বইয়ের কথা: শোনার মতো বই

হয়তো সংবাদপত্রে প্রকাশযোগ্য একটি লেখা হিসেবে লেখা বলেই, শব্দ ও ভাবপ্রকাশের মণিমুক্তোগুলিকেই তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন এই সব লেখা লেখার সময়। যার জন্য একটি ডালপালা বিস্তার করা বনস্পতি-সুলভ লেখার হলোগ্রাম হিসেবে এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলি পড়া যায়। এ কথাও হয়তো বলা যায়, এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলির প্রত্যেকটি লেখাই পরবর্তীকালে আলাদা আলাদা গ্রন্থ হয়ে উঠতে পারে।
লিখলেন হিন্দোল ভট্টাচার্য…
কবিতার সঙ্গে বসবাস: সব্যসাচী সরকারের কবিতা

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে, কোনওদিন সামাজিকভাবে পরিণতি পাবে না যে সম্পর্ক তার অবধারিত প্রণয়বন্ধন নিয়ে এক অতলস্পর্শী খাদের ধারে দাঁড়িয়ে আছে আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীর কোথায় কোথায় কোন কোন নরনারী, তার চিরজীবী চিত্র শিলালিপিতে মুদ্রিত করে দেয় এ কবিতা। শ্লেষ-তীর্যকতায় মিশ্রিত ভাষা দ্বারা তৈরি হয়েছে মূলত আত্মব্যবচ্ছেদ ও অনিবারণীয় প্রেমার্তির এই কাব্যগ্রন্থ। আত্মব্যবচ্ছেদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে সমাজ। আমি যে সমাজের সমালোচনা করব, আমি কি সেই সমাজের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি? এই সচেতনতা কবিতাগুলিকে ছেড়ে যায় না বলেই কবিকথক নিজেকেও বিদ্ধ করতে ছাড়েন না।
সব্যসাচী সরকারের কবিতা নিয়ে আলোচনায় জয় গোস্বামী।
‘নিঃশঙ্ক: শংকর ঘোষ শতবার্ষিকী সংকলন’— একটি আলোচনা

প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের রাজনৈতিক ঘটনাবলী, চিনের বিশ্বাসঘাতকতা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান, দুই বিশ্বশক্তি রাশিয়া ও আমেরিকা ও তাদের সামরিক জোট এবং বান্দুং সম্মেলনে জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের শুরু ও শেষ এবং আরও অনেককিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন শংকর ঘোষ। সবটাই এত নির্মোহভাবে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যে, কোথাও সাংবাদিক শংকর ঘোষকে ছাপিয়ে ব্যক্তি শংকর ঘোষ উঁকি দেননি। মনে হয়নি উনি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, কিংবা কারও পক্ষ নিয়ে কিছু বলছেন। সাবলীল ঝরঝরে কেজো ভাষা, পড়লে সংশ্লিষ্ট মানুষ ও ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
সাংবাদিক শংকর ঘোষের শতবার্ষিকী সংকলন ‘নিঃশঙ্ক’ নিয়ে লিখলেন দীপংকর চক্রবর্তী…
বইয়ের কথা: বসন্ত চৌধুরী- কিংবদন্তি নায়ক, আভিজাত্য আর ঐতিহ্য সচেতন বাঙালি

সদ্য হাতে আসা ‘বসন্ত চৌধুরী: কিংবদন্তি নায়ক, আভিজাত্য আর ঐতিহ্য সচেতন বাঙালি’ বইটি সে দিক থেকে আলাদা। বাংলা ছবির স্বর্ণযুগের অন্যতম সেরা অভিনেতা বসন্ত চৌধুরীর (১৯২৮-২০০০) দুটি লেখা ছাড়া, বাকি বইটি তাঁর সহশিল্পী ও শুভানুধ্যায়ীদের স্মৃতিকথার সংকলন হিসাবেই পড়া যেতে পারে।
‘ঘন ঘন চিঠি দিয়ো, সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো’: নরেন্দ্রনাথ মিত্রের স্ত্রীকে লেখা চিঠি

ঠিক কী পড়া যায় এই বইতে? অভিজিৎ এমনি এমনি বলেননি, এ বই বাবার আত্মজীবনী। শেষ জীবনে আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছে অপূর্ণ থেকে গেছিল নরেন্দ্রনাথের। চিঠিগুলি কি সেই অপূর্ণ ইচ্ছেটাই ভরিয়ে দিয়েছে? তার আগে একটু প্রাকবিষয়ে ঢুকে যাই। ফরিদপুরের সদরদি গ্রামের নরেন্দ্রনাথ কলকাতায় এসেছিলেন বঙ্গবাসী কলেজে বি.এ. পড়তে। দুবার ড্রপ। পাশ করতে দেরি হয়ে গেছিল। ওদিকে পিতা মহেন্দ্রনাথের আতিশয্যে গ্রামের নরম সাদাসিধে ছেলে নরেনের বিয়ে ঠিক হল পাশের গ্রাম চোমোরদির ক্লাস এইটে পড়া চোদ্দ বছরের সঙ্গীতপ্রেমী ডাকাবুকো মেয়ে শোভনার সঙ্গে।
নরেন্দ্রনাথ মিত্রের ব্যক্তিগত চিঠির সংকলন ‘ননামি’ নিয়ে কিছু কথা, লিখলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য
বইয়ের কথা: মানভূম জার্নাল

মানভূম জার্নালের কবিতাগুলি পড়তে পড়তে আস্ত এক আদিবাসী গাঁও চোখের সামনে এসে পড়ে। শাল, মহুয়ার গন্ধ আর ধামসা, মাদলের সুরে আচ্ছন্ন হওয়া ছাড়া পাঠকের কোনও উপায় নেই। বাতাসে বসন্তের গন্ধ লেগে আছে এখানে। শীত যাই যাই করছে, সে বোধহয় বুঝে উঠতে পারছে না, বসন্তকে এবার জায়গা করে দিতে হবে।
…পৌষালী চক্রবর্তীর কাব্যগ্রন্থ ‘মানভূম জার্নাল’ নিয়ে লিখলেন তুষ্টি ভট্টাচার্য
বইয়ের কথা: সাম্প্রতিকতম ইতিহাসের পদচিহ্ন

আর অতিমারী ও তার প্রকোপের বিরুদ্ধে গোটা সমাজের লড়াই, সিস্টেমের লড়াই, লকডাউনের ভ্রান্তিময় পরিস্থিতি, তার তলায় এই প্রচণ্ড তাড়িত পশুর মতো অবস্থায় মানুষের সম্পর্কগুলো কী রূপ ধারণ করে? ভয়াবহ পরিণতি হয় প্রতিটি সুকুমার প্রবৃত্তিরও। মানুষ ক্রমশ প্রাইভেসি হারায়, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস চলে যায়। আদিত্য-ধৃতির সম্পর্কের ভেঙে যাওয়া স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আবার তিয়াস আর গগনের আপাতসুন্দর সম্পর্কেও বিবাহ-বহির্ভূত চোরকাঁটা টের পাওয়া যায়।
… সৌরভ হাওলাদারের বই নিয়ে লিখলেন যশোধরা রায়চৌধুরী
বইয়ের কথা: আলজিয়ার্সের একটি বইয়ের দোকান

বইয়ের দোকানের নাম জা জিওনোর এক উপন্যাস থেকে নিলেন শার্লট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কাগজের আকাল, চরম অর্থাভাব– লেখকদের রয়্যালটি দিতে পারছেন না, এক এক করে নামকরা লেখকরা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অন্য সংস্থায়– যেখানে অর্থাভাব তুলনামূলকভাবে কম। তারপর আছে মুক্তচিন্তার উপর নাৎসিবাহিনীর হস্তক্ষেপ। … লিখছেন ডাঃ শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায়।