হেয়ারড্রায়ার কিসসা (গল্প)

Illustration for short story hair dryer

মেমসাহেবের কেতাদুরস্ত স্নানঘরেই ঝুলে থাকত হেয়ারড্রায়ারটা। প্রথম প্রথম বড় লোভ হত সুদক্ষিণার। ভাড়াটে হয়ে এ বাড়িতে যবে থেকে সে উঠেছে, তবে থেকেই দেখছে সেটাকে। কিন্তু অন্যের জিনিস বলে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখবে বা নিজের চুল শুকনোর জন্য ব্যবহার করবে বলে ভুলেও ভাবেনি সে। ছুঁয়েও দেখেনি। কারণ সুদক্ষিণার মাথায় একরাশ কালো চুল নেই। এদেশে আসার আগেই সে বয়কাট করে ফেলেছে। তাই চুল শুকনোর ঝামেলাও নেই। তবুও রোজ চানঘরে ঢুকেই সুদৃশ্য বেসিন কাউন্টারের পেল্লায় আয়নার পাশে ঝুলতে থাকা হেয়ারড্রায়ারটায় চোখ পড়ে।

সোনাতরঙ্গ নদীর ধারে

Frederick Schafer Needpix

এক শীতের প্রবাসে বরফঢাকা প্রান্তরের দৃশ্যাবলীর সামনে বসে ঋতু আর রাজ, দুজনে মিলে বসন্তের অপেক্ষা করে। পৃথিবীতে এখন হিমযুগ এসেছে।

মেঘরাশি ঢেউলগ্নের মেয়ে (গল্প)

Illustration for bengali short story মেঘরাশি ঢেউলগ্ন

ইশ্‌ আজকেও এগারোটা হয়ে যাবে ফিরতে ফিরতে। মোবাইল সুইচড্‌ অফ দেখে রাহুল নিশ্চয়ই বাড়িতে ফোন করবে। পাবে না। দেখা হয় না কতদিন। আকাশে ঘন মেঘ। সেই সন্ধ্যের পর থেকেই। দমকা ঠান্ডা হাওয়ায় জানলা খোলা রাখা যাচ্ছিল না। তাই বাইরেটা দেখা না গেলেও শব্দের ঘনঘটায় বোঝা যাচ্ছিল একটা বেশ ওলটপালট হচ্ছে। এখন আবার বৃষ্টিও নেমেছে। সঙ্গে […]

চিরসখা হে (গল্প)

আমি তো রোজই স্কুলের পাশ দিয়ে যাই, জানিস। ভুল বললাম। রোজ না। মাঝেমধ্যে। ওই এরিয়ার দোকানের অর্ডার তুলতে যেতে হয়। এক এক দিন তো এক একটা এলাকা আমার। দোকানে যাই। অর্ডার তুলি। কার্ড সোয়াইপ করার মেশিনের মতো দেখতে একটা যন্ত্রে রিকুইজিশনগুলো পাঞ্চ করি। ডিস্ট্রিবিইউটারের কাছে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় সেগুলো। কয়েকদিন পরে ডেলিভারি দেওয়ার সময় আবার ডিস্ট্রিবিউটারের ছোট ম্যাটাডরে। স্কুলের পাশ দিয়ে গেলে তাকাই। তিনতলায় বারান্দার পাশের জানালাটা দেখি। ওইখানেই তো আমাদের ক্লাস নাইন। ক বিভাগ। মানে এ সেকশন। দোতলার মাঝামাঝি ওই ঘরটা। আমাদের ক্লাস সেভেন। খ বিভাগ। মনে পড়ে। ঘাড় উঁচু করে তাকালে কয়েকটা মাথাও দেখতে পাই। আমাদের তখনকার মতো ওরাও হয়তো এখন ভাবছে বড় হব কবে।

অবরোহণ

তুমি অনর্থ করার মেয়ে, আমি জানি।” বাধ্য ছাত্রীর মতো আমি একটা ছোটো ছেলের পাশে পাশে হাঁটছি। গাড়ির নম্বর মিলিয়ে সিটে বসছি। পাশে বসছে চওড়া ঠোঁটের কৃষ্ণবর্ণ তরুণ। মেরুন পাঞ্জাবির পকেট থেকে তার দু’সপ্তাহ আগের হারিয়ে যাওয়া দুলটা বার করে বলছে, “এটা আমার কাছে থাকে এখন। রোজ। আউটডোর করার সময়, ইনডোরে রাউন্ডের সময়, মাঝরাতে ডেলিভারি করানোর সময়।

সঙ্কেত (পর্ব ১)

winter bloom

ওকে প্রথম দেখেছিলাম, সেদিনটার কথা আমার আজও মনে আছে। ওর চেহারায় যে তেমন কিছু বিশেষত্ব ছিল তা নয়, কথা বলার ভঙ্গিটাও ছিল খুবই বিনীত। বরং একটু বেশি নিরীহ বলে মনে হয়েছিল আমার। অবশ্য ওর ব্যাকগ্রাউন্ড, শিক্ষা-দীক্ষা, সামাজিক পরিবেশ, যার কিছুই আমি না জেনেও কল্পনা করে নিতে পারি, ওকে নিরীহ ছাড়া আর কী-ই বা করতে পারত? […]