভিজ্ঞতা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা৷ ওর আশপাশে চেনা যাদের দেখেছে, তাদের থেকে যেন অনেকই আলাদা অরুণাভ, প্রতিদিন নতুন করে মনে হচ্ছিল সীমন্তিনীর৷ ওর ক্ষতটায় যেন অদ্ভুত একটা প্রলেপের কাজ করছিল অরুণাভ৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২০

Novel Akashpradip part 20

কুড়ি বছরে যখন সিমোন প্রথম এখানে আসে, তখন প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হয়েছিল অ্যাডজাস্ট করতে৷ মনে হত একছুটে চলে যায় স্কটল্যান্ডের ফেলে আসা ওই একচিলতে বাড়িটায়, যে বাড়িটায় ও আর ওর মা পনেরো বছর ধরে ভাড়া ছিল৷ মা যখন ভায়োলেন্ট হয়ে গেল, তখন ল্যান্ডলেডিই ফোন করেছিল মানিকে৷ সিমোন তখন রিহ্যাবে৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৯

Novel Akashpradip Part-19

শতমুখে বৃন্দার কথা বলছিলেন অরুণলেখা৷ হ্যাঁ, হুঁ বলে কোনওরকমে শুনেছিল সীমন্তিনী৷ বলতে পারেনি বৃন্দা ওর নিজের মাসি৷ জ্যোতির্ময় আর অরুণলেখা বরাবর জেনে এসেছেন সীমন্তিনী শৈশবে মাতৃহারা৷ সীমন্তিনীর ইদানীং মনে হয় – ওর মায়ের পুরো গল্পটা যদি জানতেন ওর শ্বশুর-শাশুড়ি, তবে কী প্রতিক্রিয়া হত ওঁদের?

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৮

Novel Akashpradip Part-18

সন্তান হিসেবে রুণের এক ধরনের ভালবাসার দাবি রয়েছে জিনিয়ার প্রতি৷ নাকি নির্ভরতাবোধ? বিয়াট্রিসেরও এই এত বছরে এক ধরণের অধিকারবোধ জন্মেছে জিনিয়ার উপর৷ বিবাহ-বিচ্ছেদের পর থেকে অ্যালেক্সের জীবনটা আলাদা হয়ে গেছে৷ ওর নতুন জীবনযাত্রা, নতুন প্রাত্যহিক রুটিন মেরি জানে৷ অ্যালেক্সের স্ত্রী৷ বহুদিন ধরে জিনিয়ার চলার পথ আলাদা৷ সেজন্য জিনিয়ার কোনও দুঃখবোধ নেই৷

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিমাল ফার্ম’: পর্ব ১৫

Orwell's Animal Farm 15

ঠিক পরদিন সকাল থেকেই আক্রমণ শুরু হল। জন্তুরা তখন সবেমাত্র জলখাবারে মুখ দিয়েছে এমন সময় পাহারাদারেরা ছুটতে ছুটতে এসে খবর দিল যে, ফ্রেডরিক আর তার দলবল পাঁচ-গরাদের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছে। জন্তুরা তৎক্ষণাৎ হই-হই করে ছুটে গেল ওদের আটকানোর জন্য। কিন্তু গোয়ালঘরের যুদ্ধে যতটা সহজে জেতা গিয়েছিল, এবার কিন্তু তেমনটা হল না। উল্টো দিকে পনেরোজন মানুষের দল, তাদের সঙ্গে আবার হাফ ডজন বন্দুক৷ পঞ্চাশ গজের হাতার মধ্যে কোনও একটা জন্তুকে পেলেই তারা দমাদ্দম গুলি চালিয়ে দিচ্ছে…
জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা তর্জমা অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। পর্ব ১৫

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৭

Novel Akashpradip part-17

তখন আই.বি. ডিপার্টমেন্ট আমাদের মতো বেশ কিছু ছেলেমেয়েকে ব্ল্যাকলিস্ট করেছে, নকশাল মুভমেন্টে মদত দিচ্ছি বলে৷ পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই ওয়েন্ট অ্যাব্রড৷ আমিও তাদের মধ্যে ছিলাম৷ আমার বাবার টাকারও অভাব ছিল না, কানেকশনেরও না৷ পেপার্স রেডি করতে বাবার সাত দিনও লাগেনি৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৬

Novel Akashpradip part 16

বৃদ্ধ মানুষটি কিছু যেন বলতে চাইছিলেন বাবার কাছে৷ দাদু তাঁর একমাত্র জীবিত ছেলের কাছে ওই অব্যক্ত চাউনি দিয়ে কী বলতে চেয়েছিলেন কে জানে? পরে ঐ দৃষ্টি মনের মধ্যে হন্ট করেছে অনেকবার৷ তার চেয়েও বেশি ওর মনে হচ্ছিল বাবার কথা৷ জ্যোতির্ময়ের দুচোখ বেয়ে জল পড়ছিল৷ আর তাঁর বাবার দুটি হাত নিজের হাতের মধ্যে জড়িয়ে ধরেছিলেন তিনি৷
…অপরাজিতা দাশগুপ্তের উপন্যাস আকাশপ্রদীপ, পর্ব ১৬