স্মৃতির শরবত

আগে ডাব শরবত খেয়ে তারপর কোকো মালাই খাবি। আগে কোকো মালাই খেলে, জিভের দানাগুলো আর ডাব শরবতের সূক্ষ্ম ব্যাপারটা ধরতে পারবে না! বুঝেতে পেরেছিস ?
চার পুরুষের শরবত!

এখানেই প্রথম গোলাপের পাপড়ি দেওয়া শরবত খেলাম, বাড়িরই এক মুসলিম পরিচারক- ‘শরবতিয়াঁ’র বানানো। এই বাড়িতে কাঠের ‘আইস বক্সে’ বরফকুচিও থাকতো। যে চায় সে নেবে। বাড়িতেই বানানো, সবুজ, হলুদ আর রানি রংয়ের সিরাপ, লম্বা গলা বোতলে থরে থরে রাখা। চিনির সিরায় সিরাপ মিশিয়ে একটু নেড়ে ঠান্ডা জল মেশানো। অপূর্ব পোরসেলিন গ্লাসে পরিবেশন। ট্রেতে খান ছ’য়েক গ্লাস সাজিয়ে ‘শরবতিয়াঁ’ হল ঘরে ঢুকলেই আমরা গন্ধ পেতাম। এরা ‘গর্মি’ লাগলেই ‘নিম্বু পানি’ আর ‘জলজিরা’ খেত।
ও শরবতে ভিষ নাই!

তবে হ্যাঁ, শরবতকে জাতে তুলে দিয়েছিলেন মগনলাল মেঘরাজ আর জটায়ু। অমন ঘনঘটাময় শরবতের সিন না থাকলে ফেলুদা খানিক ম্যাড়মেড়ে হয়ে যেত। শরবতও যে একটা দুর্দান্ত চরিত্র হয়ে উঠেছে এই সিনটিতে, তা বোধগম্য হয় একটু বড় বয়সে। শরবতের প্রতি লালমোহন বাবুর অবিশ্বাস, তাঁর ভয়, তাঁর আতঙ্ক আমাদেরও শঙ্কিত করে তোলে নির্দিষ্ট গ্লাসের শরবতের প্রতি।…
শরবতি জন্মবেত্তান্ত!

শরবতের জন্ম এশিয়াতেই এমন কথাই বা নিশ্চিত হয়ে বলি কী করে? মিশরের ফ্যারাওরা তাঁদের দর্শনার্থীদের বরফ মেশানো ফলের রস পরিবেশন করতেন বলে পড়েছিলাম যে! বাইবেলে ‘জেলাতো’র উল্লেখ রয়েছে- আইজ্যাক আব্রাহামকে বরফ মেশানো ভেড়ার দুধ পরিবেশন করেছিলেন। সম্রাট নিরো, যিনি রোম আগুনে জ্বলাকালীন বেহালা বাজিয়ে বিন্দাস-শিরোমনি হয়েছিলেন, তাঁকেও তো শরবতের আদি-পুরুষ বলা হয়!…