মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ১৩

যেহেতু সরস্বতী প্রেসে একমাত্র ইউনিয়ন হচ্ছে সিটু, সেখানে যাঁরা ছিলেন তাঁরা বললেন— না, আমরা এর থেকে সরে আসব না। আমি বললাম যে, দেখুন আর কোনও প্রেসে সাবসিডাইজ়ড ক্যান্টিন নেই যেখানে ৬ আনাতে ভাত, ডাল, মাছ খাওয়া যেত। ১৯৭১-’৭২-’৭৩-এ আমি নিজেও সেখানে খেয়েছি। আমরা অনেক জায়গায় মাইনে বেশি দিচ্ছি, কতগুলো জায়গায় কম ছিল ঠিকই। কিন্তু প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রির যা অবস্থা, তাতে সেটা দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা মানলেন না। স্ট্রাইক চলল। প্রথমে তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন মোরারজি দেশাইকে দিয়ে অধিগ্রহণ করানোর জন্য সই করাতে। সেন্ট্রাল মিনিস্ট্রির একটা সই লাগে। সেই সইটা মোরারাজি দেশাই করেননি। হল কখন, যে সময় চরণ সিং-এর মিনিস্ট্রি ছিল। পার্লামেন্ট বসেনি।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ৮

এই বইগুলো যখন করছেন বাবা, তখন সুখলতা রাও বাবাকে চিঠি লিখেছিলেন। সুখলতার বিয়ে হয় ডক্টর দিনকর রাওয়ের সঙ্গে। সুকুমার রায়ের দিদি সুখলতা রাও তো, উনি ওই পরিবারের গুণগুলো পেয়েছিলেন। উনি বাবাকে লেখেন— “আপনি এত ভালো ভালো বই করছেন, আমাকে কাজে লাগান।”
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ৭

বাবা তখন পরিকল্পনা করছেন একটা বই করার। একটা পশু-পাখিদের নিয়ে আর একটা মানুষদের নিয়ে। বাবা ছড়া ঠিক করলেন। সবই প্রচলিত ছড়া। প্রতুলবাবু কিন্তু দেরি না করেই এঁকে দিলেন। নরেনবাবু এঁকে দিতে একটু দেরি করলেন। সেই জন্য প্রতুলবাবুর বইটা ‘ছড়ার ছবি-১’ বলে ১৯৪৯ সালে ছাপা হল। তার কারণটা হচ্ছে ১৯৪৯ সালেই সরস্বতী প্রেস অফসেটের জন্য ক্র্যাবট্রি সিঙ্গল কালার মেশিন আমদানি করেছিল। ওই মেশিনে বইটা ছাপা হল।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ৬

উদ্বাস্তু মানুষ আসতেন, শিয়ালদাতে নামতেন। ‘বরিশাল সেবা সমিতি’র একটা ব্যানার টাঙানো থাকত। বাবা ভলান্টিয়ার রেখেছিলেন। যাঁরাই আসতেন বরিশাল থেকে, তাঁরা ওখানে দাঁড়াতেন। ভলান্টিয়াররা তাঁদের জিনিসপত্র তুলে এনে তাড়াতাড়ি করে শিয়ালদা থেকে সরস্বতী প্রেসে তুলে দিয়ে আসত। লঙ্গরখানায় পৌঁছে দিত। সেখানে তখন লঙ্গরখানা ছিল।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ৪

প্রোডাকশনে কম্প্রোমাইজ নয়, সময়ে কম্প্রোমাইজ নয়। সরস্বতী প্রেসের সুনামটা কেন? বিভিন্ন প্রেসে কথার খেলাপ হত ভীষণ বেশি। আজকে দেবে বলে আজকে দিত না। দু-দিন বাদে দেবে বলে দু-দিন বাদে দিত না। বাবার নীতিটাই ছিল⎯ না-খেয়ে হোক, রাত জেগে হোক, যদি কথা দিয়ে থাকি সেটা রাখব। সেই সময় সবাই সরস্বতী প্রেসকে কাজটা দিতে চাইত। কারণ ঠিক-ঠিক সময়ে সে কাজটা ডেলিভারি করত।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ৩

এই গোপীনাথ সাহা ১৯২৪ সালের ১২ জানুয়ারি চৌরঙ্গী অঞ্চলে কলকাতার অত্যাচারী পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্টকে হত্যা করতে গিয়ে ভুলবশত আর্নস্ট ডে সাহেবকে গুলি করেন। গ্রেফতারের পর তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে অস্বীকার করেন এবং টেগার্ট হত্যাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বলে স্বীকার করে নেন। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়। সেসময় পুলিশ এসে ওই মেসবাড়ি রেড করে। বাবার লেখা একটা বই আছে ‘যথা নিযুক্তোহস্মি’, তাতে তিনি মেসে পুলিশের রেডের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, পুলিশ চলে যাবার পর তিনি গোপীনাথ সাহার একটা সুটকেস খুঁজে পান। তাতে লেখা ছিল⎯ আমি আমার রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করব।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ২

বাবার তখন মাথায় এল, তাহলে কম্পোজিংটা শিখে নিই। তখনকার দিনে এই কাজ করে মাসে ৩০-৪০ টাকা রোজগার করা সম্ভব হত। সেই আশাতেই বাবা কাজ শিখতে শুরু করেন হিতৈষী প্রেস-এ। বাবা তখন রায়পাশায় মামাবাড়িতে থেকেই কাজ করছেন। সকাল ৬ টার সময় বেরিয়ে আসতেন, দুপুর ১২টা অবধি কাজ করতেন। দুপুরে দেড় ঘণ্টা ছুটি নিয়ে মামাবাড়িতে খেতে যেতেন। আবার এসে ২টো থেকে ৭টা অবধি কাজ করতেন। মানে তাড়াতাড়ি কাজটা শিখতে হবে। বাবার ভেতরে এই ঐকান্তিক ইচ্ছাটা ভীষণভাবে ছিল।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…
মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত: পর্ব ১

বরিশাল তুঙ্গে আছে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে। ১৯০৬ সালে বরিশালে কংগ্রেসের প্রাদেশিক সভা হয়েছিল। সেই সময়ে অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ সবাই বরিশালে গিয়েছিলেন এবং তাঁরা অশ্বিনীকুমার দত্তের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখন অশ্বিনীকুমার দত্ত তাঁদেরকে আলাপ করিয়ে দেন সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলে একজনের সঙ্গে। পরবর্তীকালে তাঁর নাম হয়েছিল প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরস্বতী প্রেসের জন্মকথা, দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি দেবজ্যোতি দত্ত…