যত দূরেই যাই (শেষ পর্ব) (বড়গল্প)

দ্যুতিদীপা অসংখ্য মানুষের মুখ দেখতে থাকে। লিফ্টম্যানের তিতিবিরক্ত মুখ, চড়া লিপস্টিক পরা রিসেপশনিস্টের ভাবলেশহীন মুখ, এবং অগণিত নিকটজনেদের উদ্বিগ্ন, সন্ত্রস্ত মুখ। অসুখ, অর্থব্যয়, বিচ্ছেদের ভারে ক্লিষ্ট মানুষেরা অধীর অপেক্ষায় বসে থাকে এইখানে, এই লাউঞ্জে।…
দুর্জয়বাবুর দুঃসময় (গল্প)

এতদিনের ‘ফোনাসঙ্গের’ অভ্যেস থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সহজ ব্যাপার নয়। তাছাড়া দুর্জয়বাবুর একটা নৈতিক দায়িত্বও তো আছে একাকিনী নারীদের প্রতি! তার সঙ্গে যোগ হয়েছে একটা চোরা ভয়!…
সহযোদ্ধা (গল্প)

দু’জনকে যদি একসঙ্গে তাড়ানো হত তাহলে দু’জনকে এক করে দেওয়া হত। একটা ইউনিট করে দেওয়া হত। আর পার্টি সেটা চায় না। বাঘ যেমন শিকারের আগে হরিণকে একা করে দিতে চায়, পার্টিও ঠিক সেটাই চায়। তাই তোমাকে মঞ্চে নামিয়ে এই নাটক সাজানো হয়েছে। কিন্তু নাটকের সংলাপটা আমি একটু বদলাব। আর আমাকে হেল্প করবে তুমি। আমাকে বহিষ্কার করবে পার্টি থেকে।
কুমার বিশাখ (গল্প)

শুধু কুমারের ওদের প্রতি দুর্বলতা আছে। লাজুক ময়ূরের দৃপ্ত ভঙ্গিতে, চলার মধ্যে একটা যুদ্ধংদেহী ভাব আছে। যেভাবে ঝোপ জঙ্গল চাষের জমি থেকে বিষধর সাপ ধরে তীক্ষ্ণ ঠোঁটের আঘাতে তাকে ফালাফালা করে দেয় তা মুগ্ধ হয়ে দেখে কুমার।
টেলিপ্যাথি (গল্প)

ঠিক পরের মাসে ধুমধাম করে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সেই ডাক্তার পাত্রের সঙ্গে। ইমরান কোনওদিন জানতেও পারেনি যে তার জন্যে মনে এত আগুন নিয়ে একটি মেয়ে আরেকজনের ঘরের প্রদীপ জ্বালাতে যাচ্ছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই বাকি বছরটা ইয়াসমিন এক কলেজে থাকলেও তিনজনের খুব একটা দেখা হয়ে ওঠেনি। হোস্টেলেও আর থাকা হয়ে ওঠেনি ইয়াসমিনের। প্রতিনিয়ত স্বামীসেবা আর ঘরকন্না বাদ দিয়ে নিজের জন্যে বাঁচা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল সে ।
ইন্দিরার স্বর্গারোহণ ও তারপর (গল্প)

একদিন নিজের জগতের বাইরে গিয়ে বসার ঘরে বৌমার ছবিতে বাসি মালা দেখে কেঁপে উঠে হাঁক দিয়েছিলেন “সাধনা!” বলে। সিদ্ধেশ্বরীদেবীর এই উচ্চস্বর অনেকদিন বাদে শুনে পুরনো কাজের মেয়ে সাধনা- যে নিজেকে বাড়ির ম্যানেজার বলে পরিচয় দিয়ে থাকে, হন্তদন্ত হয়ে হাজির হল। “জানিস না, কোনও ফটোতে বাসি মালা ঝুললে বৌমা রেগে যায়!” হঠাৎ খেয়াল পড়তে কালে গোলমাল হয়ে গিয়েছে- ‘যায়’টা ‘যেতো’ হবে। চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন সিদ্ধেশ্বরী। তারপর থেকে মালাটা নিত্য আসে আর বৌমার গলায় টাটকা মালা ঝোলে।
উত্তরাধিকার (গল্প)

“সাহেব, গুড প্রন, ভেরি চিপ। একটু পাঠিয়ে দিই?” কাঠে করাত ঘষার মত গলায় নাসিমের প্রশ্নটা শুনে অ্যালেক্সের চিন্তাজাল ছিঁড়ে গেল। কতক্ষণ এখানে এসেছে সে, কে জানে? বাইরে আবার পিটপিট করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দু চারটে ল্যাণ্ডো বা হ্যাকনির শব্দও শোনা যাচ্ছে। নাকের সামনে ভনভন করে চলা মাছিদুটোকে হাত নাড়িয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করতেই, কে জানে কী বুঝে নাসিম চলে গেল।
একটা ল্যান্ডস্কেপের অক্ষরমালা

অর্ক আর ঝিলিকের সম্পর্কে লম্বা ছায়া ফেলে ঝাউবন। জঙ্গলের কটেজে কফির ধোঁয়া মিশে যায় কুয়াশায়।