জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ২১

George Orwell's Animal Farm-episode 21

আতঙ্কিত জন্তুরা গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখতে লাগল, শুয়োরের দল সারি বেঁধে উঠোন ঘিরে চক্কর দিচ্ছে৷ জন্তুদের মনে হল, পৃথিবীটা যেন উল্টে গেছে৷ প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে উঠেই জন্তুদের মনে হল এর একটা প্রতিবাদ করা দরকার। এ-ক্ষেত্রে কুকুরের ভয় আছে। তা ছাড়াও বহু বছর ধরে কোনওরকম অভিযোগ বা সমালোচনা না-করে-করে কেমন একটা জড়তাও যেন এসে গিয়েছে তাদের স্বভাবে৷ তবুও ওরা হয়তো প্রতিবাদ করত, কিন্তু সেই মুহূর্তেই কোনও একটা সংকেত পেয়ে ভেড়ার দল তুমুল হল্লা জুড়ে দিল, “চারপেয়েরা ভালো, দুপেয়েরা আরও ভালো! চারপেয়েরা ভালো, দুপেয়েরা আরও ভালো!”

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ২১

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ২০

George Orwells Animal F Farm-episode 20

খামারের ইতি-উতি এখনও লুকিয়ে-চুরিয়ে ‘ইংল্যান্ডের পশুরা’ গাওয়া হয়৷ এই গানটা খামারের সবাই মোটামুটি জানে, তবুও কেউ প্রকাশ্যে গলা ছেড়ে গাইতে সাহস পায় না৷ যদিও খামারের সাধারণ জন্তুরা বেশ কষ্ট করেই দিন কাটায়, তাদের সব আশা পূর্ণ হয় না, তবুও তারা যে বাকি জন্তুদের চেয়ে আলাদা সে-ব্যাপারে তারা বেশ সচেতন৷ তারা যদি খিদের জ্বালায় কষ্ট পায় তা হলেও সান্ত্বনা এটাই যে, অভাবটা অত্যাচারী মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য হয়নি৷

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ২০

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ১৯

George Orwells Animal Farm Episode 19

এতদূর অবধি বলে আচমকাই স্কুইলারের হাবভাব কেমন যেন বদলে গেল৷ নতুন করে কিছু বলার আগে একটু থেমে নিয়ে সে তার কুতকুতে চোখগুলোকে খুব সন্দিগ্ধভাবে এপাশে-ওপাশে ঘোরাতে লাগল৷ তারপর বলল, সে না কি জানতে পেরেছে বক্সারকে নিয়ে যাওয়ার সময় একটা বোকা বোকা মাথা-মুন্ডুহীন গুজব রটেছিল৷ যে গাড়িটা বক্সারকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছিল তার গায়ে ‘ঘোড়ার কশাই’ লেখা দেখেছে কোনও কোনও জন্তু। অমনি তারা দুম করে ধরে নিয়েছে যে, বক্সারকে বোধহয় কোতল করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কী অবিশ্বাস্য ব্যাপার! কোনও জন্তু এত গবেট হয় কী করে! তারা কি জানে না তাদের প্রিয় নেতা কমরেড নেপোলিয়ন কতটা ভালো?

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ১৯

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ১৮

George Orwells Animal Farm episode18

বেঞ্জামিন আর ক্লোভার সারা দিনের কাজকর্ম সেরে কেবলমাত্র সন্ধের দিকেই বক্সারকে সময় দিতে পারে৷ আর সেদিন যখন বক্সারকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িটা এল, তখন সবেমাত্র দুপুর৷ জন্তুরা একটা শুয়োরের তদারকিতে শালগমের খেতে আগাছা সাফ করছিল৷ এমন সময় তারা অবাক হয়ে দেখল বেঞ্জামিন তারস্বরে চিৎকার করতে করতে খামার বাড়ির দিক থেকে দৌড়ে আসছে৷ এর আগে জন্তুরা বেঞ্জামিনকে কখনও উত্তেজিত হতে দেখেনি, এমনকি দৌড়োতেও দেখেনি৷ বেঞ্জামিন চিৎকার করে বলল, “এখ্খুনি এসো! তাড়াতাড়ি! তাড়াতাড়ি! ওরা বক্সারকে নিয়ে চলে যাচ্ছে।”

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ১৮

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ১৭

George Orwells Animal Farm-17

এক নির্দিষ্ট সময়ে জন্তুরা নিজেদের কাজ মুলতুবি রেখে সামরিক কায়দায় কুচকাওয়াজ করতে করতে ফার্মের প্রাঙ্গণে ঘুরবে৷ শুয়োরেরা নেতৃত্ব দেবে, তারপরে থাকবে ঘোড়ারা, তার পিছনে যথাক্রমে থাকবে গোরু, ভেড়া ও হাঁস-মুরগির দল৷ কুকুরেরা এই শোভাযাত্রার পাশে পাশে চলবে। আর সবার সামনে হাঁটবে নেপোলিয়নের সেই কালো মোরগছানা৷ এই শোভাযাত্রায় বক্সার আর ক্লোভারের দায়িত্ব খুর আর শিং আঁকা সেই সবুজ পতাকা বয়ে নিয়ে যাওয়া। পতাকায় লেখা থাকে, ‘কমরেড নেপোলিয়ন দীর্ঘজীবী হোন’। তারপর নেপোলিয়নের সম্মানে কবিতা পাঠ করা হয়৷

জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা অনুবাদ অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। আজ পর্ব ১৭

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’: পর্ব ১৬

Orwell's Animal Farm 16

এক রাতে বারোটা নাগাদ হঠাৎ খামারের উঠোনে কিছু একটা ভেঙে পড়ার জোর শব্দ পাওয়া গেল। জন্তুরা হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে এল নিজেদের খুপরি থেকে। জ্যোৎস্না রাত৷ চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। সবাই দেখল, গোলাবাড়ির দেওয়ালের একেবারে শেষ প্রান্তে, যেখানে সাতটি বিধান লেখা আছে, তার ঠিক নীচে দু-টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে রয়েছে একটা মই। আর সেই মইয়ের ঠিক পাশে হতবুদ্ধি অবস্থায় হাত-পা ছড়িয়ে চিৎপাত হয়ে রয়েছে স্কুইলার৷
জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা তর্জমা অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। পর্ব ১৬

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিমাল ফার্ম’: পর্ব ১৫

Orwell's Animal Farm 15

ঠিক পরদিন সকাল থেকেই আক্রমণ শুরু হল। জন্তুরা তখন সবেমাত্র জলখাবারে মুখ দিয়েছে এমন সময় পাহারাদারেরা ছুটতে ছুটতে এসে খবর দিল যে, ফ্রেডরিক আর তার দলবল পাঁচ-গরাদের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছে। জন্তুরা তৎক্ষণাৎ হই-হই করে ছুটে গেল ওদের আটকানোর জন্য। কিন্তু গোয়ালঘরের যুদ্ধে যতটা সহজে জেতা গিয়েছিল, এবার কিন্তু তেমনটা হল না। উল্টো দিকে পনেরোজন মানুষের দল, তাদের সঙ্গে আবার হাফ ডজন বন্দুক৷ পঞ্চাশ গজের হাতার মধ্যে কোনও একটা জন্তুকে পেলেই তারা দমাদ্দম গুলি চালিয়ে দিচ্ছে…
জর্জ অরওয়েলের কালজয়ী উপন্যাসের বাংলা তর্জমা অর্ক পৈতণ্ডীর কলমে। পর্ব ১৫

জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিমাল ফার্ম’: পর্ব ১৪

Napolean the Dictator

নেপোলিয়নের জ্ঞান, তার হৃদয়ের মহত্ব এবং সমগ্র পশুকুলের প্রতি তার গভীর ভালোবাসার কথা বাকি পশুদের কাছে বলার সময় ভক্তি ও শ্রদ্ধায় স্কুইলারের চোখের জল বাঁধ মানে না, গাল বেয়ে গড়াতে থাকে৷ জর্জ অরওয়েলের উপন্যাস অ্যানিমাল ফার্ম, অর্ক পৈতণ্ডীর অনুবাদে। পর্ব ১৪।