সায়েব ক্যালকাটার খানাপিনা (প্রবন্ধ)

১৯২৭ সালে পার্ক স্ট্রিটের ঘাটে নোঙর ফেলেছিল ফ্লুরিজ। সেরা সব ফ্রুট কেক, রিচ পাম কেক, অ্যাসরটেড পেস্ট্রি, চিজ স্ট্র, ব্ল্যাক ফরেস্ট আর পাইনঅ্যাপল পুডিং-এর ডালি নিয়ে। বিশাল কাঁচের দেয়ালের পিছনে বসে কেক-প্যাটিস সহযোগে এক কাপ কফি- সে এক নেভার এন্ডিং ফেয়ারি টেল !
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৭)

গাড়ভাতছালার বাগদীপাড়া, ঘরে ঘরে লাঠি সড়কি আর লেঠেল পাইকের চাষ…গাঁয়ে গাঁয়ে জমিদারবাবুদের ফৌজ সব। নিরাপদর বাপ কানাই বাগদি একা লাঠি হাতে পাঁচশ জোয়ানের মহড়া নিতে পারত।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৬)

দ্যাট বিশে বাগডি। ব্লাডি ব্যান্ডিট। পুরো এলাকা জুড়ে একটা প্যারালাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রান করে লোকটা। জমিনডারস এন্ড রিচ পিপল…সবাই যমের মত ভয় পায় ওকে।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৫)

পরমুহূর্তেই “হা রে রে রে রে” ভয়ঙ্কর বজ্রহুঙ্কারে কেঁপে উঠলো নীলের জঙ্গল। পালকির ভিতরে ভূপতি রায়ের মনে হল গোটা জঙ্গলটাই যেন ভেঙে পড়ছে মাথার ওপর। কুলকুলি শোনামাত্র গাছ থেকে লাফিয়ে মাটিতে নেমে পড়েছে দলের ছেলেরা। ভোজপুরি সেপাইরা তো আগেই ফৌত হয়ে গেছিল। বাকি চল্লিশজনের লেঠেল ফৌজ খড়কুটোর মত উড়ে গেল বিশ্বনাথের দলবলের সামনে।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৪)

“জয় মা কালী।” রক্তচোখে স্যাঙ্গাতদের দিকে তাকিয়ে ফের একবার হুঙ্কার ছাড়লো বিশ্বনাথ। “ফেরাসনে মা হাতখালি/একশো পাঁঠা দেবো বলি।” প্রত্যুত্তরে সমবেত গলায় বজ্রগর্জন উঠলো রাতের নিস্তব্ধতা চিরে। এক এক করে সামনে এগিয়ে আসতে লাগলো দলের লোকেরা। বাটিতে তর্জনী চুবিয়ে সবার কপালে রক্ততিলক এঁকে দিলো বিশ্বনাথ।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ৩)

ধীর পায়ে খাজাঞ্চিখানা থেকে বেরিয়ে দোতলার সিঁড়ি ভেঙে অন্দরমহলের দিকে পা বাড়ালেন ভূপতি রায়। একটা চাপা খুশির ছাপ চোখেমুখে। আদায় পত্তর ভালোই হয়েছে এবার। কেষ্টনগরে কোম্পানির ঘরে খাজনাটাও পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে সময়মতো। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, ঠারেঠোরে খবর পাচ্ছেন ছোট তরফের ওই নেপোটা, সে ব্যাটার নাকি হাঁড়ির হাল এবার। খাজনার টাকা দিতে পারবে না শোনা যাচ্ছে। তা পারবে কী করে? জুয়ো আর মদ-মাগীতে টাকা উড়িয়ে দেউলে একেবারে।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ২)

লোকের মুখে খবর পাচ্ছি আপনার সাতটা গাঁয়ের মধ্যে নসিবপুর মৌজাটা নাকি ওই নীলকর ফেডি সায়েবের কাছে দাদন দেয়ার বন্দোবস্ত করছেন আপনি। এ কাজটা করবেন না। আপনি অত্যাচারী ঠিকই, কিন্তু এই নীলকর সায়েবরা নরপিশাচ একেবারে। বাপঠাকুরদার আমলের প্রজাদের মানুষখেকোদের হাতে তুলে দেবেন না, দোহাই আপনার।
শোণিতমন্ত্র (পর্ব ১)

রাত আর ঠাণ্ডা দু’টোই বাড়ছে জঙ্গলে। হাতের চিমটে দিয়ে যজ্ঞকুণ্ডের আগুনটাকে ফের একবার খুঁচিয়ে দিলেন জঙ্গলগিরি। করোটিপাত্র থেকে একচুমুক কারণ পান করলেন। চৌরঙ্গা আলখাল্লাটাকে টেনে নিলেন বুকের কাছে। এই চার রঙের আলখাল্লার জন্যই ভক্তদের অনেকে চৌরঙ্গিবাবা নামেও ডাকে ওঁকে। আর সেই থেকেই এই জঙ্গলের নাম হয়েছে নাকি চৌরঙ্গির জঙ্গল। অবিশ্বাসীরা ফুট কাটে ফের। চৌরঙ্গা কম্বল না ছাই। আসলে জঙ্গলের মাঝখানে মেঠো চৌরাস্তার একটা মোড় রয়েছে। সেই থেকেই চৌরঙ্গি। ভক্তদের মুখে এসব শুনে হাসেন জঙ্গলগিরি।